শপিংমল খোলায় করোনা সংক্রমণ নিয়ে যা বললেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রশান্তি ডেক্স ॥ দেশের বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে মার্কেট-দোকান খোলায় করোনা সংক্রমণ কিছুটা বাড়বে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক। গত মঙ্গলবার (০৫ মে) দুপুরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে দেশে করোনাভাইরাসের কমিউনিটি ট্রান্সমিশন এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে উদ্ভূত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গঠিত ১৭ সদস্যের ‘জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটি’র সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা জানান। তিনি বলেন, লকডাউন যেহেতু তুলে দেওয়া হয়েছে, দোকান পাটও হয়তো খুলে যাবে। এ বিষয়ে টেকনিক্যাল কমিটি যে পরামর্শ দেবে সেই পরামর্শগুলো তাদের কাছ থেকে গ্রহণ করে আমরা যথাযথ জায়গায় সেটি পৌঁছে দেবো। তারপর সরকারের যে নির্দেশনা থাকবে সে অনুযায়ী আমরা কাজ করব। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের দেশে করোনায় মৃত্যু অন্যান্য দেশের তুলনায় কিছুটা কম। সংক্রমণ কিছুটা বেড়েছে। স্বাভাবিকভাবে যেহেতু মার্কেট খোলা হয়েছে, গার্মেন্টস খোলা হয়েছে, দোকান পাটে আনাগোনা বাড়ছে কাজেই সংক্রমণ যে একটু বৃদ্ধি পাবে এটা আমরা ধরেই নিতে পারি। আমাদের যতটুকু সম্ভব এটি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় চেষ্টা করবে যাতে রোগী না বাড়ে। জাহিদ মালেক বলেন, আমরা জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির সঙ্গে সভা করলাম, সেখানে তারা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মতামত ও সাজেশন দিয়েছেন। কোনো রোগী যাতে হাসপাতাল থেকে ফিরিয়ে দেওয়া না হয় সে বিষয়টিতে তারা জোর দিয়েছেন। গত দুইমাস আগেও এমন নির্দেশনা আমরা দিয়েছি। নতুন করে আমরা আবারও গুরুত্ব দিয়ে এটি দেখব। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের টেস্টিংয়ের পরিধি অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে বেড়ে ৩৩ টি টেস্টিং ল্যাব হয়েছে, ৬ হাজারের মতো টেস্টিং করতে পারছে। তারা টেস্টিং আরো বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন এবং রিপোর্ট দেওয়ার সময় আরো কমাতে হবে। আমরা এটি গ্রহণ করেছি এবং এ বিষয়ে আরো জোরালো পদক্ষেপ নেবো। তিনি জানান, তারা একটি ফোকাল পয়েন্ট বা সেল গঠনের পরামর্শ দিয়েছেন, যেই সেলে তারা পরামর্শ দেবেন। এবং সেল সে বিষয়ে যেখানে যা ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন নেবে। সেলে মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের কর্মকর্তারা থাকবেন। এছাড়াও অনেক ডাক্তার আক্রান্ত হচ্ছে সেটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখার জন্য বলা হয়েছে। বিশেষ করে পিপিই পড়া এবং খোলার সময় সংক্রমণ হওয়ার সম্ভবনা দেখা দিয়েছে, সেদিকে নজর দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, ঈদের ছুটিতে মানুষের যাওয়া আসার বিষয়ে টেকনিক্যাল কমিটি তাদের একটি মতামত দেবেন। সে বিষয়টি তারা আমাদেরকে জানিয়ে দেবেন। আর বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের যে ক্যাপাসিটি ছিল সেটি আমরা বাড়িয়েছিলাম, তারা আরও বাড়াতে বলেছেন। কারণ সেখানে এখন অনেক মানুষ টেস্ট করতে যাচ্ছে। তাই এ বিষয়ে আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করব। তারা বিভিন্ন মেডিকেলে কর্মচারীর সংখ্যা বাড়াতে বলেছেন। প্রধানমন্ত্রীও এ বিষয় নির্দেশনা দিয়েছেন। চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগের বিষয়ে আমাদের মন্ত্রণালয় পদক্ষেপ নিচ্ছে, অলরেডি এটি প্রসেসে আছে। আশা করি অল্প সময়ের মধ্যে এ কাজটি আমরা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব। বৈঠকে স্বাস্থ্য সচিব আসাদুল ইসলাম, টেকনিক্যাল কমিটির সভাপতি জ্যেষ্ঠ শিশু বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ, সদস্যসচিব রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনাসহ অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.