সদ্য প্রকাশ হওয়া বাজেট একটি বিশালয়তনের বহি:প্রকাশ। এই বাজেট এসেছে আসবে এবং দেশ উন্নত হবে এগিয়েও যাচ্ছে এবং যাবে। কিন্তু সাধারণ জনগণ কি এই বাজেট নিয়ে কখনো দ্বিমত পোষণ করেছে? না করেনি বরং বাজেট বাস্তবায়নে সহযোগীতা করেছে। কিন্তু সাধারণ জনগণ এই বাজেট নিয়ে যদিও মাথা ঘামায় নি কিন্তু সাধারণ জনগণকে নিয়েই কথা উঠে বেশি। সাধারণ জনগণের নাম নিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি বাজেট নিয়ে মহা জ্ঞানের ফিরিস্তি দেন। আসলে কাজের কাজ কিছুই হয়নি বা দায়িত্ব দিলেও কিছুই করে দেখাতে পারেন না। এমন হাজারো প্রমান আমাদের সামনে রয়েছে। যারা বড় বড় কথা বলেছেন তাদের কিছু ব্যক্তির নাম উল্লেখ না করে শুধু স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে, ঐ মানুষগুলো আসলে দেশের উন্নয়ন চান না বা বাজেট নিয়ে জনগণ কি ভাবে সে বিষয়ে কোন জ্ঞান রাখেন না বরং নিজেকে জাহির করার একটি প্রক্রিয়ায় শরিক হয়ে নিজেকে জাহির করাই তাদের উদ্দেশ্য। যা এবারেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। আমাদের বাজেট উপস্থাপনের পর টিভি এবং মিডিয়ায় দেখেছি তার উপলব্দিতেই লিখেছি।
অতীতের মতো এবারও কিছু কিছু লোক বাজেট নিয়ে কথা বলেছেন এবং আমরা দেখেছি ঐ মানুষদের হাতে যখন সুযোগ ছিল তখন তারা কি করেছিল। তবে বলতে পারি তাড়া ব্যর্থ ছিল। তারপরও বলব সমালোচনা ভাল কিন্তু নেতিবাচক নয় ইতিবাচক এবং গঠনমূলক হলে মনে হয় আপামর জনসাধারণও পছন্দ করতো। যুগ এবং সময় এই দুয়ের কাছ থেকে কেন যে আমরা শিক্ষা নেই না … তা আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে বোধগম্য হয়না। বাজেট নিয়ে সাধারণ জনগনের কোন ব্যক্তিগত চাওয়া ও পাওয়া নেই বরং আখাঙ্খা রয়েছে যে, বাজেট বাস্তবায়ন হলে দেশ উন্নত হবে। তবে বাজেট নিয়ে বেশী বেশী যারা কথা বলেন তারা কারা! তারা কিন্তু অসাধারণ জনগণ। তারা কিন্তু অর্থকরীর মালিক এবং তারাই কিন্তু বাজেট নিয়ে উচ্চ-বাচ্চ বকেন। কারণ এই বাজেটে তারাই কিন্তু উপকৃত। তাদের আরো উপকারের জন্যই কিন্তু তারা সাধারণ জনগণের নাম ব্যবহার করে থাকেন। আর ফায়দা লুটে নেন তাদের রাজত্ব বৃদ্ধির বিশালায়তনের প্রয়োজনে।
তবে সরকার যে বাজেট দিয়েছেন তা জনকল্যানের তরে এবং উন্নয়নের ধারাবাহিকতাকে অব্যাহত রাখতে; তাতে কোন সন্দেহ নেই। তবে এতে কিছু কিছু ক্ষেত্রে পয়সা ওয়ালাদের খুশী করারও বিধান রেখেছেন। মনে হয় ধরি মাছ না ছুই পানি এই অবস্থার মত। তবে এতে করে জনগণের কোন ক্ষোভ নেই কারণ জনগণ চায় সরকার দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাক আর এতে যদি আরো ত্যাগ স্বীকার করতে হয় তাহলে জনগণ তা করবে। ধরুন ইন্ডাষ্ট্রিতে প্রনোদনা দেয়ার আর কোন কারণ নেই; তারপরও দিয়েছেন; এইক্ষেত্রে বরং সেই প্রনোদনাটা