স্কয়ারের নারী ডাক্তার বললেন, ‘রেপ করে দিলে সব ঠিক হয়ে যাবে’

প্রশান্তি ডেক্স ॥ যৌনাঙ্গের ‘ভিজিনিসমাস’ নামের এক রোগের জন্য ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালের প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শক ডা. কাজী শামসুন নাহারের কাছে যান ২১ বছর বয়সী এক তরুণী। পরীক্ষা করার সময় ডাক্তারের অসতর্কতায় ওই রোগী যৌনাঙ্গের পেশীতে তীব্র ব্যথা ব্যথা পাওয়ার কথা জানালে ডা. কাজী শামসুন নাহার এমন মন্তব্য করেন।

২১ বছর বয়সী ওই তরুণী বলেন, ‘আমি চোখে জল নিয়ে কক্ষটি ছেড়ে বের হয়ে এলাম। এ সময় আমি খুবই আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। আমি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না যে, শুধু এই কথাটি বলার জন্য আমি কাউকে টাকা দিয়েছি। আমি খুবই আঘাত পেয়েছি, ভেঙে পড়েছি এবং নিজেকে অসহায় মনে হয়েছে।’

‘তাকে কিছু না বলে আমি নিজের ওপর রেগে গিয়েছিলাম, কারণ কে জানে যে কত মেয়ে এই মহিলার (ডাক্তার) চেম্বার থেকে ভাঙা মন ও চোখে জল নিয়ে বের হয়ে গেছে, এই ভেবে যে— তাদেরও ধর্ষণ করা দরকার’— ফেসবুকে লিখেছেন ওই তরুণী।

স্কয়ার হাসপাতালের নারী চিকিৎসক ডা. কাজী শামসুন নাহারের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও অশালীন মন্তব্য করার অভিযোগ এনে ওই নারী রোগী ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লিখেছেন, ‘আমি তাকে বলেছিলাম, আমি ব্যথা পাচ্ছি। সহানুভূতি না জানিয়ে বরং যৌনাঙ্গের রোগ নির্ণয় পরীক্ষাকালীন সময় মন্তব্য করেন, ‘আপনাকে ধর্ষণ করা দরকার।’ যা সমস্ত মানুষের জন্য অপমানজনক!’

ভুক্তভোগী ওই রোগী ফেসবুকে লিখেছেন, “তিনি আমাকে বলেছিলেন আমার স্বাস্থ্যের এই বিষয়গুলো নিয়ে কারও সঙ্গে কথা বলা উচিত নয়। তার মানে তিনি যৌনশিক্ষার চূড়ান্ত বিরোধী। তিনি আমাকে এও বলেন, ‘আধুনিকতার নামে এই বিষয়গুলো জানার চেষ্টা করবে না।’ পরীক্ষার সময় আমি ব্যথা পাওয়ার কথা জানাই। একপর্যায়ে তিনি বলেন, ‘এসব মেয়েদের হাজব্যান্ড একটু জংলী টাইপের হওয়া উচিত, যাতে তারা একবারে রেপ করে ফেলে। কারণ এই মেয়েরা পারমিশন দিতে চায় না, যেহেতু ওদের যৌন মিলনের সময় ব্যথা লাগে। সো একবারে রেপ করে দিলে সব ঠিক হয়ে যাবে’।”

এদিকে আত্মপক্ষ সমর্থন করে স্কয়ার হাসপাতালের ফেসবুক পেইজে দেওয়া এক বিবৃতিতে ডা. কাজী শামসুন নাহার বলেন, ‘রোগীর সমস্যার পরিপ্রেক্ষিতে তার সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সঠিক রোগ নির্ণয়ের জন্য এবং রোগীর শারীরিক এবং মানসিক অবস্থা বোঝার জন্য খুবই যুক্তিসঙ্গত এবং প্রাসঙ্গিক কিছু প্রশ্ন করি। শারীরিক অবস্থা বোঝার জন্য (যা রোগ নির্ণয়ের জন্য আবশ্যকীয়) অনুমতিসাপেক্ষে তার মায়ের উপস্থিতিতে শারীরিক পরীক্ষা করা হয়। পরবর্তীতে আমি গত ১২ জুলাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানতে পারি, উক্ত রোগী আমার বিরুদ্ধে পুরোপুরি মনগড়া ও অনৈতিক ব্যাখ্যামূলক অপপ্রচার চালাচ্ছেন, যা কোনওভাবেই কাম্য নয়।’

ভুক্তভোগী ওই তরুণী বলেছেন, ‘আমার মা চেম্বারে আমার সাথে গিয়েছিলেন। তিনি একজন প্রত্যক্ষদর্শী। কিন্তু আমি জানি আমি কোনো বিচার পাবো না। যাই হোক, আমি ঘটনাটি ফেসবুকে পোস্ট করেছি যাতে অন্য কোনও মেয়ে তার (কাজী শামসুন নাহার) কাছ থেকে এই ধরনের মানসিক আঘাতের সম্মুখীন না হয়।’

Leave a Reply

Your email address will not be published.