করোনা ভীতিতে বিশ্ব যখন কাতরাচ্ছে আর তখন বাংলাদেশ করোনাকে পরোয়া না করে করোনা সরবরাহে ব্যস্ত। করোনার বীজ বপনে বা করোনার বংশবৃদ্ধিতে সহায়তা করে যাচ্ছে। কিভাবে:- সরকারের দেয়া আদেশ ও নির্দেশ অমান্য করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা পুরোপুরি না মেনে। আংশিক মেনে আর আংশিক না মেনে করোনাকে প্রসারিত বা সম্প্রসারিত হতে নিরবে বা অজ্ঞানে সহায়তা করে যাচ্ছে।
আমার মতে করোনা ভীতির চেয়ে করোনা সচেতনতাই এখন সর্বাজ্ঞে প্রয়োজন। প্রত্যেকটি মানুষ এখন যদি করোনা সচেতনতা বৃদ্ধি করে চিন্তা এবং কাজের সমন্বয়ের মাধ্যমে স্ব স্ব জীবনে প্রয়োগ করা হয় তাইলেই করোনা বিতারণ সম্ভবে পরিণত হবে। যত বেশী চর্চা করা যাবে ততই দ্রæত করোনামুক্ত হবে দেশ।
সচেতনতার আরেকটি দিক হলো গুজবে কান না দেয়া; সরকার এবং আন্তর্জাতিক মিডিয়ার সংবাদ শুনে বিশ্লেষণ করে পদক্ষেপ নেয়া। বিশ্ব আক্রান্তের সংখ্যা এবং মৃতের সংখ্যা তুলনা করে বিবেচনায় এনে এর ভয়াবহতা নিরূপন করা। মহামারি হিসেবে রূপদান করার আগে বরং ছোয়াচে হিসেবে রূপদান করাই উত্তম। তবে এই ছোয়াছে রোগকে নির্মূল করার জন্য যে সকল নিয়ম কানুন সরকার এবং বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা আমাদের (জনগনের) উদ্দ্যেশ্যে আইন বা আদেশ এমনকি নিষেধাজ্ঞা হিসেবে জারি করেছে তা হুবুহু পালন করে যেতে হবে। হোম কোয়ারেন্টাই বা স্ব স্ব অবস্থানে গৃহবন্ধি থেকে এই করোনাকে বিতারণের কাজে সহায়তা করে যেতে হবে। কোন ভাবেই একস্থান থেকে অন্যস্থানে যাওয়া যাবে না এমনকি প্রয়োজনে গেলেও ১৪দিন নজরবন্দি বা গৃহবন্দী থেকে (যাকে হোম কোয়ারেন্টাইন বলে) নিজেকে এবং অন্যকে সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রকৃত অবস্থার প্রকাশ করতে হবে; কোন কিছুই গোপন করা যাবে না।
আমাদের দেশে এবং বিশ্নে অনেক মহামারির আভির্ভাব হয়েছিল বা ভবিষ্যতেও হবে কিন্তু সেই তুলনায় এই করোণা কিন্তু এত শক্তিশালী নয় বরং এর বিস্তৃতি ব্যাপক ও দুর্বলের উপর আক্রমনের তীব্রতাও ব্যাপক। তাই বিস্তৃতির লাগাম টেনে ধরতে এবং দুর্বলকে রক্ষা করতে যে সকল পদক্ষেপ জনগনের উপর জারি করা হয়েছে তা পালনে সচেতনতা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে। তাই আসুন নিজে সচেতন হই এবং অন্যকে সচেতন করি। আর স্ব স্ব অবস্থান থেকে নিজের ভুমিকাটুকু পালন করে অন্যকে উৎসাহিত করি।