যদি কৃষক, কামার, কুলি-মজুরের আয়ের উপর দেয়া হতো তাহলে যুক্তযুক্ত হতো। তবে এই বিষয়ে সরকার এবং এর দায়িত্বপ্রাপ্তরাই ভাল জানেন। আমি শুধু আমার মতামতটুকুই উল্লেখ করলাম। সাধুবাধ জানানোর অনেক বিষয় রয়েছে এই বাজেটে- যেমন বিদেশী রেমিটেন্সের উপর প্রনোদনা সহ আরো অনেক মহৎ দিকের। এক কথায় এই বাজেট সাম্যেরও বলা যায়। তবে সকলের সঙ্গে যোগসূত্র রেখেই এই বিশালাকার বাজেট উপস্থান করেছেন আমাদের সামনে যোগ্য সরকারের যোগ্য অর্থমন্ত্রী।
এই বাজেটে আবার নতুন এক মাইল ফলকও উন্মোচিত হলো। প্রথাগতভাবে চিরায়ত নিয়মের ব্যাত্যয় ঘটিয়ে এবার বাজেট উপস্থাপনের অনুমতির পর তা পড়ে শোনান আমাদের প্রধানমন্ত্রী নিজে। এটাও একটি উদারতার দৃষ্টান্ত; সেবকের দৃষ্টান্ত ও সেবার ভুমিকার জলন্ত প্রমান। এরই মধ্যে বেঁচে থাকবে বাংলাদেশ। ছাত্রজীবন, ব্যবসায়ী জীবন সাংগঠনিক জীবন, রাজনৈতিক জীবন; সংসদ সদস্য, পরিকল্পনা মন্ত্রী থেকে অর্থ মন্ত্রণালয় পর্যন্ত সাফল্যের ছোয়া তিনি রেখেছেন। অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর মন্ত্রীর প্রথম বাজেট উপস্থাপন আর তাও আবার বিশালায়তনের; যা অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে। সেখানে আবার তিনি অসুস্থ্য হয়ে হাসপাতালে; কিন্তু তিনি আসলেন এবং বাজেট উপস্থাপন করলেন; যখন আর পারছিলেন না তখন দায়িত্বটুকু মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে দিলেন আর সহাস্যে প্রধান মন্ত্রী সেই দায়িত্ব নিয়ে সেবকের ভুমিকায় নিজেকে প্রমান করলেন। তিনিই দেখ-ভাল করার যোগ্য উত্তরসূরী। বঙ্গবন্ধু এখন শান্তিতে বেহেস্তে বসবাস করছেন ও নির্ভার রয়েছেন। তাঁরই যোগ্য উত্তরসূরী এই দূর্ভাগা জাতিকে উদ্ধারকাজে নিয়োজিত রয়েছেন। সাফল্যের চুড়ান্ত সীমায় পৌঁছানোর দৌঁড়গোড়ায় এখন বাংলাদেশ। আর সেই কাজ সম্পন্ন করতে বঙ্গবন্ধু তনয়া কাজ করে যাচ্চেন এই আপমর জনগণের ইচ্ছা ও আখাঙ্কার সমন্বয়ে।
যারা দেশোন্নয়নে সহযোগীতা করে যাচ্ছেন তাদের সকলেই আগ্রহে অপেক্ষায় থাকেন দেখানো পথেরে শেখানো মন্ত্রে উজ্জ্বীবিত হতে। তবে এখানে কারো কারো গাফিলতি নয় বরং অদুরদর্শী বা জ্ঞান ব্যবহারের সীমাবদ্ধতাতো রয়েছেই; সেই ক্ষেত্রে মাঝপথে বিভিন্ন বিপত্তি চোখে পড়ে আবার চোখে পড়েনা কিন্তু সরকার প্রধান ঐ বিপত্তি সৃষ্টির প্রত্যাশা করেন না বরং বিপত্তি বিহীন নির্বিঘœতা নিয়ে এগিয়ে যেতে আগ্রহী এবং সকলকে এই পরামর্শ এবং আদেশ দিয়ে যাচ্ছেন। আমরা মানুষ তাই আমাদের ভুল-ত্রুটি থাকবেই এবং এই ভুল-ত্রুটির উদ্ধে কেউ নয়। তাই ভুল-ত্রুটি থেকে শিক্ষা নিয়ে এবং ভুল-ত্রুটি বিহীন জীবন নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে সকলের সহযোগীতা নিয়ে, কাউকে বাদ দিয়ে নয়; এমনকি কাউকে বিপদগ্রস্ত করেও নয়। সকলকে নিয়েই আগামীর পথ চলায় শরীক হয়ে এগিয়ে যেতে হবে।
