ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় ছিনতাই মামলার স্বাক্ষী হওয়ায় উপজেলার কাইমপুর গ্রামের ইমরান নামে এক স্বাক্ষীর বাড়িতে হামলা করে ক্ষতিসাধন করেছে ছিনতাইকারী আসামী ও মাদক ব্যবসায়ীরা। এসময় তাকেও বেদড়ক পিটিয়েছে হামলাকারীরা। থানায় অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার পাচ্ছেনা ভুক্তভোগীরা। স্বাক্ষীদের মধ্যে দুজন নিরাপত্তাহীনতায় পালিয়ে বেড়াচ্ছে। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়; কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কৈইয়াপাথর গ্রামের মোছেনা বেগম নামক এক মহিলা কায়েমপুর তার এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসে ছিনতাইয়ের শিকার হন। তার কাছ থেকে ছিনতাইকারীরা নগদ ২৫ হাজার টাকা ও এক ভড়ি ওজনের একটি চেইন ছিনিয়ে নিয়ে যায় এবং এক পর্যায়ে ওই মহিলার গলা চেপে ধরে প্রানে মারা চেষ্টা করে। এ সময় ওই মহিলার আর্তচিৎকারে গ্রামের লোকজন এগিয়ে আসে। স্থানীয়দের উপস্থিতি টের পেয়ে ছিনতাইকারীরা পালিয়ে যায়। এসময় স্থানীয়রা ছিনতাইকারী ও মাদক ব্যবসায়ীদের চিনে ফেলে। পরে ওই মহিলা বাদি হয়ে ৩ ছিনতাইকারীকে আসামী করে কসবা থানায় মামলা দায়ের করেন। আসামীরা হলো; কাইমপুর গ্রামের ফরিদ মিয়ার ছেলে মাদক ব্যবসায়ী ও ছিনতাইকারী শাকিল (২৮), হোসেন মিয়ার ছেলে দুলাল (৩৫) ও ফরিদ মিয়ার ছেলে টিপু সুলতান (২৮)। এদের মধ্যে দুলাল আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বাড়িতে ডাকাতি মামলার এজাহারভুক্ত পলাতক আসামী। এসকল আসামীদের বিরুদ্ধে একাধিক মাদক চোরাচালানের মামলা থাকলেও এরা প্রকাশ্যে দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছে এলাকায়। এই ছিনতাই মামলার স্বাক্ষী হওয়ায় গত ৩১ ডিসেম্বর ইমরান মিয়ার বাড়িতে রাতের বেলায় হামলা ও ভাংচুর চালায় আসামীরা। এসময় ইমরান বেরিয়ে এসে কারন জানতে চাইলে বিবাদী জাহাঙ্গীর মিয়ার নির্দেশে ছিনতাই মামলার আসামী ও মাদক ব্যবসায়ীরা ইমরানকে বেধড়ক পিটিয়ে ছেচা ফুলা ও হাড়ভাংগা জখম করে। ইমরানের স্ত্রী শাবনুর আক্তার তার স্বামীতে বাঁচাতে এলে তাকেও পিটিয়ে তার পরনের কাপড় ছিড়ে শ্লীলতাহানী করে বলে অভিযোগে জানা যায়। হামলাকারীরা ইমরান ও তার স্ত্রী শাবনুরের গলায় চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে প্রানে মারার জন্য ধস্তাধস্তির সময়। শাবনুরের গলায় থাকা এক ভরি ওজনের চেইন ছিড়ে নিয়ে যায়। হামলাকারীরা মহল্লার লোকদের ভয় দেখাতে মহরা প্রদর্শন করে এবং স্বাক্ষী ইমরান ও তার স্ত্রীকে যে কোনো সময় প্রাণে মেরে লাশ গুম করে ফেলার হুমকি দেয়। পরে স্থানীয়দের সহযোগীতায় ইমরানকে কসবা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় ইমরানের স্ত্রী শাবনুর আক্তার বাদী হয়ে কসবা থানায় ৮জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। মামলার ৬ দিন পেরিয়ে গেলেও কোনো আসামীকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। ওই এলাকায় মাদক ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম বেড়ে যাওয়ায় এলাকাবাসীর মাঝে আতংক বিরাজ করছে। কায়েমপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারন সম্পাদক ইকতিয়ার আলম রনি বলেন; এসকল মাদক ব্যবসায়ীরা সমাজে নানা ধরনের অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত। এরা এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা বিঘœকারী। এদের ভয়ে সাধারন মানুষ মুখ খুলতে পারছেনা। কায়েমপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো.ইয়াকুব আলী ভূইয়া বলেন; এসকল সন্ত্রাসীদের জন্য আমাদের ইউনিয়নের সম্মানহানী হচ্ছে। এতে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক মহোদয়ও অত্যন্ত বিব্রত বোধ করছেন।তিনি বলেন; আমি বার বার কসবা থানার ওসি সাহেবকে এদের বিরুদ্ধে আইনানূগ ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করলেও কার্যত কোনো ফল পাওয়া যায়নি। কসবা থানা ওসি লোকমান হোসেন বলেন; ছিনতাইয়ের ঘটনায় স্বাক্ষীকে মারধোরসহ বাড়িতে হামলা ও ভাংচুরের বিষয়ে থানায় অভিযোগ হয়েছে। আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
Share on Facebook
Follow on Facebook
Add to Google+
Connect on Linked in
Subscribe by Email
Print This Post