মুজীব জন্ম শতবর্ষে মুজীবিয় শুভেচ্ছা

আসছে আগামী ১৭ মার্চ বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বপ্রথম রাষ্ট্রীয়ভাবে পালিত হওয়া জন্মশতবর্ষ অনুষ্ঠান। আসলে এই অনুষ্ঠান পালনই যথেষ্ট নয় বরং জন্ম-জন্মান্তরে মুজীবিয় আদর্শকে ধারণ ও লালন করে এগিয়ে যাওয়ায় হবে জাতির জন্য ঐক্যবদ্ধ ওয়াদার ফসলের এক নতুন দিগন্ত। জাতি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে স্মরণকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী, বিশ্ববন্ধু খ্যাত অনন্তকালের কবি ও নব জাগরণের অগ্রদুত এমনকি অধিকার আদায়ের জীবন্ত কিংবদন্তী; মহানায়ক; যার আভির্ভাব না হলে এই সোনার বাংলার জন্মই হতো না সেই জগদ্বীখ্যাত মহামানব যিনি নিজের জীবন দিয়ে এই বাংলাকে অক্ষুন্ন রেখে গেছেন এবং আগামীর জন্য আগলে রেখেছেন নতূন এক দীগন্ত উন্মোচনের জন্য সেই বিশ্বব্রাহ্মান্ডজয়ী জুলীয়কুড়ী উপাদীসহ বাংলার মানুষের প্রাণের স্পন্দন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজীবের সর্বগুণে গুনান্বিত হওয়াই এখন আমাদের জন্য রয়েছে অবশিষ্ট। তাই অবশিষ্টাংশে দল, মত নির্বিশেষে একাগ্রতা নিয়ে এগিয়ে যাব এটাই হউক আগামীর সার্বজনীন আগমণী বার্তা।
সার্বজনীন এই মানুষটির বহুজ্ঞানের বহুধা অর্জনগুলিকে একত্রিত করে আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধ ও অভিন্ন প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে বাস্তবায়ন করে দেশ ও দেশের মানুষের সার্বিক কল্যাণ সাধন নিশ্চিত করব এই হউক শতবর্ষ উদযাপন দিবসের প্রত্যয়। স্বাধীনতা যুদ্ধে যিনি কবরের পাশে শুয়ে বন্ধী হিসেবে মৃত্যুভয়কে পরোয়া না করে বরং অকোতভয় থেকে দেশের তরে ও দেশের মানুষের উপর অগাধ বিশ্বাস ও ভালবাসা জাগ্রত রেখে দেশ স্বাধীনের প্রখর গুনেছেন। তবে সেই অকোতভয়তা তিনি দেখিয়েছেন ৭৫এর ১৫আগাষ্টের কালরাত্রীর ছোবলে প্রাণ বিসর্জনের পূর্বমুহত্ব পর্যন্ত। বরং পরাজিত হয়েছে ঘাতকরা; পরাজিত হয়েছে পাকিস্তানী পরাজিত শক্তি এবং বিশ্ব চক্রান্তকারীর দল। বঙ্গবন্ধু হারিয়েছে তার নিজ প্রাণ এবং সন্তান, স্ত্রী, আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহীদের আর আমরা হারিয়েছি আমাদের প্রীয় নেতাকে ও তার প্রীয়জনদেরকে। তবে হারাইনি বঙ্গবন্ধুসূলভ মনোভল এবং দৃঢ়চেতা চেতনা। সেই চেতনার জাগ্রত রূপই এখন আমাদেরকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে আগামীর সর্বোচ্চ শিখরে। শত বাধা-বিপত্তিকে উপেক্ষা করে, প্রতিকূলতাকে পাশ কাটিয়ে এবং নেতিবাচকতাকে ইতিবাচকতায় পরিণত করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করতে পেরেছি এবং রায় কার্যকর করেছি এবং এখনও যে কয়টি বিভিন্ন কারণে বিলম্বিত হচ্ছে অচিরেই এর বাস্তব রূপ দৃশ্যমান হবে। বুদ্ধিজীবি হত্যারও বিচার হয়েছে এবং রায় কার্যকর হচ্ছে, যুদ্ধাপরাধিদের বিচার হয়েছে এবং রায় কার্যকর হয়েছে। তাই আক্ষেপের নেই কিছু বরং বিচারহীনতার রাজনীতির নিতি বিতারিত হয়েছে এবং আগামীর জন্য শুভ নির্ভেজাল প্রতিবন্ধকতাবিহীন জীবন উপভোগের ব্যবস্থায় গতিশীলতা আনয়নে কাজ চলছে।
