ছাতকে ৩ তরুণের সাম্মাম ও রক মেলন চাষে সফলতা

প্রশান্তি ডেক্স ॥ সুনামগঞ্জের ছাতকে চাষ হচ্ছে সৌদি আরবসহ মরু দেশগুলোর বেশ জনপ্রিয় ফল সাম্মাম ও রক মেলন। দেশীয় বাঙ্গির মতো দেখতে সাম্মাম সাধারণত দুই ধরনের হয়- একটির আছে হলুদ মসৃণ খোসা আর অন্যটির খোসার অংশ খসখসে। মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসীদের মাধ্যমে পরিচিত ফলটি ছাতক উপজেলার কালারুকা ইউনিয়নের কালারুকা গ্রামের সৌখিন চাষি রিয়াজ উদ্দিন, চানপুর গ্রামের বুরহান উদ্দিন ও রাজাপুর গ্রামের এনাম চাষ করেছেন। চার বিঘা জমিতে গত ২০ ফেব্রুয়ারি তারা এ চাষ শুরু করেন। এরই মধ্যে ভালো ফলও পেতে শুরু করেছেন। পাইকারি বিক্রির পাশাপাশি তারা এ ফল স্থানীয় খুচরা বাজারেও বিক্রি করার পরিকল্পনা করছেন। বুরহান উদ্দিন বলেন, উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিয়ে ছোট পরিসরে পরীক্ষামূলকভাবে চাষ শুরু করেছেন। তবে আগামীতে বড় পরিসরে চাষ করার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। তিনি আরও জানান, সাম্মাম চাষাবাদে বিঘা প্রতি তাদের খরচ হয়েছে প্রায় ৭০ হাজার টাকা। এ ফলের বর্তমান পাইকারি বাজার ধর কেজি প্রতি ৬০ টাকা। সাম্মামের পাশাপাশি রক মেলন নামে আরও একটি বিদেশি ফল চাষাবাদ করেছেন তারা। রক মেলন চাষরে জন্য মাচা তৈরি করা জরুরি। মাটি থেকে আনুমানিক ৫ ফুট উঁচুতে মাচা তৈরি করতে হয়। রক মেলন আবাদে রোদও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরীক্ষামূলকভাবে আবাদে রক মেলন গাছে ফলন দেখে তারা অনেক আশাবাদী বলে জানান বুরহান উদ্দিন। তাদের এ কর্মকান্ত দেখে এলাকার অনেক সৌখিন চাষিও নতুন জাতের ফল উৎপাদনের দিকে ঝুঁকছেন। এনাম বলেন, ‘রাজাপুর এলাকায় চার বিঘা জমিতে সাম্মাম ও রক মেলন জাতের ফল আমরা চাষ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে। নতুন জাতের ফল চাষাবাদ দেখতে প্রতিনিয়ত লোকজন ক্ষেতে যাচ্ছেন।’ রিয়াজ জানান, সাম্মাম ফলের রোগবালাই তেমন নেই বললেই চলে, গাছে খুব সামান্য সার ও কীটনাশক দিতে হয়। আর এ ফল গাছের সঠিক চাষাবাদ এবং নিয়মিত ফুলের পরাগায়ন হলে একেকটি গাছ থেকে বেশ কয়েকটি ফল উৎপাদন করা সম্ভব। তবে ফলের ওজনে লতা ছিঁড়ে পড়ার ভয়ে একটু বড় হওয়ার পরপরই ফলগুলো ব্যাগিং করতে হয়। তিনি আরও বলেন, পাকা সাম্মাম ফলের স্বাদ অত্যন্ত মিষ্টি। ভেতরের রঙ পাকা পেঁপের মতো। হলুদ রঙের এ ফলটি দেখতে ভিন্নরকম এবং খেতেও খুবই মিষ্টি। এ বিষয়ে ছাতক উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মশিউর রহমান বলেন, সাধারণ তরমুজের চেয়ে এর স্বাদ অনেক ভালো, মিষ্টিও বেশি। মালচিং পদ্ধতিতে ইয়েলো কিং ও সাগর কিং জাতের ফল চাষ করা হয়েছে। সাধারণত ৬০ দিনেই এ ফসল বাজারজাত করা যায়। তিনি আরও জানান, এ ফলে ক্যালসিয়াম, লৌহ ও ভিটামিন রয়েছে। শতকরা ৯৫ ভাগ জলীয় অংশ থাকায় এটি মানব দেহের পুষ্টি চাহিদা পূরণ ও শরীর শীতল রাখে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তৌফিক হোসেন খাঁন বলেন, ‘সাম্মাম চাষ এ অঞ্চলে এটাই প্রথম। এটি শতভাগ নিরাপদ ফল। এবার কৃষি বিভাগের নিয়মিত পরামর্শ আর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি ফলন হয়েছে। এতে আগামীতে নতুনরাও আগ্রহী হবেন।’ অরুন চক্রবর্তী, ইউএনবি:

Leave a Reply

Your email address will not be published.