প্রশান্তি ডেক্স॥ নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীনের নারী কেলেংকারির একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাঁস হয়েছে। এর পরপরই ভিডিওটি ভাইরাল হয়। সিসি ক্যামেরায় ধারণকৃত চৌদ্দ মিনিটের ওই ভিডিওতে দেখা যায় তারই অফিসের এক নারী পিওনের সাথে অনৈতিক কর্মকন্ড করছেন তিনি। ভিডিওটি ফাঁস হওয়ার পর থেকে ছুটি নিয়ে পালিয়েছেন সহকারি উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন। সিটি টিভির ফুটেজে দেখা যায়, গত ৮ অক্টোবর সহকারি উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন রুমে বসে অফিসের নারী পিওনের সাথে কথা বলছেন। এক পর্যায়ে চেয়ার থেকে উঠে গিয়ে তার শরীরের স্পর্শকাতর বিভিন্ন স্থানে জোর করে হাত দিচ্ছেন। ওই নারী কর্মী টেনে তার হাত বের করে দেন। পরে নারী কর্মী বাইরে চলে যান। চার মিনিট পর আবার ওই নারী কর্মীকে বেড রুমে নিয়ে আসেন। আসার পর চেয়ারে বসে কিছুক্ষণ কথাবার্তা বলেন। পরে ওই নারী কর্মী আবার রুম থেকে বের হয়ে যান। তার দুই মিনিট পর জয়নাল আবেদীনও রুম থেকে বের হয়ে যান। দুই-তিন মিনিট পর আবার জয়নাল আবেদীন ও ওই নারী কর্মী রুমে প্রবেশ করেন। এর পর দেখাযায় জয়নাল আবেদীন চেয়ারে বসে ওই নারী কর্মীকে হাত ধরে টেনে এনে তার কোলে বসিয়ে স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিচ্ছেন। প্রায় ১৪ মিনিটের সিসিটিভি ফুটেজে উঠেছে সহকারি উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তার এ সব অনৈতিক কর্মকন্ড। অভিযুক্ত জয়নাল আবেদীনের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা হলে তিনি জানান, আমি ভুল করেছি। শয়তানের প্ররোচনায় আমি ভুল করেছি। আমি এ ঘটনার জন্য ক্ষমা প্রার্থী। এ ব্যাপারে নারী অফিস পিওন জানান, জয়নাল সাহেব আমার উর্ধতন অফিসার। সে আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে অনৈতিক কাজ করেছে। চাকরির ভয়ে আমি চুপ ছিলাম। এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) শুক্লা সরকার জানান, তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়ে জেলা কৃষি কর্মকর্তাকে বিষয়টি লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে। এরই মধ্যে তাকে অন্যত্র বদিল করা হয়েছে। বন্দর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তাহমিনা বেগম জানান, আমি সিসি টিভি ফুটেজ দেখেছি। বিষয়টি নিয়ে উপজেল নিবার্হী কর্মকর্তার সাথে কথা বলেছি। তার নির্দেশে অনৈতিক কর্মকান্ডের বিষয়টি জেলা কৃষি কর্মকর্তাকে অবহিত করে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। জেলা কৃষি কর্মকর্তা কাজী হাবিবুর রহমান জানান, এরই মধ্যে জয়নালকে বন্দর উপজেলা থেকে বদলি করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উর্ধতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। যৌন হয়রানির শিকার ওই নারী চাইলে ফৌজদারি মামলা করতে পারেন। বন্দর উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ বলেন, সরকারি চাকরিজীবিদের নৈতিক স্খলন কোনভাবে মেনে নেয়া যায়না। তার অফিসের নারী পিওন তার কাছে নিরাপদ নয়। তিনি এই কর্মকর্তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা এক কর্মকর্তা বলেন, নিজ অফিসে অনৈতিক কর্মকান্ডের কারণে জামালপুরের ডিসির শাস্তি— হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসের জয়নাল শুধু বদলি নয়। তার দৃষ্টান্তুমূলক শাস্তির প্রয়োজন যাতে ভবিষৎতে কোন নারী সহকর্মীর উপর কেউ এ ধরনের কাজ করতে সাহস না পায়। বিষয়টি তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তিনি।
Share on Facebook
Follow on Facebook
Add to Google+
Connect on Linked in
Subscribe by Email
Print This Post