নুসরাত অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় তাকে হত্যা করা হয়েছে

বা আ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র মাদরাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারলো। সে একটা অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছিল। এ ধরনের অমানবিক ঘটনাগুলো যে ঘটে এটা সত্যিই মানবজাতির জন্য অত্যন্ত অকল্যাণকর।’nosrat annoyaer berudde
গত বুধবার জাতীয় সংসদে নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে শহীদুজ্জামান সরকারের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা এসব বলেন। এ সময় বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানান এবং এই ধরনের কোনো আলামত পেলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানানোর আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শ্রীলঙ্কায় সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় আমাদের সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং বর্তমানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল করিম সেলিমের মেয়ের বড় ছেলে আট বছরের জায়ান চৌধুরী নিহত হয়েছে। শেখ সেলিমের মেয়ে সোনিয়ার জামাই সেখানে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে। আমি তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। সেখানে শুধু জায়ান চৌধুরীই নয়, প্রায় ৪০ জন শিশুসহ সাড়ে তিনশ’র কাছাকাছি মানুষ মারা গেছে।’
তিনি বলেন, ‘জায়ান চৌধুরী একটা ছোট্ট বাচ্চা। মাত্র আট বছর বয়স। আজকে সে আমাদের মাঝে নেই। তার বাবাও মৃত্যুশয্যায়। বাবাকে এখনও জানতে দেয়া হয়নি যে, জায়ান নেই। সে বারবার খুঁজছে। তার মা, বাবা পরিবারের অবস্থা আপনারা বুঝতেই পারেন। আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে বলব এ ঘটনায় যারা মারা গেছে শুধু তারা নয়, যাদের জন্য আমরা শোক প্রস্তাব নিলাম, তাদের সবার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই ধরনের সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, বোমা হামলার নিন্দা জানানোর ভাষা আমার জানা নেই। এর তীব্র নিন্দা জানাই। যারা এই ঘৃণ্য অপরাধ ঘটিয়ে থাকে তারা এর মধ্য দিয়ে কি অর্জন করছে জানি না। নিহতদের মধ্যে অনেক শিশু রয়েছে তাদের তো কোনো অপরাধ নেই। তারা কেন এভাবে জীবন দেবে।’
তিনি বলেন, ‘ঠিক এর কিছুদিন আগেই নিউজিল্যান্ডে মসজিদে সরাসরি গুলি করে অসংখ্য মানুষকে হত্যা করা হলো। সেখানেও নারী-পুরুষ, শিশু ছিল। আমাদের ক্রিকেট টিম সেখানে ছিল। খুব অল্পের জন্য বেঁচে গেছে। সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ কোনো কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের দেশে এ রকম বোমা হামলা, জঙ্গি হামলা কঠোর হস্তে দমন করেছি। দেশবাসীকে বলব, সতর্ক থাকতে। যদি কোথাও কোনো অস্বাভাবিক কিছু দেখতে পান সঙ্গে সঙ্গে যেন আইন-শৃঙ্খলা সংস্থাকে জানান। আমরা চাই না এমন ঘটনা পৃথিবীর কোথাও ঘটুক। সন্ত্রাস, জঙ্গিদের কোনো ধর্ম নেই। তাদের কোনো দেশ, কাল, পাত্র নেই। জঙ্গি জঙ্গিই, সন্ত্রাসী সন্ত্রাসীই।’
তিনি বলেন, ‘ইসলাম ধর্মের নামে যারা সন্ত্রাস করে, তারা আমাদের পবিত্র এই ধর্মকে সব মানবজাতির কাছে হেয়প্রতিপন্ন করে দিচ্ছে। ইসলাম শান্তির ধর্ম। সব ধর্মেই হিন্দু, মুসলমান, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ সব ধর্মেই কিন্তু শান্তির কথাই বলা আছে। তারপরও কিছু লোক ধর্মীয় উন্মাদনায় মানুষের প্রতি আঘাত হানে। জীবন কেড়ে নেয় এটা মানবজাতির জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক।’

Leave a Reply

Your email address will not be published.