ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ পরকীয়ায় সংসার ভাঙ্গলো এক প্রবাসী পরিবারের। তাদের ঔরসজাত দুই সন্তান এখন বিপাকে। ঘটনাটি ঘটেছে কসবার সীমান্তবর্তী ব্রাহ্মণপাড়ার চৌব্বাস গ্রামে। গ্রামবাসী বলছে ব্রাহ্মণপাড়ার চৌব্বাস গ্রামের প্রবাসী হাবিবুর রহমান (৪০) এর স্ত্রী দুই সন্তানের জননী একই গ্রামের সোহাগ নামক এক বিবাহিত পুরুষের সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে নিজের সংসারের ধ্বংস ডেকে এনেছেন। এখন দ’ুকুল হারিয়েছেন প্রবাসী হাবিবুর রহমানের স্ত্রী তাছলিমা ও তার দুই সন্তান। এ ঘটনার পর হাবিবুর রহমান অন্যত্র বিয়ে করে সংসার পেতেছেন নতুন করে। হাবিবুর রহমান জানান, প্রায় ১৩ বছর আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার বায়েক ইউনিয়নের বালিয়াহুড়া গ্রামের জনৈক সাফিজ মিয়ার কন্যাকে বিয়ে করেন । তাদের দাম্পত্য জীবনে তাদের সংসারে এক পুত্র ও এক কন্যা সন্তান জন্ম গ্রহন করলেও একই গ্রামের সোহাগের সংগে স্ত্রীর পরকীয়ায় ফলে সংসারে দুর্ভোগ নেমে আসে। এ ঘটনায় গ্রামে দু’বার সালিশও বসে। অনৈতিক কাজের জন্য দুবার পাড়ায় সালিশে সাহেব সর্দারদের নিকট তাছলিমা ও লম্পট সোহাগ অকপটে সালিশে সব স্বীকার করে। সর্বশেষ সালিশটি হয় ২০২০ সালের ২৫ আগস্ট। স্বাক্ষ্য প্রমানে তাছলিমা ও সোহাগের দোষ প্রমানিত হলেও গ্রামের সাহেব সর্দারগন তাছলিমাকে স্বামীর ঘরে নাবালক দুই শিশুকে নিয়ে সংসার চালিয়ে যেতে বলে। বিদেশ থেকে স্বামী আসলে এ বিষয়ে সালিশদারগন ব্যবস্থা গ্রহন করবেন। কিন্তু তাছলিমা স্বামীর ঘরে না থেকে দুই সন্তানকে নিয়ে কসবা উপজেলার বালিয়াহুড়া গ্রামে তার বাবার বাড়িতে চলে আসে। চৌব্বাস গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম মেম্বার জানান; “আমরা তাকে বুঝাতে চেষ্টা করেছি যেন দুটি সন্তানের দিকে তাকিয়ে সব ভ’লে গিয়ে সংযত থাকে। স্বামী বিদেশ থেকে আসার আগ পর্যন্ত স্বামীর ঘরে শ্বশুর-শাশুড়ীর সাথে বসবাস করে। কিন্তু কথা শুনেনি তাছলিমা। বরং সে ২০২০ সালের ২১ সেপ্টেম্বর নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে স্বামী হাবিবুর রহমানকে তালাক নামা পাঠায়”। পরে তাছলিমার স্বামী হাবিবুর রহমান বাড়িতে আসলে ২০২০ সালের ২৫ অক্টোবর পরিবারের লোকজন পাশ্ববর্তী গ্রামে তাকে বিয়ে করায়। হাবিবুর রহমান জানায়, তাছলিমা ক্ষুব্দ হয়ে তালাক দেবার পরও পুনরায় আমার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন মামলা করেছে। পরে আমি ২০২০ সালের ১৬ নভেম্বর কুমিল্লা বিজ্ঞ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে তাছলিমা ও তার প্রেমিক সোহাগের বিরুদ্ধে এবং একই মাসের ১৭ তারিখ তাছলিমা ও তার বাবা শাফিজ মিয়া মা নেহেরা বেগমের বিরুদ্ধে মামলা করি। হাবিবুর রহমান জানান, এরা তার উপার্জন প্রায় ২২ লক্ষ টাকা আত্মসাত করেছেন। এ বিষয়ে তার কাছে প্রমানপত্র আছে বলে সাংবাদিকদের জানান। ওই মামলার একটি কুমিল্লা পিবিআই তদন্ত করছে। এ বিষয়ে কসবা উপজেলার বালিয়াহুড়া গ্রামে তাছলিমার বাবার বাড়িতে গিয়ে তার সংগে কথা বলে জানা যায়, সে তার স্বামীকে তালাক দেয়নি। এটি স্বামীর সাজানো নাটক। তাই তিনি স্¦ামীর বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজ্ঞ আদালতে নারী নির্যাতন মামলা করেছেন। মামলাটি কসবা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা তদন্ত করে প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন। কসবা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো.মুবিনুল ইসলাম জানান, উভয় পক্ষকে নোটিশ করা হলেও হাবিবুর রহমান গং তদন্ত কার্যক্রমে অংশগ্রহন করেনি। তাছলিমার ও হাবিরের পুত্র সন্তানটি সপ্তম শ্রেনীতে উত্তীর্ণ হয়েছে ও কন্যা সন্তান চতুর্থ শ্রেনীতে উত্তীর্ণ হয়েছে। তাদের বাবা-মায়ের এই বিচ্ছিন্নতার কারনে এদের পড়াশুনা বন্ধ হয়ে গেছে। নতুন বছর এলেও তাদের হাতে এখনো নতুন বই উঠেনি। এ ঘটনা পাশাপাশি দুই উপজেলার সচেতন মানুষের মধ্যে চাপা বেদনা বিরাজ করছে।
Share on Facebook
Follow on Facebook
Add to Google+
Connect on Linked in
Subscribe by Email
Print This Post