আন্তর্জাতিক ডেক্স॥ সম্প্রতি বেনাপোল চেকপোস্টের নোম্যান্সল্যান্ড থেকে বাংলাদেশি দুই টাকার নতুন নোট ভারতে পাচারকালে বিজিবির হাতে আটক হয় দুই ভারতীয় নাগরিক। এদের মধ্যে গত ৩ নভেম্বর ২৬ হাজার নতুন ২ টাকার নোট নিয়ে আটক হয় নাসিম উদ্দিন। সে ভারতের পশ্চিম বাংলার উত্তর ২৪ পরগনা জেলার ইকবালপুর এলাকার বাসিন্দা। তার পাসপোর্ট নম্বর এম-২০২৫৬৯৫ এবং গত ১০ নভেম্বর নোম্যান্সল্যান্ড থেকে বেনাপোল আইসিপি ক্যাম্পের বিজিবির সদস্যদের হাতে আটক হয় কলকাতার আরমান স্ট্রিটের ইউসুফ আলীর ছেলে নাসের উদ্দিন। তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় বাংলাদেশি ৪১ হাজার ৬শটি বাংলাদেশি দুই টাকার নতুন নোট।
জানা যায়, বাংলাদেশি দুই টাকার নতুন নোটের দাম ভারতে ৫ রুপি। যা হেরোইন ও ইয়াবার মরণ নেশার সুখটানে ব্যবহার করা হচ্ছে। এ কারণে বেনাপোল সীমান্তের চোরাইপথ এবং আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে পাচার হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত এই নোট। আর বিক্রি হচ্ছে ভারতীয় ৫ রুপিতে। ভারতে যারা নেশা করেন তাদের ভাষায়, পান্নী অর্থাৎ পাইপ তৈরিতে বাংলাদেশের দুই টাকার নতুন নোট ব্যবহার করা হয়। হেরোইন ও ইয়াবা আগুনের তাপে গরম করলে তরল হয়ে যায়। ওই তরল পদার্থ থেকে একটি ধোঁয়া বের হয়। সেই ধোয়া পান্নী বা পাইপের মাধ্যমে সেবন করতে হয়। আগে এ ধরনের পাইপ তৈরিতে ব্যবহৃত হতো সিগারেটের প্যাকেটের ভিতরে থাকা জরির কাগজটি।
ইয়াবা ও হেরোইন সেবনকারীরা জানিয়েছেন, অন্য কাগজের পাইপ আগুনের অল্প তাপেই পুড়ে যায়। একবার নেশা করতে হলে তিন/চার বার পাইপ পাল্টাতে হয়। এই ঝামেল থেকে মুক্তি পেতে বাংলাদেশি দুই টাকার নতুন নোট ব্যবহার করা হয়। এটি দিয়ে পাইপ তৈরি করলে একবারেই নেশার কাজ শেষ হয়। কারণ এ নোট বিশেষ ধরনের কাগজ দিয়ে তৈরি হওয়ায় তা সহজে আগুনে পোড়ে না ও সহজে পানিতে ভিজে যায় না। তাই ভারতে মাদকসেবীদের কাছে নেশার পরিপূর্ণ সুখটান দিতে বাংলাদেশি দুই টাকার নোট খুবই জনপ্রিয়! ভারতীয় অসাধু ব্যবাসয়ীরা অধিক মুনাফার লোভে পাসপোর্ট এবং চোরাই পথে বাংলাদেশে এসে দুই টাকার নতুন নোট পাচারে জড়িত। ভারতীয় ১ টাকা ৮০ পয়সা দিয়ে বিনিয়োগ করলেই ২ টাকা ২০ পয়সা লাভ হচ্ছে।
নতুন দুই টাকার নোট পাচার এবং এই টাকা কি কাজে ব্যবহার হচ্ছে জানতে চাইলে বেনাপোল আইসিপি ক্যাম্পের কমান্ডার নায়েব সুবেদার নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, ‘বাংলাদেশি টাকা অবৈধভাবে পাচার হোক তা কোনোভাবেই আমারা চাই না। আর এটা কি কাজে ব্যবহার হয় সঠিক জানা নেই ।’