ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ জাল হলফনামা সৃষ্টি করে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা উত্তোলন করায় কসবায় আবদুল মোতালেব নামক এক মুক্তিযোদ্ধার ছেলের নামে মামলা হয়েছে। বিজ্ঞ আদালত জেলা গোয়েন্দা শাখাকে এই চাঞ্চল্যকর মামলা তদন্ত করতে নির্দেশ দিয়েছেন। অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার কায়েমপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা ও অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য আবদুল মালেকের মৃত্যু হলে ভাতা তাঁর স্ত্রী কুলছুমের নেছার নামে বরাদ্দ হয়। ২০২০ সালের ৯ জানুয়ারি মুত্যু বরণ করেন মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মালেকের স্ত্রী কুলছুমের নেছা। কুলছুমের নেছার মৃত্যুতে তাঁর মুক্তিযোদ্ধা একাউন্টে অনেক টাকা জমা হয়। মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মালেকের পুত্র আবদুল মোতালেব সেই টাকা উত্তোলনের জন্য তার প্রবাসী ভাই আবু জাহেরের ছবি ব্যবহার করে জাল স্বাক্ষরের মাধ্যমে প্রবাসী ভাই আবু জাহেরকে দাতা দেখিয়ে এবং আবদুল মোতালেব নিজেকে গ্রহিতা দেখিয়ে স্বাক্ষীদের স্বাক্ষর জাল করে হলফনামার মাধ্যমে জাল দলিল সৃজন করে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা উত্তোলনের বই বানিয়ে টাকা উত্তোলন করেন। হলফনামা রেজিঃ নং-২১৫, তারিখ-২১-০১-২০২০। জাল জালিয়াতির মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তর সৃজন করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ছাড়পত্র নিয়ে গত ৬ জুলাই ২০২০ ইং কসবা সোনালী ব্যাংক শাখা থেকে ১ লাখ ২৩ হাজার ৪৬৭ টাকা উত্তোলন করেন। মামলার বাদীনি মুক্তিযোদ্ধা আবুদল মালেকের প্রবাসী পুত্র আবু জাহেরের স্ত্রী বিউটি আক্তার সাংবাদিকদের জানান, তার স্বামী ২০১৫ সাল থেকে মালেশিয়াতে অবস্থান করছেন। আবদুল মোতালেব তার ভাইয়ের স্বাক্ষর ও ছবি দিয়ে জাল দলিল তৈরি করে এই অন্যায় কাজ করেছেন। তার অনুপস্থিতিতে ভাসুর আবুদল মোতালেব শ্বশুর ও শাশুড়ীর সম্পদ ও ভ’য়া কাগজ তৈরি করে ভোগ দখল করে তার স্বামীকে বঞ্চিত করেছেন। বিউটি আক্তার বলেন, তিনি গত ২ নভেম্বর বিজ্ঞ আদালতে মামলা করলে আদালত জেলা গোয়েন্দা শাখাকে এ মামলা তদন্ত করে রিপোর্ট প্রদানের নির্দেশ দেন। গত শুক্রবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে গেলে মুক্তিযোদ্ধার ছেলে অভিযুক্ত আবদুল মোতালেব সাংবাদিকদের নিকট ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমার ছোট ভাই আবু জাহেরের স্বাক্ষর আমি নিজেই দিয়েছি এবং ছবি সংযুক্ত করেছি। এটা আমার ভূল হয়েছে। গোয়েন্দা বিভাগের তদন্তকারী কর্মকর্তা সাব-ইন্সপেক্ট্র ইমরান বলেন, বিষয়টি দলিল প্রমানাদির বিষয়। সুতরাং অপরাধী যেই হোক তাকে আইনের কাঠগড়ায় দাড়াতে হবে। মামলা করে বিউটি আক্তার ও তার একমাত্র পুত্র নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছে।