গণমাধ্যমের সচেতনতা

গণমাধ্যম সমাজ বিনির্মানের দর্পণ। এই কথাটি সত্য ছিল; সত্য আছে এবং থাকবে। কিন্তু বর্তমানে গণমাধ্যমেরও সচেতনতা দরকার। সচেতনতা শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত উপাদানগুলোর মধ্যে শক্তিশালী অবস্থানে থাকা এই গণমাধ্যমেরও এখন সচেতনতা জরুরী। গণমাধ্যমের ভুলে যে ক্ষতিটুকু হয়েছে এবং ভবিষ্যতে হবে সেই ক্ষতির রেষ টেনে ধরতে এই সচেতনতা এবং এর ফলাফল দৃশ্যমানতা রাখা খুবই জরুরী। গণমাধ্যমের সচেতন ভুমিকার উপর বহুলাংশে নির্ভর করছে আগামের ইতিবাচক অগ্রগতি এবং স্থীতিশীল স্বনির্ভর বাংলাদেশ।
গণমাধ্যমে প্রচারিত ও প্রকাশিত নিত্যদিনের খবর বা সংসবাদ এমনকি শিক্ষামূলক বিষয়দাদি বা উপকরণগুলো আমাদের উভয়প্রকার উপকারে উপকারিত করেছে। তবে; অবস্থাদৃষ্টে এর মধ্যে নেতিবাচক উপকারই বেশী হচ্ছে বলে মনে হয়। আমরা এখন বিশ্বের চাহিদা ও যোগানের প্রয়োজনে ইতিবাচকতায় মনোনিবেশ করতে হয়েছে। যদিও এতে অনেকেরই সাই নেয় কিন্তু বাস্তবতার নিরীখে ও যুগের দাবীর পরিণতির স্বীকারে আজ পৃথিবী অভ্যস্ত্য হচ্ছে। তাই সকল নেতিবাচক সংবাদ, শিক্ষা উপকরণ এবং ধর্মীয় বিভেদ বিসর্জন দিয়ে নৈতিক মানদন্ডে যা সত্য; যা উপযুক্ত; যা সৎ; যা খাঁটি; যা সুন্দর; যা সম্মান পাবার যোগ্য; মোট কথা যা ভাল এবং প্রশসংসার যোগ্য সেই দিকে মন দিতে হবেই হবে; আর এই ইচ্ছা বা অভীপ্রায় যাই বলিনা কেন তা সৃষ্টিকর্তারও।
সংবাদ প্রকাশে সতর্কতা অবলম্বনে সচেতন হলে এমনকি অতিত ও বর্তমান এবং ভবির্ষতের নীরিখে বিচার বিশ্লেষণ করে অগ্রসর হলে আগামী দিনে বর্তমানের দৃশ্যপট ও নৈতিবাচক সকল প্রকাশিত বিষয় মোকাবেলা করে সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য দৃশ্যমান বাস্তবতা উপভোগ করা যাবে। শিক্ষার প্রসারে এমনকি জীবন রক্ষার প্রয়োজনে একমুখী অতিমাত্রার ভিতি সঞ্চার বন্ধ করতে হবে। ব্যবসার প্রয়োজনে জনদুর্ভোগ (অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয়, নৈতিক, হায়া-মায়ার) সৃষ্টি করা যাবে না। দেখ-দেখা ও শিখ শিখার আলোকবর্তিকা প্রজ্জ্বলিত করা থেকে বিরত থাকতে হবে। জেনে শুনে নিজের অতিত ও বর্তমান এবং কৃষ্টি-কালচার বিসর্জনে নয় বরং গ্রহণযোগ্যতার উন্নত মানদন্ডে সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে হবে। কাউকে ছোট নয় বা বড়ও নয় এই মানদন্ডের ব্যবহার সুপ্রসারিত করতে হবে; চর্চায় জাগ্রত রাখতে হবে।
সংবাদ প্রকাশের ব্যবস্থায় মূল্যবোধ চর্চার প্রসার ঘটাতে হবে। লভ্যাংশের মানদন্ডে আর নয় বরং মূল্যবোধের মানদন্ডে অগ্রসর হওয়ার প্রয়োজনীয়তার প্রয়োগকে সর্বপ্রথম স্থানে রেখে প্রয়োগের ব্যবস্থা দৃশ্যমান রাখতে হবে। সংগ্রহ থেকে বন্টন এবং প্রকাশে ও প্রচারে সচেতনতা অবলম্বন অতিব জরুরী। আর এই সচেতনতায়ও মূল্যবোধ জাগ্রত রেখে এগুতো হবে। উন্নয়ন ও অগ্রগতির গতিময়তা এবং এর ধারাবাহিতা অব্যাহত রাখার প্রয়োজনে সংবাদ প্রচারে ও প্রকাশে অবশ্যই সচেতনতা অবলম্বন করে মুল্যবোধ জাগ্রত রেখে সংশোধনের ব্যবস্থা রাখা জরুরী হয়ে পড়েছে। পাপ-পুন্যের বিচারের ভার একমাত্র আল্লাহর আর এই আল্লার নিজস্ব বিষয়ে মাথা ঘামানো থেকে বিরত থাকতে হবে। যে অধিকার আমাদের নেই সেই অধিকার নিয়ে টানা টানি না করে বরং নিজের প্রাপ্ত অধিকারটুকু স্বচ্ছভাবে ব্যবহার করে অন্যের উপকারের ব্যবস্থা তরান্বিত করতে হবে।
