প্রশান্তি ডেক্স॥ অনুর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপজয়ী বাংলাদেশ দলের অন্যতম তারকা বাহাতি পেসার শরিফুল ইসলাম বীরের বেশে বাড়ি ফিরেছেন। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে গ্রামের বাড়ি দেবীগঞ্জের দন্ডপাল ইউনিয়নের মৌমারী গ্রামে স্থানীয়রা তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন।
এর আগে বিমানে করে ঢাকা থেকে সৈয়দপুরে আসেন ঊনিশের এই ক্রিকেট তারকা। সেখান থেকে বাবা-মা ও ভাই-বোনসহ স্বজনরা তাকে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসেন।
বিকাল তিনটায় স্থানীয় মৌমারী বাজারে পৌঁছলে স্থানীয় লোকজন ব্যান্ডপার্টি নিয়ে ফুলের মালা পরিয়ে শরিফুলকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। বাড়ির সামনে প্রতিবেশি, আত্বীয়-স্বজন, শিক্ষক-সহপাঠিসহ স্থানীয়রা তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
বাড়ি পৌঁছে পেসার শরিফুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, বাবা-মা, আত্বীয়-স্বজন ও এলকাবাসীর দোয়া এবং ভালোবাসায় আমি এতদূর পর্যন্ত এসেছি। সবার ভালোবাসা পেয়ে নিজেকে গর্বিত মনে হচ্ছে। ভবিষ্যতে জাতীয় দলের হয়ে খেলতে চাই। ভবিষ্যতে যাতে বিশ্বকাপ জিততে পারি এই দোয়া চাই।
শরিফুলের বাবা একজন কৃষক। সংসারের খরচ জোগাতে এক সময় ঢাকার সাভারে রিকশা চালাতেন। চার ছেলে-মেয়ের মধ্যে শরিফুল ইসলাম ২য়। বড় ছেলে আশরাফুল ইসলাম বাবার কৃষি কাজের সঙ্গে বাড়ির গরুর খামার দেখাশোনা করেন। বড় বোন দুলালী আক্তার দেবীগঞ্জ মহিলা কলেজে ১ম বর্ষ এবং ছোট বোন শম্পা আক্তার কালিগঞ্জ এমপি উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে লেখাপড়া করছে। শরিফুল স্থানীয় কালিগঞ্জ সুকাতু প্রধান উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। পরে কালিগঞ্জ মহাবিদ্যালয়ে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হন।
শরিফুলের বাবা দুলাল মিয়া জানান, আর্থিক সঙ্কটের কারণে এক সময় আমরা ঢাকার সাভারের জিরানী এলাকায় যাই। শরিফুল জিরানীবাজার গোহালবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি পাস করে। ২০১০ সালের দিকে আবারও গ্রামে ফিরে আসি। লেখাপড়ার পাশাপাশি ছোটবেলা থেকেই শরিফুল ক্রিকেট খেলতো। স্কুল ফাঁকি দিয়ে মাঠেঘাটে ক্রিকেট খেলতো। আজ সে দেশের হয়ে ক্রিকেট খেলে সুনাম করেছে। এজন্য আমরা সবাই খুশি।
শরিফুলের মা বুলবুলি বেগম বলেন, আমাদের সাড়ে ১৯ শতক জমি ছাড়া আর কিছু নেই। ছেলে আমার ক্রিকেট খেলে যা আয় করতো তার সবই অসহায় পরিবারের জন্য ব্যয় করেছে। বিপিএলের সাড়ে ৫ লাখ আর শাইন পুকুরের সাড়ে ৭ লাখ টাকা দিয়ে বাড়ি ও একটি খামার তৈরি করে দেয় সে। বর্তমানে এই খামার দিয়ে আমাদের সংসার চলছে।
দেবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রত্যয় হাসান বলেন, শরিফুলের বোলিং স্টাইল, নিখুঁত লাইন এবং লেন্থ দেখে আমরা অভিভূত। শরিফুল আমাদের দেবীগঞ্জের গর্ব, পঞ্চড়ের গব। অনুর্ধ্ব ১৯ যুব বিশ্বকাপ নয়, সুযোগ পেলে তিনি জাতীয় টিমের পেস বোলার হিসেবেও ভালো করবেন আশা করি।