করোনা ভীতি নয় বরং করোনা সচেতনতাই এখন জরুরী। সরকার, প্রশাসন, ডাক্তার এবং সাধারণ জনগণের সম্মিলিত প্রয়াসেই করোনা বিতারিত হবে। কারো একক প্রচেষ্টার মাধ্যমে করোনাকে বিতারন করা সম্ভব নয়। তাই সকলের সম্পৃক্ত হওয়ায় গুরুত্বারূপ করতে হবে। এই লক্ষ্যে নেয়া পদক্ষেপগুলো যথোপযুক্তভাবে পালনে সকলের ভুমিকা নি:শর্ত এবং নি:স্বার্থভাবে কার্যকর করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। সৃষ্টিকর্তা আমাদেরকে ভালবাসেন এবং তিনি চান না তাঁর সৃষ্টি কষ্টে থাকুক; তাই খোদা প্রদত্ত জ্ঞান ব্যবহার করে আমরা করোনাভীতি দূরভীত করবো। আসুন খোদার কালামেও সচেতন হই এবং ব্যবহারে মনোযোগী হই।
এখানে আমি আল্লাহর কালাম থেকে কিছু উদৃত্তি দিয়ে করোনামুক্ত বিশ্ব গড়তে সাহসে, সম্পদে, জ্ঞানে, ক্ষমা এবং ভালবাসায় পূর্ণ হয়ে এগিয়ে যাওয়ার আশা ব্যক্ত করছি। আজ থেকে প্রায় ২৫০০ বছর আগে ইসাইয়া নবীর মাধ্যমে আমাদের জন্য বলা কথাগুলি হলো ”আল্লাহ মালিক, ইসরাইলের আল্লাহ্ পাক এই কথা বলছেন, ““তওবা করে শান্ত হলে তোমরা উদ্ধার পাবে, আর স্থির হয়ে ঈমান আনলে শক্তি পাবে।” কিন্তু তোমরা তাতে রাজী হলে না। তোমরা বললে, ’না, আমরা ঘোড়াই চড়ে পালিয়ে যাব।’ কাজেই তোমাদের পালাতে হবে। তোমরা বললে, ’যে ঘোড়া খুব বেগে যায় তাতে চড়ে আমরা চলে যাব।’ কাজেই যারা তোমাদের তাড়া করবে তারা বেগেই আসবে। একজনের ভয়ে, তোমাদের হাজার জন পালাবে; আর পাঁচজনের ভয়ে তোমরা সবাই পালিয়ে যাবে; তাতে তোমাদের সৈন্যদলে পাহাড়ের উপরকার নিশানের খুঁটি ছাড়া আর কিছুই থাকবে না। তবুও মাবুদ তোমাদের রহমত দান করবার জন্য অপেক্ষা করছেন; তোমাদের মমতা করবার জন্য তিনি প্রস্তুত হয়ে আছেন। মাবুদ ন্যায় বিচারের আল্লাহ; মোবারক তারা, যারা তাঁর জন্য অপেক্ষা করে।”
আসুন আমরা মাবুদের জন্য অপেক্ষা করি এবং তাঁর আশ্চয্য ক্ষমতার মহিমায় এই বিশ্ববিপর্যয় থেকে বের হয়ে আসি। আসুন আমরা কবুতরের মত সরল হই এবং সাপের মত চালাক বা সতর্ক হয়ে পথ চলি। নিজেরা কিছু একটা করে ফেলতে বা অন্যের উপর নির্ভরশী হতে চেষ্টা না করি বরং মাবুদের উপর ভরসা করে অপেক্ষা করি। ভয়কে জয় করি খোদায়ী জ্ঞানে। আর সেই নিশ্চয়তা জন্য জবুর শরীফে উল্লেখিত দায়ূদের সেই কাউয়ালী পাঠ করি।
“আমি সেই পাহাড়ের সারির দিকে চোখ তুলে তাকাব;
কোথা থেকে আমার সাহায্য আসবে?
আসমান ও জমীনের সৃষ্টিকর্তা মাবুদের কাছ থেকেই
আমার সাহায্য আসবে।
তিনি তোমার পা পিছলে যেতে দেবেন না;
যিনি তোমাকে পাহারা দেন তিনি ঘুমে ঢুলে পড়বেন না।
যিনি বনি-ইসরাইলদের পাহারা দেন
তিনি তো ঘুমে ঢুলে পড়েন না, ঘুমানও না।
মাবুদই তোমার রক্ষাকারী;
মাবুদই তোমার ছায়া, তিনি তোমার ডান পাশে রয়েছেন।
দিনের বেলা সূর্য আর রাতের বেলায় চাঁদ
তোমার ক্ষতি করবে না।
সমস্ত বিপদ থেকে মাবুদই তোমাকে রক্ষা করবেন,
তিনি তোমার প্রাণ রক্ষা করবেন।
তোমার প্রতিদিনের জীবনে মাবুদই তোমাকে পাহারা দেবেন,
এখন থেকে চিরকাল দেবেন।
অমিন\