সমালোচনা একটি ব্যধিতে পরিনত হয়েছে। আমাদের সমাজে এই সমালোচনা শত্রু তৈরীতে টনিক হিসেবে কাজ করে। আর পাশ্চত্য সংস্কৃতিতে সমালোচনা একটি ইতিবাচক দিক; পাশাপাশি ভূল সংশোধনে সালসা হিসেবেও কাজ করে। আর আমাদের সংস্কৃতিতে এমনকি দৃশ্যমান সমাজ ব্যবস্থায় এই সমালোচনা ক্ষতির কারণ হয়েছে দাঁড়িয়েছে। তাই আমরা ইতি ও নেতিবচাক সকল সমালোচনা পরিহার কল্পে যুগের দাবি অনুযায়ী পদক্ষেপ নিয়ে অগ্রসর হই। যাতে করে শত্রু নয় বরং বন্ধু হয়ে একে অপরের উপকারে পাশে থেকে দেশের ও দশের কল্যানে নিজ নিজ ভুমিকা পালনে সচেষ্ট থাকতে পারি। মূল্যবোধ প্রয়োগ কোন প্রকার বাধাস্বরূপ নিজেকে প্রতিষ্ঠিত না করি। সুযোগ ও ক্ষমতার জন্য প্রতিক্ষা না করি বরং যে সুযোগ ও ক্ষমতা খোদা প্রদত্ত্ব তা দিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে চেষ্টা করি। যে সফলতা অর্জিত হয়েছে সেই সফলতার ধারাবাহিতা অব্যাহত রেখে সামনে এগিয়ে যাই। পুরনো সফলতাকে ভুলে গিয়ে নতুত সফলতায় অগ্রসর হই।
অন্যের দোষ খোজা বা ধরা থেকে বিরত থাকি; বরং নিজের দোষ বা খোত খুঁজতে থাকি। নিজেকে আরো পরিশুদ্ধ করি যাতে অন্যের কাছে নিজের স্বচ্ছতা ও ভাবমুর্তিতে নির্লোভ অবস্থান দৃশ্যমান থাকে। তাহলে অন্যকে উপদেশ দেয়ার আগেই জীবন্ত দর্শন থেকে শিক্ষা লাভ করতে উৎসাহিত হবে। কোন শিক্ষাই তখন আর বিফল হবে না যাদি না আমাদের জীবনে প্রয়োগকৃত ফল দৃশ্যমান না থাকে। জীবনদায়ী ফলনির্ভর শিক্ষার গুরুত্ব এখন অপরিসীম হয়ে পড়েছে। দমন-পীড়ন নীতির পরিহার অপরিহায্য হয়ে পড়েছে। কারন এই নীতিতে বলীয়ান হওয়া যায় না। কারন সৃষ্টিকর্তা এতে হস্তক্ষেপ করেন। সমালোচক ও দোষ ধরে বেড়ানোদের বিরুদ্ধে সময় নষ্ট না করে মনযোগ দিয়ে নিজের কাজটুকু সম্পন্ন করুন। সফলতা আসবেই; নিন্দুকদেরকে তাদের ভুল বুজতে সুযোগ দিন। অন্যকে শাস্তির অধিনে নিয়ে নিজের জীবনে অশান্তির কারনকে কাজ করতে দিবেন না। আজকে সুযোগ ও ক্ষমতা আছে তাই যা ইচ্ছা তাই করবেন তা কিন্তু শুভ নয়। কালকে যখন ক্ষমতা ও সুযোগ কোনটাই থাকবে না তখনের কথা মনে করে কাজ করুন। সকলকে সমানভাবে ভালবাসুন। কারো কুমন্ত্রনা বা কানপড়ার ফাঁদে পা দেবেন না। নিজের বিচার বুদ্ধির প্রয়োগ দৃশ্যমান রাখুন। কথা ও কাজকে গরুত্ব দিয়ে প্রয়োগে দৃশ্যমান রাখুন। ওয়াদা বরখেলাপ করবেন না এবং কোন প্রকার ছল-ছাতুরী করবেন না। কারণ আপনাকে অনুসরন ও অনুকরণ করে অনেকেই সততা, ন্যায়পরায়নতা এবং খোদায়ী জীবন যাপনে অভ্যস্ত হচ্ছে।
আবেগ ও বিভেকের তাড়নায় কাজ করুন। তবে এই ক্ষেত্রে সচেতনতা জরুরী। আমরা আমাদের এই সমাজে, সংস্কৃতিতে গণমাধ্যমকে স্বচ্ছ আয়নায় পরিণত করতে এমনকি এর প্রতিচ্ছবির প্রতিবিম্ব দৃশ্যমান রাখতে মুল্যবোধের প্রকাশ ঘটিয়ে কাজ করে যাওয়ার প্রত্যয় নিয়ে আগামীর অগ্রসরতা বিরাজমান রাখতে একযোগে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করি। কোন বিভেদ বা বিশৃংখলার বন্ধনে আবদ্ধ না হয়ে মোট কথা যা ভাল এবং প্রশংসার যোগ্য সেইদিকে মনোনিবেশ করার প্রত্যয়ে অগ্রসর হব।

Leave a Reply

Your email address will not be published.