আবেগ দিয়ে মন্ত্রিত্ব আসে না যোগ্যরাই মন্ত্রিসভায় যাবেন ফারুক

প্রশান্তি ডেক্স॥ শৈশব থেকেই তিনি অনুপ্রাণিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনীতিতে। আওয়ামী লীগের হয়ে রাজনীতির মাঠ কাঁপিয়েছেন। তারই স্বীকৃতি হিসেবে সদ্য শেষ হওয়া একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের হয়ে অংশ নেন তিনি। ঢাকা-১৭ আসন থেকে বিপুল ভোটে নির্বাচিতও হয়েছেন। বলছি চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা আকবর হোসেন খান পাঠান ফারুকের কথা। সম্প্রতি নির্বাচিত সব সাংসদদের সঙ্গে শপথ গ্রহণ করেছেন তিনিও। এরপর থেকেই আলোচনায় এসেছে তার নাম মন্ত্রিসভার সদস্য হিসেবে। abeg deya montr ashena
বেশ কিছু গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে নতুন সরকারের কোনো একটি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রি হিসেবে দেখা যেতে পারে। তবে এই সম্ভাবনার ব্যাপারে কোনো ভাবনাই নেই নায়ক থেকে এমপি হওয়া ফারুকের। আজ রোববার, ৬ জানুয়ারি দুপুরে তিনি প্রশান্তি নিউজকে জানান, মন্ত্রিত্ব কোনো ছেলেখেলা বা আবেগের বিষয় নয়। দল বা সরকার প্রধান যাদের উপর নির্দিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ব্যাপারে আস্থা রাখবেন তারাই মন্ত্রিসভায় স্থান পাবেন। ফারুক বলেন, ‘আমি যেটুকু ভালোবাসা আমার নেত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে পেয়েছি তাতেই অনেক সন্তুষ্ট।
তিনি আমাকে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি আসনে নির্বাচন করে এমপি হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। আমি নিজেকে এমপি ভাবতেই আনন্দবোধ করছি। মন্ত্রী হবো কী হবো না সে নিয়ে কোনো ভাবনা নেই। তাছাড়া সেটা আমার হাতেও নেই। নেত্রী যাকে যোগ্য মনে করবেন তাকেই মন্ত্রিত্ব দেবেন। আমি কাজের মানুষ। কাজ করতে চাই। কাজের ইচ্ছা থাকলে এমপি হিসেবেও অনেক কিছু করা যায়।’ সমর্থকদের আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি মন্ত্রিসভায় থাকবো কী না এ নিয়ে অনেক জল্পনা কল্পনা শুনছি। আমি বলবো এটা ঠিক হচ্ছে না। তারা আবেগে বলছেন। নেতাদের তারা ভালোবাসেন, সেজন্য আবেগে মন্ত্রিত্ব আসে না। বরং যে নেতার জন্য আবেগ দেখানো হয় তার জন্য এটা বিবতকর।
অনেক নেতার সমর্থকেরাই তাদের নেতাকে মন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান দাবি করে ব্যানার-ফেস্টুন বানাচ্ছেন। এগুলোও ঠিক নয়।দেশ পরিচালনার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হলো মন্ত্রিত্ব। এই দায়িত্ব যাদের দেয়া হয় তারা যোগ্য বলেই দেয়া হয়। চেয়ে বা আবেদন করে পাওয়ার জিনিস নয়। বলা যেতে পারে আমাদের প্রিয় নেতা সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম চলে গেলেন পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে। তার মতো নেতার কোনো কিছুই চেয়ে অর্জন করতে হয়নি। এই যে তার বিদায়ে দল-মত নির্বিশেষে সবাই কাঁদছেন এটা তিনি অর্জন করেছেন নিজের যোগ্যতায়।
কী সেই যোগ্যতা? ভালোবাসা, কঠিন নেতৃত্ব, বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার আদর্শকে অনুসরণ করে সঠিক-শুদ্ধ রাজনীতির চর্চা। এভাবে সবকিছু যোগ্যতা দিয়ে জয় করতে হয়।’ নতুন এই সাংসদ আরও বলেন, ‘মন্ত্রিসভায় যারাই আসুক, তাদের সঙ্গে মিলেমিশে দেশকে একটি ভালো জায়গায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবো। ব্যক্তিগতভাবে আমার যা প্রতিশ্রুতি ছিলো জনগণের কাছে সেগুলো পূরণ করার চেষ্টা করবো। আমি সিনেমার মানুষ, আমার কাছে সিনেমার মানুষদের অনেক প্রত্যাশা আছে। আমি সেই প্রত্যাশা মেটাতে যেটুকু করা সম্ভব করবো। সংসদে সিনেমার সংকট ও সমাধান নিয়ে কথা বলবো।’
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রি হিসেবে মন্ত্রিসভায় থাকতে পারেন বলে গণমাধ্যমের সম্ভাব্য খবর সম্পর্কে মিয়াভাই খ্যাত এই নায়ক আরও বলেন, ‘মন্ত্রণালয় কোনো ফ্যাক্ট না। দায়িত্ব পাওয়াটাই বড় যোগ্যতা। একজন অর্থনীতিবিদ অর্থমন্ত্রীই হবেন এমন কোনো কথা নেই। বা হলেও সাফল্য পাবেন সেটাও নির্ধারিত নয়। আমিও অভিনেতা বলে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়েই আসতে হবে এমন কিছু নয়। সেটা যে কোনোকিছু হতে পারে। আর সম্ভাবনার কথা বললে বলবো চূড়ান্ত কিছু না হওয়া পর্যন্ত এর কোনো মূল্যই নেই। হতে পারে গণমাধ্যমকর্মীরা আমাকে ভালেবাসেন, তাই মন্ত্রণালয়ে আমাকে প্রত্যাশা করছেন।
আবার এটাও হতে পারে তারা অনুমান করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে আদর করেন, মূল্যায়ণ করেন। সেজন্যই হয়তো এমনটা ভাবছেন। আমার কোনো চাওয়া বা না পাওয়ার আক্ষেপ নেই। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করি, নেত্রীর আদর্শ লালন করি আর সেটা নেত্রী বুঝতে পেরে আমাকে এমপি হওয়ার টিকিট দিয়েছেন এটাই আমার কাছে অনেক বড় পাওয়া।’ উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিশ্বের বিস্ময় হবে বাংলাদেশ এই প্রত্যাশায় ফারুক দেশবাসীর কাছে নতুন সরকারের জন্য দোয়া চেয়েছেন। তিনি সদ্য প্রয়াত রাজনীতিবিদ সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের আত্মার জন্যও দোয়া কামনা করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.