জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে গত বুধবার বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরে অনেকের ভোল পাল্টেছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। গত বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে শামীম আহমেদের ‘সাংবাদিক মোস্তাক হোসেন একটি যুগের প্রতীক’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনাকে যখন ২০০৭ সালে গ্রেপ্তার করা হয়, তখন অনেকে ভোল পাল্টেছিল। আমাদের দলের অনেকে ভোল পাল্টেছিল। আবার যারা কাগজে লেখে, তাদের মধ্যেও অনেকের ভোল পাল্টেছিল। পরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরে তারা আবারও ভোল পাল্টেছে। কারণ যারা ভোল পাল্টায়, তারা সময় মতো আবারও ভোল পাল্টায়।’ তিনি বলেন, ‘আজকে সবাই বৃত্তের পেছনে ছুটে। সবাই প্রভাব প্রতিপত্তির পেছনে ছুটে। সবার মধ্যে শুধু এখন না পাওয়ার বেদনা। যে পেয়েছে, তার মধ্যেও না পাওয়ার বেদনা। যে পায়নি, তার মধ্যেও না পাওয়ার বেদনা। এজন্য সমাজে খুব অসুস্থ প্রতিযোগিতা চলছে। সেই কারণেই মানুষ অসুখী। সুখের প্রধান বিষয় হচ্ছে, আমার যা আছে তা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হবে।’ ‘বিত্তের পেছনে ছুটতে গিয়ে যে অসুস্থ প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে, এতে সমাজ কলুষিত হচ্ছে। অল্প সময়ের মধ্যে সবকিছু পেতে হবে, এমন একটি ধারণা সবার মাঝে। এটি সমাজকে অসুস্থ করে তুলছে।’ সাংবাদিক মোস্তাক হোসেনের কথা স্মরণ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মোস্তাক ভাই আমার অনেক ঘনিষ্ঠ মানুষ ছিলেন। কোনো কারণে নয়, এমনিই তিনি ঘনিষ্ঠ হয়ে গিয়েছিলেন। সাংবাদিক মোস্তাক ভাইকে আমি মামা বলে ডাকতাম। অনেক সংবাদিক তাকে মামা ডাকতো, তাই আমিও মামা ডাকতাম। তার মতো ভালো মানুষ খুব কম হয়।’ ‘তার কোনো চাওয়া-পাওয়া ছিল না। খুব বেশি চাহিদা ছিল না। শুধু জীবন চলার জন্য যেটুকু প্রয়োজন, তার ততটুকুই চাওয়া ছিল। তিনি অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে সাংবাদিকতা করেছেন। আজকের এই সময়ে শুধুমাত্র সাংবাদিকদের জন্য নয়, সাধারণ মানুষের জন্যও তিনি উদাহরণ। লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে উঠে তিনি নিভৃতে কাজ করতেন। ক্ষমতাবানদের কাছে বিশেষ চাহিদার জন্য কখনো যেতেন না।’ তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তাকে ব্যক্তিগতভাবে চিনতেন ও জানতেন। আমার মনে হয়না তিনি কখনো প্রধানমন্ত্রীর কাছে কোনো চাহিদার জন্য গিয়েছিলেন। আমার সঙ্গে তার অনেক ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। আমাকেও কখনো কোনো ব্যক্তিগত চাহিদার কথা বলেননি। এমন মানুষ সত্যিই আজকের সমাজে বিরল। মোস্তাক ভাই সুখী মানুষ ছিলেন। তার কোনো বৃত্ত ছিল না, কোনো চাওয়া ছিল না। ফলে না পাওয়ার কোনো বেদনাও ছিল না। তার যা ছিল, তা নিয়েই তিনি সুখী ছিলেন। আমি কখনো ভাবিনি এত তাড়াতাড়ি তিনি আমাদের ছেড়ে চলে যাবেন।’ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- নতুন ধারা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শামীম আহমেদ, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল মান্নান চৌধুরী প্রমুখ।
Share on Facebook
Follow on Facebook
Add to Google+
Connect on Linked in
Subscribe by Email
Print This Post