এরই মধ্যে বিভিন্ন হাস্য-রস ও কটুক্তি নির্ভর কুৎসিত কার্টুন ছাপানো হয়ে বাজেটকে এবং মন্ত্রীকে নিয়ে। আসলে এটা খারাপ দৃষ্টান্তেরই সামিল বা যারে দেখতে নারি তার চলন বাকা কথাটির বাস্তবিক প্রমানেরও অংশ। যাই হউক উদার মন্ত্রী এবং সরকারের মনোভাবের কারণেই এই বিষয়টি নিয়ে আইসিটি আইনে মামলা হয়নি; যা প্রসংশার দাবি রাখে। সমালোচনাকে আশির্বাদ এবং অপবাদকে আলিঙ্গনে রূপদান করে এগিয়ে যেতে হবে এবং চলমান রাখতে হবে সচল অর্থনীতি এবং গতীশিল উন্নয়নকে। বিবাদে জড়ানো এবং অন্যকে শাস্তি দেয়ার মানসিকতা পরিহার করে এগিয়ে যেতে হবে আগামীর প্রত্যাশিত উন্নতির দিকে। কাউকে বাদ দিয়ে নয় বরং সকলকে নিয়ে এগিয়ে যেতে পারাটাই হলো সাফল্যের শতভাগ নিশ্চয়তা। বিজ্ঞ ও চৌকস জ্ঞানী মানুষগুলো আজ চেষ্টারত দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য। সেই অগ্রগতির সাথে এখন যুক্ত হচ্ছে আপামর জনসাধারণ। তাই দেশের এবং মানুষের কল্যান একসঙ্গেই সাধিত হচ্ছে। আর এই চলমান যাত্রাকে অব্যাহত রাখাটাই এখন আমাদের আগামীর চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করাটাই হবে আমাদের সকলের লক্ষ ও উদ্দেশ্য। তবে এক্ষেত্রে মতভেদ কিন্তু উন্নতির পথে অন্তরায়। তাই আমাদের মতভেদ ও মতপার্থকে দুরে সরিয়ে দেশের তরে এগিয়ে যেতে হবে যুগের চাহিদা এবং সময়ের দাবিকে সামনে রেখে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতার আগে বিদেশ সফরের সাফল্য তুলে ধরেছেন এবং বাংলাদেশের সার্বিক কল্যানের দিকে এবং দেশের জনগণের দিকে তাঁর সজাগ দৃষ্টি নিবন্ধন করে রেখেছেন তাও বলেছেন। এটাই স্বাভাবিক; তিনি এখন আমাদের অভিভাবক আর তাঁর অভিভাবকত্বেই দেশ উন্নত দেশের স্বীকৃতি আদায়ে মরীয়া হয়ে আছে। সার্বিক চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে এবং সেই চেষ্টায় আপনি এবং আমিও একজন শরীক হতে পারি। আসুন আমরাও অংশীদ্বার হই। এই উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় আমরা যেন বাধাস্বরূপ না হই সেইদিকে লক্ষ দিয়ে কাজ করতে হবে। একটি কথা বলতেই হচ্ছে যে, আমাদের অতি উৎসাহি কিছু দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির জন্য এই উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় ব্যহত ঘটেছে। বিশেষ করে এন এস আই এর রিপোর্ট বিরম্বনায় বিদেশীরা তাদের পুজি গুটিয়ে নিয়ে যাচ্ছে এবং এর কবলে পড়ে চাকুরী হারাচ্ছে বাঙালীরা। এতে করে এন এস আই আর এস বির কি কোন ক্ষতি হচ্ছে? না তাদের ক্ষতি নয় ক্ষতি হচ্ছে দেশের এবং সরকারের। তাই সরকার যেন সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স এবং ভিসা ভ্যারিফিকেশনের সঙ্গে যুক্তদেরকে বিশেষ প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষিত