কসবায় অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলে সালদানদী ও বুড়ি নদীর পানি বৃদ্ধিতে বীজতলা ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢল ও অতিবৃষ্টিতে সালদানদী ও বুড়ি নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তলিয়ে গেছে কয়েকটি ইউনিয়নের ফসল, বীজতলা ও সবজি বাগান। বেড়িয়ে গেছে কয়েকশ পুকুর ও খামারের মাছ। ফসল, বীজ তলা নষ্ট হওয়ায় এবং পুকুরের মাছ বেড়িয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন ওই সমস্ত এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক ও মাছ চাষিরা। সরকারী সহযোগিতায় বীজ না পেলে বীজের অভাবে বন্যা পরবর্তী সময়ে ফসল চাষাবাদে অনিহা দেখাচ্ছে কৃষক। ওই সমস্ত এলাকা একাধিকবার পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ উল আলম। সরেজমিনে দেখা যায়, গত কয়েকদিনের অতিবৃষ্টি ও পাশ্ববর্তী দেশ ভারতের ত্রিপুরা থেকে পাহাড়ী ঢলের পানি নেমে আসায় সীমান্তবর্তী সালদা নদীর পানি বৃদ্ধি পায়। বন্যার কারনে জনমনে দেখা দেয় আতংক। রাস্তা ঘাট ও বাড়িঘরে পানি না উঠলেও এতে তলিয়ে যায় উপজেলার বায়েক, গোপিনাথপুর ও মেহারী

ইউনিয়নের অধিকাংশ জমির ফসল। সবচেয়ে বেশী ক্ষতি হয়েছে বীজতলাগুলোর । অধিকাংশ বীজতলাই পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। স্থানীয় কৃষকদের দাবী অকাল বন্যায় প্রায় শত শত বিঘা জমির ফসল তলিয়ে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা। করোনা মহামারী দুর্যোগে এই বন্যায় কৃষকের এ ক্ষতি যেন মরার ওপর খাঁড়া ঘা। কৃষি অফিসের তথ্যমতে উপজেলায় পানির নীচে তলিয়ে নষ্ট হয়েছে ১০ হেক্টর জমির ফসল এবং বীজ তলা নষ্ট হয়েছে প্রায় ১৫ হেক্টর। কি পরিমান পুকুর তলিয়ে গেছে তার হিসেব নেই উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শারমিন সুলতানার নিকট। তিনি সরেজমিনে যাননি বলেও ক্ষতিগ্রস্থদের অভিযোগ। ক্ষতিগ্রস্থ কয়েকজন কৃষকের সাথে কথা বলে জানা যায়, এই সময়ে যে ধান রোপন করা হয় তার অতিরিক্ত বীজ কোন কৃষকের ঘরেই থাকেনা। যে বীজ ছিলো তা দিয়ে বীজতলা তৈরি করা হয়েছিলো। বীজতলাগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারনে বন্যা পরবর্তী সময়ে নতুন বীজ সংকট দেখা দিলে ধান রোপন করা সম্ভব হবেনা অধিকাংশ কৃষকের। সরকার যদি কৃষি অফিসের মাধ্যমে বিনামূল্যে বীজের ব্যবস্থা করে দেন তাহলে কৃষকগন উপকৃত হবেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজেরা বেগম বলেন, পানিতে তলিয়ে গিয়ে যে পরিমান ফসল নষ্ট হয়েছে তার কিছুটা হলেও পুষিয়ে নেয়া সম্ভব যদি এই পানি দ্রুত কমে যায়। উপজেলার বীজ বিক্রয় কেন্দ্রগুলোকে বলে দেয়া হয়েছে দ্রুত যেন তারা বীজ সংগ্রহ করে কৃষকদের মাঝে সরবরাহ করেন এবং কৃষক যেন ন্যায্যমূল্যে পায়। বীজ কেনা নিয়ে কোনো কৃষক হয়রানীর শিকার হলে তার বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে আইনানূগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ উল আলম বলেন; পাহাড়ী ঢলের পানিতে অকাল বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবধরনের সহযোগিতা করা হবে। বন্যা পরবর্তী সময়েও যে কোনো সমস্যা মোকাবিলায় সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি জানান, মাননীয় আইনমন্ত্রী মহোদয় তাঁর নির্বাচনী এলাকার সব খোঁজ খবর রাখছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.