ইদানিং একটি বিষয় স্পষ্ট যে, ধর্ম এবং ঈমান এই দুইয়ের দ্বন্ধ এবং উস্কানিতে ধর্মীয় বিভাজন সৃষ্টি হচ্ছে। এর ফলে সমাজে ফ্যাতনা ও বিশৃঙ্খলা বিরাজমান রয়েছে। প্রত্যেকটি ধর্মই শান্তির কথা বলে, স্থিতিশিলতার কথা বলে, ন্যায়ের কথা বলে, সম্প্রীতির কথা বলে, ক্ষমা এবং ভালবাসার কথা বলে, ঐক্যের কথা বলে, মানবতার কথা বলে, ইতিবাচক মুল্যবোধের কথা বলে কিন্ত কোন ধর্মই বলেনা অনৈতিকতার কথা, বিশৃঙ্খলার কথা, বিভাজনের কথা, হিংসা ও বিদ্ধেশের কথা, এমনকি ঘৃণ্য ও বর্বরতার কথা। কিন্তু এই ধর্মীয় প্রচারণায় সকল নেতিবাচকতা এবং হিংসা-বিদ্ধেশ, উস্কানী, ধমকানী, বকুনী, হিং¯্রতা এমনকি ধর্মের মূল বানীর বিরোধীতায় মগ্ন থেকে নিজেদেরকে জাহিরে ব্যতিব্যস্ত হয়ে এক আগ্নেয়গীরীর অগ্নুৎপাত সমাজে, দেশে ও সমগ্র বিশ্বে বিরাজমান রাখছে। তাই এবার সময় এসেছে সকল ধর্মের ক্ষেত্রেই একটি সামষ্টিক ও কার্যকরী শান্তী ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় সৃষ্টিকর্তার অভিপ্রায়ে অব্যাহত অক্ষুন্নতা বিরাজমান রাখার নিমিত্তে কাজ করার। কি বলা যাবে আর কি বলা যাবে না এমনকি ঈমান ও আমল যার যার অবস্থান থেকে করবে কিন্তু কোন আমলকারীই যেন বাধাগ্রস্ত না হয় এমনকি যে কোন ধর্মেরই কোন প্রকার অবমাননা এমনকি সৃষ্টির সেরাজীব আশরাফুল মাকলুকাতের ঐক্য বিনষ্ট না হয় সেই দিকে দৃষ্টি দিয়ে প্রত্যেকটি দেশেই স্ব স্ব সরকার ধারা আইন স্বীকৃতি ও এর বাস্তবায়ন অব্যাহত রাখা প্রয়োজন। নতুবা নিজেরা নিজেরা মারামারিতে পৃথিবী বিলীন হয়ে যাওয়া ছাড়া আর উপায় থাকবে না।
প্রত্যেকটি ধর্মের একটি আদর্শীক দিক ও এর মিল রয়েছে; সেই মিল সৃষ্টিকর্তাতে এবং এর অভিপ্রায়ে। তবে এর মুলে যে কুঠারাঘাত না করা হয় এমনকি যে যেভাবেই সৃষ্টিকর্তাকে ডাকুক তিনি শুনেন এবং তাকে রক্ষায় প্রয়োজনীয় যোগান দেন। তাই প্রত্যেকেরই তাঁর (আল্লাহর) কাছে ফিরে যেতে হবে এবং তাঁরই কাছে জবাবদিহি করতে হবে। তাই বর্তমান সময়ে আমাদের সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা হউক ধর্মীয় সম্প্রতি বজায় রেখে সামনে এগিয়ে যাওয়ার। ওয়াজের মৌসুমে ডিজিটাল ওয়াজের ব্যাত্যয় নয় বরং এই ডিজিটাল ওয়াজকে আরে ফলপ্রসু হতে একে অন্যতে কোমল ও মহব্বতে পূর্ণ হয়ে সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছার বহি:প্রকাশ করবে। আমাদের এই আলেম সমাজ শ্রদ্ধার এবং দিকদর্শনের কিন্তু বর্তমানে যা দেখাচ্ছে তা কিন্তু খোদা তায়ালার চেয়ে তাদের নিজের নিজের ইচ্ছা ও আকাঙ্খার ছাড়া বেশী কিছু আর কি? তবে এই অবস্থা চলতে থাকলে মানুষ ধর্মের কাছ থেকে দুরে সরে যাবে। এমনিতেই মানুষ এদিকে ওদিক ছোটাছুটি করছে খোদাকে পাওয়ার জন্য এবং তাঁর সান্নিধ্য লাভ করার জন্য। কিন্তু বর্তমান দৃশ্যমান আলেমসকল ঐ কোমলমতি মানুষদের কাছ থেকে খোদাকে আরো দূরেই সরিয়ে দিচ্ছেন প্রকারান্তরে। তবে খোদা আমাদের প্রত্যেকের হৃদয়ে বসবাস করেন এবং তিনি আমাদেরকে ভালবাসেন ও প্রয়োজনীয় যোগান দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। আমরা যাই করি না কেন তিনি আমাদেরকে অভিশাপ দেন না বরং আশির্বাদই করে যাচ্ছেন আর অধির আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছেন কখন আমরা তৌবা করে তাঁর কাছে ফিরে যাব। আসুন আমরা আমাদের মাঝেই সৃষ্টিকর্তাকে খুজি এবং তাঁর ইচ্ছা জানতে চেষ্টা করি ও সেই অনুযায়ী চলি। এর বাইরে গিয়ে কারো দ্বারা প্ররোচিত হয়ে খোদার কাছ থেকে বহুদূরে না যায়।
বিশ্ব এখন অনৈতিকতার মহামারিতে আক্রান্ত ও জর্জরিত। কিন্তু এই হা-হা কার করা সময়ে আবার যুক্ত হয়েছে বিভিন্ন রোগ জিবানুর আক্রমন। তবে সদ্য প্রকাশিত ও মহামারী আকারে রূপদানকৃত করোনা ভাইরাসের করুনায় পৃথিবী এখন প্রকম্পিত। কিন্তু এর থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য কতইনা চেষ্টা ও অধ্যবসায় চালিয়ে যাচ্ছেন আমাদের মত বুদ্ধিমানজন। কিন্তু ভেবে দেখেছেন এই করুনার করুনায় কারা কারা আক্রান্ত এবং কেন ও কি কারণে আক্রান্ত এমনকি কোথায় ও কিভাবে আক্রান্ত হয়েছে? আর যারা এখনও হয়নাই তারাও কি ভেবে দেখেছেন এই আক্রান্ত হওয়ার উৎসে কিভাবে পানি ঢালা যায় এবং নগ্নতা ও উষœতা এমনকি ধারাবাহিকতা চিরতরে বন্ধ করে শান্তি ও স্থিতিশীলতায় পূর্ণতা দেয়া যায়। তবে যিনি আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন তিনিতো আমাদেরকে জ্ঞান-বুদ্ধি-বিবেচনা এমনকি কি করতে পারব আর কি করতে পারব না তার রূপরেখা জানিয়েছেন। আমরা কি ঐ রূপরেখায় আছি নাকি নিজেরা নিজেদের জন্য এই ভয়াবহতা সৃষ্টি করে অনাচার ও অবিচারের আশ্রয়ে থেকে সেই মহান সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছার বিরুদ্ধাচারন করে যাচ্ছি। তবে এই মহামারি থেকে মুক্তির একমাত্র মালিক তিনিই যিনি আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এবং রক্ষা করে যাচ্ছেন ও প্রতিনিয়ত আমাদের চাহিদার যোগান দিয়ে যাচ্ছেন। আসুন আমরা তাঁর কাছে ফিরে গিয়ে সাহায্য কামনা করি এবং ঐ করুনাকে পৃথিবী থেকে বিতারিত করি। তবে মহান খোদার কাছে এবং তাঁর মনোনীত ব্যক্তিদের কাছে ঐ করুনার ক্ষমতা একেবারে শুন্য তাই ফিরে আসুন খোদার সান্নিধ্যে এবং বেহেস্তী রাজ্যে। যেখানে থাকবে না কোন ভয় এবং ভীতি, অনৈতিকতা এবং অশান্তি। নিশ্চয়তা ও নিরাপত্তা এমনকি শান্তি ও আনন্দপূর্ণ পরিবেশে পৃথিবীর শেষদিন পর্যন্ত আগামীর চূড়ান্ত নিশ্চয়তা নিয়ে বাঁচুন এবং অন্যকে বাঁচতে বিনামূল্যের দিকনির্দেশনা দেখিয়ে দিন।