করে দায়িত্ব দেন। তারা যেন কোম্পানী এবং বাংলাদেশী কর্মীবান্দব চিন্তা এবং সুদুর প্রসারী জ্ঞানের আলোকে রাষ্ট্রের আয়ের পথ বন্ধ না করেন। বিনিয়োগ বোর্ডের দেয়া সিদ্ধান্ত এবং কোম্পানীর চুক্তিকে সম্মান প্রদর্শন করেন; এই ক্ষেত্রে কর্মীদের হয়রানী বন্ধ করে বরং রেভিনিউ এবং চাকুরীরতদের চাকুরীর সুনিশ্চয়তা নিশ্চিত করেন। পাশাপাশি ট্রাষ্টকে সরকারের আদেশ অনুযায়ী আরজেএসসি এবং বিডা অথবা এনজিও ব্যুরোর অনুমতি প্রাপ্তিতে সহজলভ্যতা আনয়নে সংশ্লিষ্টদের আদেশ দেন। নতুবা ঐ টাষ্ট্র এ কর্মরতদের কর্মসংস্থান বন্ধ হয়ে সরকারের উপর বেকারত্বের চাপ বৃদ্ধি পাবে। তাই চাকুরীর সুযোগ সৃষ্টি এবং চাকুরীরতদের রক্ষায় এখনই পদক্ষেপ নেয়া আশু বা জরুরী হয়ে পড়েছে। এখনই পদক্ষেপ নিন এবং দেশের কর্মসংস্থান ও স্থিতিশীলতাকে চলমান রাখুন। মন্দা চাকুরীর বাজারকে আরো মন্দার দিকে নিয়ে না যেয়ে বরং চাকুরী প্রত্যাশিদের আরো চাকুরীর সুযোগ উন্মুক্ত করতে সহায়তা করুন।
আমাদের সম্পদ আমাদের জনগণ আর এই জনগণকে অলস বসিয়ে না রেখে কাজের সযোগ সৃষ্টিতে এগিয়ে আসুন। বাজেটেও এর জন্য বিশাল সুযোগ সৃষ্টি করেছেন। সরকারী এবং বেসরকারী উভয় সংস্থায় কাজের পরিবেশ উন্নত এবং কর্মীর সংখ্যা বৃদ্ধিতে ভুমিকা রাখুন। আমাদের এই অগ্রগামীতাকে কেউই থামাতে পারবে না বরং আমাদের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামীর বিশ্ব এগিয়ে যাবে এটাই হউক আমাদের অঙ্গিকার। আমরাই পেরেছি, করেছি এবং করে যাব এই নিতীর বাস্তবায়ন ঘটুন আমাদের প্রাত্যহীক জীবনে। বাজেটের সাফল্যকে এগিয়ে নিয়ে যাব আগামীর তরে এই হউক আমাকে করনীয় কর্তব্যের একটি প্রচেষ্টা। প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী ছিল আছে এবং থাকবে; এরই মাঝে এগিয়ে যেতে হবে। আর ঐ এগিয়ে যাওয়াটাই হবে আমাদের সকলের প্রত্যাশা এবং প্রতিবাদের এমনকি প্রতিরোধের নতুন এক যুগৎপদ শান্তিপূর্ণ উন্নয়ন ও অগ্রগামিতার মহাযুদ্ধ। এই যুদ্ধে শামিল হই; এই যুদ্ধকে এগিয়ে নিয়ে যাই; পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশকে উন্নত এবং নের্তৃত্বের স্বায়ী পদে আসীন করি যাতে আগামী প্রজন্ম সম্মান ও সমৃদ্ধি নিয়ে এগিয়ে যেতে ও গর্ববোধ করতে পারে। এখনও যারা এই মনোকামনায় যুক্ত হতে পারেননি তাদেরকে বলছি আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশকে স্বীয় মর্যাদায় আসীন হতে হাতে হাত ও কাঁধে কাধ মিলিয়ে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের নিশ্চিত নিম্মিত্তে এগিয়ে নিয়ে যায়। সকল নির্যাতিত এবং নিপিড়িত মানুষের ত্রাতা হিসেবে অভয়ারন্য হউক এই বাংলাদেশ এবং বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াক। নিরাপদ বিচরন হউক আমাদের সম্পৃত্তির।