রাইসলাম॥ জামায়াতের দলীয় প্রতীক হিসেবে আদালতের মনোগ্রামে ব্যবহৃত দাঁড়িপাল্লা প্রতীক বাতিলে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তকে সঠিক বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। সম্প্রতি ফুল কোর্ট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দাঁড়িপাল্লা প্রতীক বাতিলে নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করে সুপ্রিমকোর্ট প্রশাসন। সেই পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন প্রতীক বাতিলের এই সিদ্ধান্ত নেয়। এ বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতীক নির্বাচনের এখতিয়ার হচ্ছে নির্বাচন কমিশনের। নির্বাচন কমিশন যদি কোনো প্রতীককে বাদ দিতে চায় বা কোনো প্রতীককে অন্তর্ভূক্তি করতে চায়, আইনত সেটা তারা পারে। নির্বাচন কমিশন দাঁড়িপাল্লা বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আইনত যেহেতু তারা সেটা পারে, আমরা বলেছি এটা ঠিক।’
বুধবার বিচার প্রশাসন ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ভবনে স্পেশাল জজ, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের জজ/সমপর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের ‘ওরিয়েন্টেশন ট্রেনিং কোর্স’ এর উদ্বোধনের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। পুরাতন হাইকোর্ট ভবন থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সরানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এখান থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সরিয়ে নেয়ার যে আদেশ সুপ্রিম কোর্ট দিয়েছে। আমি যতবারই আদেশ পাই ততবারই আমি এটা পুনর্বিবেচনা করার জন্য বলবো। যতবার চিঠি দিবে ততবারই আমি পুনর্বিবেচনার জন্য চিঠি দিব।’
নির্বাচন কমিশন গঠনে কোনো আইন প্রণয়নের ব্যাপারে কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘সংবিধানে এটা স্পষ্টভাবেই লেখা আছে, এটা রাষ্ট্রপতির এখতিয়ার। রাষ্ট্রপতি এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দিবেন। এ ব্যাপারে রাষ্ট্রপতি একটা আলাপ আলোচনা করছেন। সেই ক্ষেত্রে সরকার থেকে এমন কোনো কথা আমি বলতে চাই না।’ আইন করতে রাষ্ট্রপতি আদেশ দিলে আগামী সংসদ অধীবেশনে এ বিষয়ে কোনো আইন করতে আপনাদের প্রস্তুতি আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের একটি লেজিসলেটিভ বিভাগ আছে। রাষ্ট্রপতি কিছু করার জন্য যখন নির্দেশ দিবেন। আমরা নিশ্চয় সেই কাজটা ত্বরিত করার ক্ষমতা রাখি। আপনারা একটু অপেক্ষা করেন। এই আলাপ আলোচনার মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি কী সুপারিশ করেন। রাষ্ট্রপতি যেই সুপারিশ করেন সেটা আমরা মানতে বাধ্য।’
উচ্চ আদালতে নতুন বিচারপতি নিয়োগের বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি বিচারক নিয়োগ দিয়ে থাকেন। বিচারপতির সংকট দেখা দিলে তখনই আমরা নতুন নিয়োগের বিষয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে অনুরোধ জানাব। সেক্ষেত্রে চলমান প্রক্রিয়া যখনই প্রয়োজনীয়তা দেখা দিবে তখনই বিচারপতি নিয়োগ হবে। নিয়োগটা যাতে বিতর্কের ঊর্ধ্বে থাকে এবং যোগ্য লোক নিয়োগ পায় সেই চেষ্টা করব।’
বিচারক নিয়োগে আইন প্রণয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘একটা দাবিও উঠেছে, বিজ্ঞ বিচারপতি নিয়োগ দেয়ার বিষয়ে একটা আইন করার, ইনশাআল্লাহ এই বছরের মধ্যে করব।’ আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে অধস্তন আদালতের বিচারকদের শৃংখলাবিধি গেজেট প্রকাশের জন্য আপিল বিভাগ আইন মন্ত্রণালয়কে সময় দিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘বিচারাধীন বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না।’