এই শতজন্মবার্ষিকীতে চিহ্নিত হউক বঙ্গবন্ধু সকল গুণবলীগুলি আর যেগুলো বিকশিত হওয়ার আগেই আমাদের মাঝ থেকে বঙ্গবন্ধুকে কেড়ে নেয়া হয়েছিল সেইগুলিও লিপিবদ্ধ করা হউক। সকল গুনাবলীর বলয়ে তৈরী হউক আগামীর কর্মপরিকল্পনা যাতে করে জাতি আরো অনেক দূর এগিয়ে যেতে দ্রুত সময় কাজ লাগাতে পারে। বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্রী বঙ্গতনয়া শেখ হাসিনাকে নতুন ফ্রেমে আবিস্কার করুন। শেখ হাসিনাকে বঙ্গবন্ধুর ন্যায় লিপিবদ্ধ করুন। যাতে আগামীতে আমরা শেখ হাসিনাকে নিয়েও এগিয়ে যেতে পারি যাতে করে এই দ্রুত লয়ের উন্নতি আরো গতিশীলতা লাভ করতে পারে। শেখ হাসিনার দৃষ্টান্ত শিক্ষায় কাজে লাগানো আমাদের উচিত। পাশ্চাত্য শিক্ষা ব্যবস্তায় এখন মডেল হিসেবে যুক্ত হয়েছে আমাদের শেখ হাসিনা তবে আমাদের দেশে কেন নয়? দেশ এগুতে হলে এবং জাতি সঠিক অবস্থান ও ইতিহাস জানতে হলে এখই শিক্ষায় জাগ্রত হাসিনা উপস্থিত থাকতে হবে। নতুবা পাশ্চাত্যের তুলনায় আমরা পিছিয়ে পড়বো।
করোনা ভাইরাই আতঙ্ক সর্বত্রই। তবে আমরা বাঙ্গালী এবং বঙ্গবন্ধুর উত্তরসূরী তাই কোন ভাইরাসের কাছে মাথা নোয়াবার জাতি আমরা নয়। অনেক চড়াই উৎরাই পাড় হয়েই আজ এই বর্তমানে। তবে করোনার ভয়াবহতা থেকেও আরো কঠিন বাস্তবতায় মুখোমুখি হয়েই বাঙ্গালী মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। তাই করোনায় ভয়ের বা আতংকের কিছু নেই। তবে সচেতনতা এবং সাবধনতা অবলম্বন করলে হয়তো কষ্ট লাঘব হবে এমনকি সময় ও অর্থ উভয়ই সাশ্রয় হবে। তাই সচেতনতা এবং সাবধানতা অবলম্বনে সক্রিয় হওয়া আমাদের প্রত্যেকেরই কর্তব্য। বাংলাদেশ করোনা জয়েও সাফল্য ধরে রাখবে এটাই আমার আগাম বিশ্বাস। এযাবৎ যারা আক্রান্ত হিসেবে চিকিৎসাধিন রয়েছেন তারা সবাই এখন সুস্থ্য তাই আগামীতেও আক্রান্ত পাওয়া গেলে সুস্থ্য করে বারি পৌছে দেয়া হবে। আল্লাহ কোনভাবেই তাঁর সৃষ্টিকে কষ্ট দিতে চায় না; তবে তাঁর সৃষ্টি নিজেই নিজের সৃষ্ট কষ্টে হাতড়ে বেড়ায় আর তখন আল্লাহর জ্ঞান এবং ভালবাসা ও ক্ষমা সুরক্ষা দিয়ে নিরাপত্তা ও নিশ্চয়তা উপভোগে সহায়তা করে। তাই খোদার দেয়া জ্ঞানকে মানব কল্যাণে, ইতিবাচক দৃষ্টিতে সেবার মনোভাব নিয়ে ব্যবহার করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। তবেই প্রকৃত সুখ ও সমৃদ্ধি এবং আগামীর নিশ্চয়তা এবং নির্ভয়তা দৃশ্যমান থাকবে। সকল ধ্বংসযঞ্জ ও ধ্বংসকারীর হাতকে নিশ্চিত করে দিয়ে খোদার শেষ কার্যটুকু সম্পাদন করবেন অচিরেই। পৃথিবী এখন সেইদিকেই এগুচ্ছে।
