তাজুল ইসলাম নয়ন॥ সদ্য শেষ হওয়া জেলা পরিষদ নির্বাচন আমাদেরকে কি শিক্ষা দিল? দম-মত নির্বিশেষে আম জনতার ভোটে এবার যারা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উন্নয়নের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন স্থানীয় প্রতিনিধি হিসেবে যেমন-ইউনিয়ন, পৌরসভার মাধ্যমে। এই প্রতিনিধিরা সবাই ছিলেন আওয়ামী লীগের মনোনয়নে বিজয়ী। আওয়ামী ঐক্যের ফসল যদি হয় তাহলে জেলা পরিষদ নির্বাচনে এর ব্যতিক্রম কেন হল! স্থানীয় এমপি; মন্ত্রীমহোদয়সহ এমনকি দলীয় প্রতিকে নির্বাচন করা প্রার্থী পরাজিত হওয়া কি ইঙ্গিত বহন করে? আমরা মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহন করে সংবাদ প্রকাশ করেছি। দলীয় ঐক্যের সমাহার দেখেছি কিন্তু ভোটের প্রতিফলন তার ¯্রােতের বিপরীত প্রতিয়মান হয়েছে। এমতাবস্থায় আমরা কি সিদ্ধান্ত নিতে পারি, এই শিক্ষা থেকে আগামী ২০১৯ নির্বাচনের জন্য। এইতো সদ্য শেষ হওয়া নাসিক নির্বাচনের ফলাফল স্বস্তী এবং উৎফুল্লুতার বহিপ্রকাশ ঘটিয়েছিল আমাদের আম জনতার মনে। কিন্তু জেলা পরিষদ নির্বাচন আবার হতাশ করে আমাদেরকে বিভিন্ন অংক কষতে বসিয়েছে। একটি প্রশ্ন তৈরী হয়েছে দলীয় ঐক্য নিয়ে এমনকি দলীয় নিবেদিত প্রাণ কর্মী বা নেতা নিয়ে? এখানে আনুগত্যের প্রশ্ন এবং দলের প্রতি দায়বদ্ধতা ও বিশ্বস্ততার প্রশ্ন। মাঝে আমাদের মাঠের অনুসন্ধানে বের হয়ে আসে তৃণমূলের ক্ষোভ এবং হাইব্রিডদের দাপট। সবমিলিয়ে আমরা কি ভাবতে পারি বা অনুসন্ধানী রিপোর্ট থেকে যা বের হয়ে আসছে তার সম্মিলিত প্রতিফলন পকাশ করার প্রয়াস রাখছি।
নারায়নগঞ্জের নির্বাচনে যে সুত্রগুলো একসাথে কাজ করেছে তা হল দলীয় ঐক্য, প্রার্থীর ভাবমূর্তী, উন্নয়ন কর্মকান্ড, সরকারের উন্নয়ন গতি ও দলীয় প্রতিক সব মিলিয়ে যে যোগসূত্র তা হল আইভীর বিপুল ভোটে বিজয়ী হওয়ার কৃর্তী। কিন্তু জেলা পরিষদ নির্বাচনে সরকার মনোনীত প্রার্থীদের পরাজিত হওয়ার পেছনে যে যোগসূত্রগুলো কাজ করেছে তা হলে হাইব্রিডদের টাকার লোভ, দলীয় ঐক্যের অভাব, প্রার্থীর স্বচ্ছ ভাবমুর্তীর অভাব, সামাজিক জোগাযোগে অনীহা, ক্লাস মেন্টেইন করে চলা (যা রাজনীতিবিদদের ক্ষেত্রে অনুচিত), তৃণমূলের অমুল্যায়নের ফলসহ নানাবিধ কারণে এই পরাজয়। আমরা দেখতে চাই আগামীর প্রস্তুতির জন্য এখন থেকেই এই হিসেব নিকেশগুলি সুক্ষ বিবেচনায় এবং সম্পূর্ণ নিশ্চয়তাসহকারে সকল সিদ্ধান্ত নেয়ার আহবান জানাচ্ছি। আইভির ক্ষেতে যে জয় সুনিশ্চিত ছিল সেই সুনিশ্চিত অবস্থার পুনরাবৃত্তি ঘটানোর সর্বাঙ্গীন প্রয়াস চালাতে হবে।
কি কারণে বা কোন দুর্বলতায় এইসকল অবস্থার অবতরণ হয়েছে তা অবসান করার লক্ষ্যে এখন থেকেই কাজ করতে হবে। মন্ত্রী, এমপি মহোদয়গণ কারো কথা না শুনে বরং নিজস্ব বিচার বিশ্লেষণ এবং নিরপেক্ষ মানুষের মতামতের ভিত্তিতে অগ্রসর হলেই আগামীর বিজয় সুনিশ্চিত। এক্ষেত্রে একটি কথা অপ্রিয় হলে বলতে হচ্ছে আমাদের আগামীর দলীয় বিজয় সুনিশ্চিতের লক্ষ্যে এগুতে হলে কাউকে ছোট বা অমর্যাদা করার জন্য নয় বরং মর্যাদা বৃদ্ধির মাপকাঠি মজবুত করার লক্ষ্যে। পি, এস, এ, পি, এস, দলীয় কাছের লোক ও আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে শোনা কথার পরক্ষণে সাধারণের কথা শুনা জরুরী এবং বিরোধী মতের কথাও শুনে বিশ্লেষণ করে এগুলো মনে হয় আগামী দিনের বিজয় আমাদের সুনিশ্চিত। সেই প্রতিক্ষায় রইলাম। নতুন বছরের শুভেচ্ছা সকলকে।