সামনে আসছে আবারো পঞ্চবটিক নির্বাচন। এই নির্বাচন হউক সকলের এবং ভোটারের আন্তরিকতার ও স্বতফুর্ততার। কোন ক্রমেই অতিতের ভূলগুলিকে এই নির্বাচনে স্থান দেয়া যাবে না। অতিতের প্রতিটি ভূলকেই এই নির্বাচনে শুধরিয়ে নেয়ার মানষিকতা কথা ও কাজে প্রকাশ করতে হবে। কোনক্রমেই আত্মঅহমিকা বা হাম্বরা ভাব প্রকাশ করা যাবে না। জনগণকে মূল্যায়নের একমাত্র সময় নির্বাচনের আগে আর এই মূল্যায়নের সময়টুকু জনগণকে দেয়া এমনকি জনবান্ধব নেতা-কর্মী ও সমর্থক হওয়া অতিব জরুরী। দেশ, সমাজ, সংস্কৃতি ও চলমান উন্নয়নকে সম্মুখপানে রেখে যুগোপযোগী চিন্তা ও কর্মের সমন্বয়ে এগিয়ে যাওয়াই আমাদের লক্ষ্য হউক। দেশী ও বিদেশী কারো কাছে জবাবদিহীতা নয় বরং নিজের আত্মার কাছে জবাবদিহীতাই সবচেয়ে বড় এবং দামী ও গ্রহণযোগ্য। আত্মার সন্তষ্টী অর্জনে এগিয়ে যান। প্রতিবন্ধকতা থাকবে ও রয়েছে তা পাশ কাটিয়ে নয় বরং এর প্রতিকারে ও নির্মূলে সঠিক পদক্ষেপে এগিয়ে যান। যেন আগামীর সুর্যসন্তানরা ঐইসকল প্রতিবদ্ধকতা এমনকি নর্ব্য নেতিবাচকতার কোন স্থান বা দৃশ্যমানতা বিরাজমান না থাকে বা দেখে। আমরাই পেরেছি এবং পারব আর আমাদের সঙ্গে রয়েছেন খোদার আশির্বাদ পুষ্ট রাষ্ট্রচালনায় অভিজ্ঞজন। তাদের সঙ্গে একাত্মতা এবং কর্মনিষ্টায় পথচলায় আগামীর অগ্রগামীতার স্বাক্ষর বহন করবে; এবং নিশ্চিত হবে আমাদের দেশের ও জনগণের সম্মানের সু-উচ্চ আসনটুকু। এই পাকাপোক্ততায় আমরা এগিয়ে যাচ্ছি ও যাব আর এর জন্য প্রয়োজন সাম্য ও সর্বদলীয় ঐক্য। যা বঙ্গবন্ধু ৭৫’র করে দেখিয়েছিলেন। অনেকেই ঐ ঐক্যকে বাকাচোখে দেখেন কিন্তু ইতিবাচকতা এবং উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য ঐ ঐক্য আবারো দরকার। যা হচ্ছে এবং আগামীতে পুরোপুরিভাবে হবে। জাতির সামনে যে নতুন সূর্য ও সুখকর সমৃদ্ধি হাতছানি দিচ্ছে তা কিন্তু আগামীর ঐক্যের কল্যানেই হবে এবং ঐক্যবদ্ধভাবেই ভোগ করে ইতিহাসের নতুন অধ্যায় সৃষ্টি করবে।
মানুষ এবং রাজনৈতিক দল কিন্তু এক নয় বরং দল এবং মানুষ তাদের কর্মের সমৃদ্ধির জন্য একসূত্রে গেঁথে প্রোথিত হতেই সৃষ্টি হল দল। আর এই দল কিন্তু শুধু রাজনীতিতেই নয় বরং সকল ক্ষেত্রে। পরিবারে, সমাজে, রাষ্ট্রে, ধর্মে ও বংশক্রমানুপাতিক গোত্রে। এই দলগুলি যদি ভেঙ্গেগিয়ে একত্রিত হয়ে আগামীর ঐক্যে যুক্ত হতে পারে তাহলে সৃষ্টি এবং সৃষ্টির স্বার্থকতা মানুবচক্ষু চাক্ষুষভাবে প্রত্যক্ষ্য করবে। বিশাল এই দেশে ও জনগোষ্টিতে আমরা এক ও অভিন্য পথে ঐক্যের সন্ধানে এগিয়ে যাব আগামীর সুনিশ্চিত কল্যাণের তরে। তবে এখনই সকল বিভেদ ভুলে আগামীর পথে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যেতে কাজ শুরু করতে হবে। তাই জনগণের চাহিদা ও যুগের চাহিদায় রাষ্ট্রের ইচ্ছায় ঐক্য সৃষ্টি প্রথম ও প্রধানতম কাজ। আর এই কাজের জন্য বর্তমানের অগ্রজরাই যথেষ্ট। তবে তাদের সঙ্গে জনগণকে এগিয়ে যেতে হবে আর শক্তি সঞ্চয়ে কাজ করতে হবে। তাই আমাদের প্রত্যাশা বর্তমান হালচাল নতুন মোড়ে নতুন আঙ্গিকে এগিয়ে যাক ও যাবে।