মুজিব বর্ষের বড় অনুষ্ঠানের স্থলে ছোট অনুষ্ঠান করে জাতিকে রক্ষা করতে এমনকি জাতিকে উজ্জ্বিবীত রাখতে নেয়া পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানাই। প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শীতা আজ প্রত্যক্ষ প্রতিটি পড়তে পড়তে এবং প্রয়োজনীয় দৃষ্টান্তে। করোনায় যেন আমাদের মহব্বত ও ভালোভাসা বিদুরিত না হয়। মহব্বত ও ভালবাসা যেন আরো বৃদ্ধি পায় সেই প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। কারণ করোনার ভয়ে মহব্বত ও ভালোবার বিরুদ্ধে দাঁড়ানো যাবে না। কারণ ক্ষমা ও মহব্বত এবং ভালবাসার উপরই দাঁড়িয়ে আছে সৃষ্টিকর্তার আর্শিবাদস্বরূপ সকল নবীদের কিতাব। তাই কোন ক্রমেই মহব্বত ও ভালবাসার বাইরে গিয়ে ধ্বংসের লীলায় মত্ত্ব হওয়া যাবে না। বঙ্গবন্ধুৃর ক্ষমা ও ভালবাসাও কিন্তু সেই নবী রাসুলদের কিতাবেরই। বঙ্গবন্ধু ধর্মপ্রাণ এবং মুসলমান ছিলেন আর তিনি সকল নবী-রাসুলদের কিতাব পড়তেন এবং সেই অনুযায়ী চলতেন। তাই তিনি সেবাকে গ্রহণ করে সেবকের ভূমিকায় অবর্তীর্ণ হয়েছিলেন। যা তাঁর জীবনের শৈশবকাল থেকে মৃত্যু পর্যন্ত একশতভাগ প্রমান দিয়ে প্রমানিত করে গেছেন। তাই এই মুজিব শত বর্ষে আমাদের অঙ্গিকার হউক বঙ্গবন্ধুর দেখানো ও শেখানো পথে এগিয়ে যাওয়া।
উন্নয়নের যে গতীময়তা এবং জ্যোতি তা কিন্তু একদিনে হয়নি বরং হয়েছে বহুদিনে। আর এর সুতিকাঘর রচনা করেছিলেন বঙ্গবন্ধু এবং সেই সুতিকাঘার থেকে বয়োবৃদ্ধিতে এবং পরিণতির চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে দিয়েছেন এবং এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন আমাদের মানবতার মা খ্যাত শেখ হাসিনা। তাই অতিতকে ভুললে চলবে না বরং অতিতকে অনুসরণ করেই এমনকি অতিত থেকে শিক্ষা নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে। যেখান থেকে সমাপ্তির পথ তৈরী হয়েছিল বা মনোবল ভেঙ্গে গিয়েছিল ঠিক সেখান থেকে শুরুটা করতে হবে; হাল ছেড়ে দেয়া চলবে না বড়ং লক্ষ্য স্থির রেখে লেগে থাকতে হবে তবেই সাফল্য আসবে। চিন্তা ও কাজের সমন্বয় সাধন করতে হবে নতুবা ফলশুণ্যতা বিরাজ করবে। তাই চোখ কান খোলা রেখে কাজ করতে হবে। এই সময়ে আগুনের ত্রাস বা ধ্বংসযঞ্জ মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকুন। সকল বিপর্জয় মোকাবিলায় ধৈয্যসহকারে অগ্রসর হউন। আমরা বিশ্বাস করি খোদা তায়ালা তাঁর আশ্চর্যকাজ সম্পাদন করবেন। মানুষ যা চিন্তাও করতে পারে না তার চেয়েও অধিক আসন্ন। হতাশায় নয় বরং অগ্রসর হউন পূর্ণতাই। মানবিক গুণগুলিকে জাগ্রত করুন; বিবেক প্রসন্ন করুন, আগামীর ভাবনায় ইতিবাচকতা নিয়ে অগ্রসর হউন। নেতিবাচকতা বা অপ্রয়োজনীয় সমালোচনা নিয়ন্ত্রণ করুন। জাতির সামনে যে সৌভাগ্য উকি দিচ্ছে তা স্থায়ী করুন। সকলকে নিরন্তর শুভেচ্ছা ও শুভকামনা এই মুজিব শতবর্ষের তরে। এগিয়ে যাচ্ছে এবং এগিয়ে যাবে তবে সামগ্রীক কল্যাণের তরে সকলকে নিয়ে অগ্রসর হতে সকল বাধাকে এই মুজিবীয় ভালবাসায় বিদুরীত করতে হবে আর তাতেই মুজিব বর্ষের সফলতা পৌঁছে যাবে বাংলার প্রতিটি ঘরে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.