প্রশান্তি ডেক্স ॥ বিশ্বজুড়েগ থাবা বসিয়েছে মারণ ভাইরাস করোনা। দেশেও ক্রমে বেয়েই চলেছে আক্রান্তের সংখ্যা। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বায়েছে মৃত্যুও । গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতে্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ জনে। মোট আক্রান্ত হয়েছে ১৬৪ জন। উদ্ভূত এই পরিস্থিতিতে অসহায় জনগণের পাশে থাকতে জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কিন্তু এই নির্দেশ অমান্য করে উধাও হয়ে গেছেন লক্ষ্মীপুরের অধিকাংশ জনপ্রতিনিধি। এর মধ্যে রয়েছেন সংসদ সদস্য, পৌরসভার মেয়র, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিরা না যায়, আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ অমান্য করে অনেক জনপ্রতিনিধি জনগণের সহযোগিতায় এগিয়ে না এসে গাঢাকা দিয়েছেন। লক্ষ্মীপুরসহ সারাদেশে স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে সেই প্রতিনিধিদের তথ্য সংগ্রহ করছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একটি সংস্থা। এদিকে ৩১ মার্চ সরকারের শীর্ষস্থানীয় একটি গোয়েন্দা সংস্থা লক্ষ্মীপুরে এ দুর্যোগে জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকা মাঠ পর্যায় থেকে নিরূপণ করেছে। ইতিমধ্যে তারা সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেছে। একই সঙ্গে জনগণকে সহযোগিতা না করে উধাও হয়ে যাওয়া জনপ্রতিনিধিদের তালিকাও করছে। সম্প্রতি কয়েকটি গণমাধ্যমে করোনা সংকটে লক্ষ্মীপুরে অধিকাংশ জনপ্রতিনিধিদের না পাওয়ার সংবাদ প্রকাশিত হয়। তাতে অনেকেই শুধু চেহারা দেখানোর জন ফেসবুকে নিজেকে জানান দিচ্ছেন বলে লোকজন বলাবলি করছে। আবার অনেকেই গাছাড়া মনোভাব নিয়ে আছেন। কিন্তু তাদের কাউকেই করোনা রোধে সচেতনতা সৃষ্টি, প্রচার-প্রচারণা বৃদ্ধি ও খাদ্য সহায়তায় কোনও ভূমিকা নিতে দেখা যায়নি। এদিকে অনেক জনপ্রতিনিধি সরকারি খাদ্যসহায়তা জনগণকে দিয়ে নিজের নামে চালিয়ে দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। অন্যদিকে লক্ষ্মীপুরের চারটি সংসদীয় এলাকায় চারজন সংসদ সদস্য থাকলেও তারা এ সংকটময় সময়ে এলাকাছাড়া। একবারের জন্যও এমপি এ কে এম শাহজাহান কামাল, আবদুল মান্নান, আনোয়ার হোসেন খান ও মোহাম্মদ শহিদ ইসলাম পাপুল এলাকায় আসেননি। তবে এর বিপরীতে কেউ কেউ সহায়তা নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে। এর মধ্যে লক্ষ্মীপুরে শাহজাহান কামাল এমপির প্রতিনিধি বায়েজীদ ভূঁইয়া প্রায় দুই হাজার শ্রমজীবীর বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাদ্য পৌঁছে দিয়েছেন। রামগঞ্জে এমপি আনোয়ার হোসেন খানের লোকজন অসহায় ১৫ হাজার মানুষের মাঝে খাদ্যসহায়তা দেওয়া শুরু করেছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে নেতাকর্মীরা খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন। লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান সদর, রায়পুর ও রামগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় পরিষদের সদস্যদের নিয়ে কর্মহীন মানুষের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছেন। চেয়ারম্যান ও কয়েকজন সদস্য এক মাসের সম্মানী ত্রাণ সহায়তার জন্য তহবিলে জমা দিয়েছেন। অন্যদিকে জেলার ৫৮টি ইউনিয়নের মধ্যে ১৮ জন ইউপি চেয়ারম্যান করোনা সচেতনতায় শুরু থেকে সক্রিয়ভাবে মাঠে কাজ করছেন। তবে এ ব্যাপারে অন্যদের কোনও কার্যক্রম নেই বললেই চলে। তিনটি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, চারটি পৌরসভার মেয়র, কাউন্সিলরদের অধিকাংশ গাছাড়া ভাব নিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এদের মধ্যে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মেয়র আবু তাহের, সদরের উপজেলা চেয়ারম্যান এ কে এম সালাহ উদ্দিন টিপু, কমলনগর উপজেলা চেয়ারম্যান মেজবাহ উদ্দিন আহম্মেদ বাপ্পি ও রায়পুরের ভাইস চেয়ারম্যান এ বি এম মারুফ বিন জাকারিয়া করোনা সচেতনতায় প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। রায়পুরে ১০ জনসহ রামগঞ্জ, সদর, রামগতি ও কমলনগরের মোট ৪০ জন ইউপি চেয়ারম্যানের ভূমিকা রহস্যজনক। নিয়ম রক্ষার কাজ করে দায় সারছেন তারা।