আটকরা বলছেন পুলিশের জন্য অস্ত্র বানাই

প্রশান্তি ডেক্স॥ যশোরে অভিযান চালিয়ে দেশীয় অস্ত্র তৈরির কারখানা আবিস্কার করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। গত বুধবার দুপুরে যশোর সদর উপজেলার ভাতুড়িয়া এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযান চালাতে গিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত এ কারখানার সন্ধান পান। এ সময় আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি, ম্যাগজিন ও পিস্তল তৈরির সরঞ্জামসহ তিনজনকে আটক করা হয়।atokra bolche police der jonno asro bany
তবে আটকদের দাবি, পুলিশের জন্যই অস্ত্র বানান তারা। ভ্রাম্যমাণ আদালতের হাতে আটকের পর গণমাধ্যম্যের সামনে হাজির করা হলে তারা এ দাবি করেন। কিন্তু আটকদের এ দাবি মনগড়া বলে জানিয়েছে পুলিশ।
যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনসার উদ্দিন বলেন, আটক অস্ত্র কারবারি দম্পতি চতুর প্রকৃতির। তারা ঘটনার সঙ্গে পুলিশকে জড়িয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে নিজেদের বাঁচানোর চেষ্টা করছে।
আটকরা হলেন- যশোর সদর উপজেলার ভাতুড়িয়া দাড়িপাড়া গ্রামের আব্দুল গফুরের ছেলে কামরুল ইসলাম (৫০), তার স্ত্রী রাবেয়া সুলতানা (৩৫) ও ভাতুড়িয়া পশ্চিমপাড়ার নূর হোসেনের ছেলে আবুল বাশার (৪০)। আটক কামরুলের বাড়িতে এই অস্ত্র তৈরির কারখানার সন্ধান পাওয়া যায়।
যশোরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জামসেদুল আলম ও মোহাম্মদ হাফিজুল হকের নেতৃত্বে এই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জামসেদুল আলম ও মোহাম্মদ হাফিজুল হক জানান, মাদকবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে গত বুধবার দুপুরে তারা যশোর সদর উপজেলার ভাতুড়িয়া এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এ সময় ভাতুড়িয়া দাড়িপাড়া এলাকায় কামরুলের বাড়িতে গিয়ে দেশীয় অস্ত্র তৈরির ওই কারখানার সন্ধান পান। সেখান থেকে ১টি দেশীয় পিস্তল, ২টি ম্যাগজিন, ১ রাউন্ড গুলি, ১টি খেলনা পিস্তল, বন্দুকের ব্যারেল, লোহার পাত, অ্যাঙ্গেল, পাইপসহ অস্ত্র তৈরির অন্যান্য সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। একইসঙ্গে ওই বাড়ি থেকে তিনজনকে আটক করা হয়। তাদের যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় সোপর্দ করার প্রক্রিয়া চলছে।
অভিযান পরিচালনাকালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের উপ পরিদর্শক (এসআই) বদরুল হাসান এবং অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে আটকদের সাংবাদিকদের সামনে হাজির করলে কামরুল ও তার স্ত্রী চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছেন। কামরুল সাংবাদিকদের জানান, ‘পুলিশের অন্তত হাফ ডজন দারোগার (উপ পরিদর্শক) অর্ডারেই পিস্তল ও ওয়ান শুটারগান তৈরি করতেন। এতে প্রত্যেকটির মুজরি বাবদ ৫ থেকে ৭ হাজার পর্যন্ত টাকা পেতেন কামরুল। তবে তার তৈরি করা পিস্তল বাইরে কারো কাছেই বিক্রি হয়নি।’
কামরুল আরও বলেন, ‘পুলিশের ভয়-ভীতি ও চাপে পড়েই এ কাজে জড়াতে বাধ্য হয়েছি। তবে আমার বানানো পিস্তলে গুলি ফোঁটে না। পুলিশ স্যারদের বিশেষ কাজে নাকি ব্যাবহৃত হয়।’
কামরুল ইসলামের স্ত্রী আটক রাবেয়া সুলতানা সাংবাদিকদের বলেন, ‘পুলিশ স্যারদের সঙ্গে স্বামীর সখ্যতার সূত্র ধরে অনেকেই বাড়িতে আসা-যাওয়া করতেন। ভয় পেয়ে এসব বিষয়ে স্বামীকে বাধা দিলেও তিনি উল্টো কোনো সমস্যা হবে না, স্যারেরা দেখবেন বলে জানাতেন।’

Leave a Reply

Your email address will not be published.