ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার বিনাউটি ইউনিয়নের নেমতাবাদ গ্রামের সাবেক সেনা সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের ও তার পরিবারের উপর নির্মমভাবে অত্যাচার চালিয়ে তার বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট করেছে প্রতিবেশী ছেলের শ্বশুরবাড়ীর লোকজন। এ ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী মাজেদা বেগম বাদী হয়ে ৭ জনকে আসামী করে কসবা থানায় মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় পুলিশ প্রধান আসামী আলআমিন (৩৫) ও সাফায়েত বাহর (২৩) কে আটক করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে। গতকাল শনিবার সরেজমিনে গিয়ে ও অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, কয়েক বছর আগে মুক্তিযোদ্ধার প্রবাসী ছেলে মিন্টু মিয়ার সাথে পাশ্ববর্তী মৃত নুরুল ইসলাম বাহরের মেয়ে সেলিনার বিবাহ হয়। এই বিবাহ হওয়ার পর থেকে চুন থেকে পান খসলেই পুত্রবধূ সেলিনা তার বাপের বাড়ির লোকজন ও ভাইদের ডেকে এনে তার শ্বশুর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়েরের পরিবারের উপর নির্যাতন শুরু করে। গত কয়েকদিন আগেও ঠিক এভাবেই কথা কাটাকাটির জেরে পুত্রবধু সেলিনার বাপের বাড়ীর লোকজন দলবেধে এসে মুক্তিযোদ্ধার বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। এসময় নগদ অর্থ সহ স্বর্ণালংকার নিয়ে যায় ও প্রায় আড়াই লক্ষ টাকার ক্ষতিসাধন করে। বেদড়রক মারধোর করে
মুক্তিযোদ্ধা ও তার বিবাহীত মেয়ে রুমা (৩০) সহ পরিবারের সকলকে। এতে গুরুতর রক্তাক্ত জখমপ্রাপ্ত হয় মুক্তিযোদ্ধাসহ তাঁর মেয়ে ও স্ত্রী। স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে রুমার মাথায় আঘাতের কারনে সে চোখে কম দেখতে পায়। অসহায় মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের সাংবাদিকদের বলেন; মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি শান্তিতে বসবাস করবো এ স্বপ্ন নিয়ে। আমার বাড়ির চারপাশে দেশবিরোধী জামাত চক্রের অবস্থান। যুদ্ধের সময়ও তাদের লোকজন মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়িঘরে আগুন দিতো। এখন তারা আমার পরিবারের পিছনে লেগেছে। বিগত কয়েক বছর যাবত আমাদের অত্যচারসহ মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে আপত্তিকর গালিগালাজ করে। যা মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মসম্মানে লাগার বিষয়। সুবিচার পেতে মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এমপি সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন জানায়, মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের উপর অমানবিকভাবে হামলা করে ভাংচুর সহ লুটপাট করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। স্থানীয়ভাবে মিমাংসার নামে কালক্ষেপন করা হয়েছে। প্রতিপক্ষের লোকজন উগ্র ও প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ এগিয়ে আসতে চায়না মিমাংসা করতে। কসবা থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ লোকমান হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন; মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীর দায়েরকৃত মামলার প্রধান আসামী সহ কয়েকজন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে । অপরদিকে প্রতিপক্ষের মামলায় মুক্তিযোদ্ধার এক ছেলেকে আটক করা হয়েছে।