প্রশান্তি ডেক্স॥ রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের শিক্ষক রাশিদুল ইসলাম স্ত্রীর লাঞ্ছনার প্রতিবাদ করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু রক্ষা পেলেন না নিজেও। বখাটেদের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন। মা’রধরের শিকার হয়েছেন।
গত শনিবার (১০ আগস্ট) রাজশাহী শহরের জনবহুল সাহেববাজার মনিচত্ত্বর এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। পরে নিজের ফেসবুক আইডিতে ‘সবাই দাঁড়িয়ে দেখলো, কিন্তু কেউই এলো না এগিয়ে’ শিরোনামে একটি পোস্ট করেন রুয়েট শিক্ষক রাশিদুল ইসলাম।
প্রশান্তির পাঠকদের জন্য রাশিদুল ইসলামের ফেসবুক পোস্টটি তুলে ধরা হলো:
‘রাজশাহী শহরে এসব বখাটের কাছে আইন দিন দিন জিম্মি হয়ে পড়ছে। মেনে নিন নয়তো দেশ ছেড়ে চলে যান। এদেশে আপানার চোখের সামনে আপনার মা, বোন অথবা বউ ধ’র্ষিত হলেও প্রতিবাদ করবেন না, আশেপাশে কাউকে পাবেন না। মা’র খেয়ে ম’রবেন। কারণ, আপনি একটা জানোয়ার, আমিও একটা জানোয়ার, জানোয়ারে ভরা সমাজ আমাদের।
আজকের ঘটনাটা সংক্ষেপে বলি। সাহেববাজার মনিচত্ত্বরের মতো জনবহুল এলাকাতেও আমার বউ হেনস্তার শিকার হয়। এক পাল ছেলের মধ্যে একজন আমার বউকে পেছন থেকে কয়েকবার ইচ্ছাকৃত ধাক্কা দেয়। দুই-তিনবার সহ্য করলেও পরেরবার প্রতিবাদ করি। ব্যাস, সোনার ছেলেদের দাপট শুরু। শেষে আমাকে সোনাদীঘি মসজিদের সামনে ৫-৭ মিলে ঘিরে ধরে মা’রা শুরু করে। এই পর্যন্ত না হয় মেনে নিলাম।
কিন্তু ওখানে কম করে হলেও ৫০ জন আমার মা’র খাওয়া দেখছিল। একজনও এগিয়ে আসেনি। মা’র খাওয়ার এক পর্যায়ে আমি দর্শকদের উদ্দেশ্যে বলি, ‘বাঁচান আমাকে’, কোনো রেসপন্স পাইনি। একজন মোটরসাইকেল থামিয়ে আমার মা’র খাওয়া দেখছিল, আমি সাহায্য চাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মোটরসাইকেল চালিয়ে চলে গেল।
মা’র খেয়ে কাপুরুষ আমি দর্শকদের বলি, আপনারা আজ এগিয়ে এলেন না, একদিন আপনার বউয়ের সঙ্গে এমন হলেও কেউ এগিয়ে আসবে না। ও আমার বউ, গার্লফ্রেন্ড না, কাবীননামা দেখাতে হবে আপনাদের? এ সময় একজন ভিড়ের মধ্য থেকে বলে বসল, হ্যাঁ, কাবীননামা নিয়েই চলাফেরা করতে হবে।
ধরেন, দ্বিতীয়বার আক্রমণে ওরা আমাকে মেরে ফেলল। কি করবেন? ফেসবুকে কান্নাকাটি? জাত গেল জাত গেল রব তুলবেন? কোনোটাই করবেন না দয়া করে, এতে কিছু আসে যায় না। আর যারা করবে, তাদের গিয়ে থুথু দিয়ে আসবেন। ধরেই নিয়েছিলাম, পিএইচডি শেষ করে দেশে ফিরব, মা বাবা চান না বাইরে স্যাটেল হই। এই ঘটনার পর দ্বিতীয়বার ভাবব অবশ্যই।’