ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)প্রতিনিধি ॥ কসবা উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৭ কিলোমিটার দুরে চন্দ্রপুর গ্রাম। উপজেলার মুলগ্রাম ইউনিয়নের পশ্চিমপ্রান্তে নবীনগর উপজেলার সীমান্ত সংলগ্ন গ্রামটি এখন মাদকের ছোবলে আক্রান্ত। ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে ওই গ্রাম সহ আশ-পাশ গ্রামের যুব সমাজ। গ্রামের শত শত মানুষের দাবী এই গ্রামের সুন্দরী ইয়াবারানী আবেদা সুলতানা আশামনি এই মাদক ব্যবসার মক্ষিরানী। তার মাধ্যমে নেশায় জড়িয়ে পড়ছে নিয়ামতপুর, বাহাদুরপুর,মুলগ্রাম ও পাশ্ববর্তী উপজেলা নবীনগরের কাইতলা গ্রামের যুবক ও কিশোররা। যুবকদের বিভিন্নভাবে ফাঁসিয়ে নেশাগ্রস্ত বানাতে নানা কৌশল অবলম্বন করে গ্রামে অস্বস্তিকর পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।
মূলগ্রাম ইউপি সদস্য মো.জসিম উদ্দিন জানান; প্রায় ১৫/১৬ বছর আগে ফরিদপুরের এক ব্যক্তির সাথে আবেদা সুলতানার বিয়ে হলে সেখানে দুই পুত্র সন্তানের জননী হওয়ার পর তার উচ্ছৃঙ্খল আচরনের ও চলাফেরার জন্য তার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। পরে চাঁদপুরের মামুন নামক এক মাদক ব্যবসায়ীর সাথে আবেদা সুলতানা আশামনির বিয়ে হয়। চাঁদপুরে মামুনের একাধিক মামলা থাকায় আশামনি মামুনকে নিয়ে কসবা উপজেলার চন্দ্রপুরে বসবাস করতে থাকে। এখান থেকে আশামনি ও মামুন চন্দ্রপুরকে মাদক ব্যবসার ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে। আশামনির বাড়ি থেকেই এই গ্রামসহ আশেপাশের গ্রামগুলোতে ইয়াবা সহ বিভিন্ন ধরনের মাদক সরবরাহ করে থাকে। ফলে চন্দ্রপুরসহ আশপাশের গ্রামগুলোর যুবক ও কিশোর সম্প্রদায় নেশাগ্রস্থ হওয়ার পাশাপাশি মাদকের ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। পরে গ্রামবাসী থানার মাধ্যমে জানতে পারে মামুন কসবা উপজেলার তালিকাভ’ক্ত মাদক ব্যবসায়ী। ফলে গ্রামবাসী চন্দ্রপুর কল্যান সংগঠনের উদ্যোগে একযোগ হয়ে কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী মামুন ও তার স্ত্রী আবেদা সুলতানা আশামনিকে গ্রামে থেকে তাড়িয়ে দেয়। কিছুদিন পর আশামনি পুনরায় গ্রামে এসে শাড়ী, লুঙ্গি ও কসমেটিক্স বিক্রির আড়ালে আবারো ইয়াবাসহ মাদকের ব্যবসা শুরু করে। এমতাবস্থায় গ্রামের দুই সন্তানের জনক রবিউল নামে এক যুবককে ফুসলিয়ে নেশাখোর বানিয়ে ২০১৯ সালের মে মাসে ফাঁদে ফেলে জোরপূর্বক তাকে বিয়ে করতে বাধ্য করে। পরে গ্রামের লোকজন আবারো এই প্রহসন মুলক বিয়ে ভেংগে দিয়ে রবিউলকে তার পুর্বের স্ত্রী সন্তানের কাছে ফিরিয়ে আনে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আশামনি রবিউল সহ গ্রামের সাহেব সর্দার ও প্রবীন মুরুব্বীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করে যা্েচ্ছ।
গ্রামের মুরব্বী হানিফ ব্যাপারী, আবু জামাল, স্বপন সর্দার, খলিলুর রহমান, তাজুল ইসলাম, মামুন খন্দকার, তাজু সরকার ও মিলন খন্দকার সহ গ্রামের শতাধিক নারী পুরুষ জানান, আবেদা সুলতানা আশামনি একের পর এক মামলা দিয়ে গ্রামবাসীকে হয়রানী করছে। কিছুদিন পুর্বে তরিকুল ইসলাম নামে কসবা থানার এক দারোগা তার ঘর তল্লাসী চালাতে গেলে আশামনি তার কাপড় চোপর ছিড়ে ফেলে নাজেহাল করে। মাদক ব্যবসায়ী আবেদা সুলতানা আশামনির মিথ্যা মামলা ও তার দাপটের কাছে গ্রামবাসী যেন অসহায়। আইন শৃঙ্খলা বাহীনির কাছে গ্রামবাসীর দাবী অবিলম্বে আশামনিকে আইনের আওতায় এনে শান্তিপ্রিয় চন্দ্রপুর গ্রাম সহ আশপাশের এলাকাগুলোকে মাদকমুক্ত করা হোক।