ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে ন্যূনতম মানবিক সুবিধা নেই

প্রশান্তি ডেক্স॥ সংরক্ষণ ও পরিচর্যার অভাবে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে ন্যূনতম মানবিক সুবিধা পাওয়া যায় না। ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের চেয়ে সুরক্ষিত বাড়ি নির্মাণ বেশি জরুরি। তবে সার্বিক ব্যাপারে সরকারকে বিদেশি সাহায্যের আশায় বসে না থেকে নিজস্ব সম্পদ দিয়েই যাত্রা শুরু করতে হবে।gorne jor ashry kandro
গত বুধবার জাতীয় প্রেস কাবে উপকূলীয় নাগরিক সমাজ সংগঠন কোস্ট সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় ফণীর অভিজ্ঞতা ও ভবিষ্যতে করণীয় বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা উঠে অসে।
‘দুর্যোগের পূর্বে অতি প্রস্তুতি ও দুর্যোগের পরদিন সব ভুলে যাওয়ার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসুন : দুর্যোগ মোকাবেলায় চাই স্থায়িত্বশীল ও স্থানীয় সক্ষমতা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন কোস্টের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী। এতে ব্ক্তব্য রাখেন দুর্যোগ ফোরামের সাধারণ সম্পাদক নঈম গওহর ওয়ারা, এনজিওস নেটওয়ার্ক ফর রেডিও অ্যান্ড কমিউনিকেশনের এএইচএম বজলুর রহমান, কৃষক ফেডারেশনের বদরুল আলম এবং কোস্ট ট্রাস্টের উপপরিচালক সৈয়দ আমিনুল হক।
সংবাদ সম্মেলন মূল বক্তব্য পাঠ করেন কোস্ট ট্রাস্টের বরকত উল্লাহ মারুফ এবং সূচনা বক্তব্য রাখেন কোস্টের মোস্তফা কামাল আকন্দ।
নঈম গওহর ওয়ারা বলেন, সরকার সম্প্রতি নতুন সাত হাজার ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু সংরক্ষণ ও পরিচর্যার অভাবে এসব ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে ন্যূনতম মানবিক সুবিধা পাওয়া যায় না বিধায় মানুষ এখানে যেতে চায় না। যেমন, সরকারি হিসেবে একজন মানুষের জন্য সর্বোচ্চ ২ বর্গফুট জায়গা বরাদ্দ রয়েছে। সেখানে একজন মানুষের পক্ষে ৪৮ ঘণ্টা অবস্থান করা সম্ভব নয়। একটি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রের ব্যয় দিয়ে উপকূলে ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় সক্ষম অন্তত ৩৫টি দোতালা বাড়ি নির্মাণ করা সম্ভব। এসব বাড়ি হস্তান্তর করে দিলে বাড়ির অধিবাসীরা নিজেরাই যেমন এর যতœ করতে পারবে তেমনি দুর্যোগে প্রতিবেশীকে আশ্রয়ও দিতে পারবে।
তিনি আরও বলেন, সরকার ঘূর্ণিঝড়ের আগে মানুষের প্রস্তুতির কথা বলেন, কিন্তু অনেক সরকারি প্রতিষ্ঠানের ঘূর্ণিঝড় নিয়ে কোনো প্রস্তুতি নাই। যেমন- পানি উন্নয়ন বোর্ডের মতো প্রতিষ্ঠানের সারা বছর ঘূর্ণিঝড়ের জন্য প্রস্তুতি থাকতে হবে। ঘূর্ণিঝড় ফণীর ৩৬ ঘণ্টা আগে থেকে পাথরঘাটায় বিদ্যুৎ ছিল না। ৮ হাজার কিলোমিটারের মতো বেড়িবাঁধ সংস্কারের প্রয়োজন ছিল এই ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি কমানোর জন্য।
কোস্ট ট্রাস্টে সহকারী পরিচালক বরকত উল্লাহ মারুফ ঘূর্ণিঝড় বা দুর্যোগের পূর্বাভাস পদ্ধতির সংস্কার করতে হবে, যা মূলত বন্দরসমূহের জন্য এবং সাধারণ মানুষের জন্য যা বিভ্রান্তিকর। সুনির্দিষ্ট, বোধগম্য ও নির্দেশনামূলক পূর্বাভাস পদ্ধতি চালু করতে হবে। সমুদ্রগামী জেলে ও নৌকাসমূহের নিবদ্ধন ব্যবস্থা থাকতে হবে, যাতে ঘূর্ণিঝড়ের সময় চিহ্নিত করা যায় কারা ফিরে এসেছে এবং কারা ফিরতে পারেননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.