কসবায় সম্পত্তি নিয়ে বিরোধে অন্ধ বৃদ্ধকে হত্যার অভিযোগ ভাই ও ভাতিজাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা

ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় বিনাউটি ইউনিয়নের ব্রাহ্মণগ্রামে প্রতিপক্ষের দায়ের কোপে নান্নু মিয়া (৭০) নামে এক দৃষ্টি প্রতিবন্ধি নিহত হলেও গ্রাম্য সর্দারদের চাপে পরিবারের লোকজন নিহতের লাশ দাফন করে। ঘটনার দু’দিন পর নিহত নান্নুর ছেলে মামুন (৩০) ৬ জনকে আসামী করে থানায় মামলা করে। মামলার অভিযোগে প্রকাশ, দৃষ্টি প্রতিবন্ধি নান্নু মিয়াকে পৈত্রিক সূত্রে ওয়ারিশানা ভূমি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। ফলে তার ছেলে মামুন মিয়া ২০১৭ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজ্ঞ দেওয়ানী আদালতে জমি উদ্ধারের মামলা করেন। মামলাটি বিজ্ঞ আদালতে বর্তমানে রায়ের পর্যায়ে থাকায় প্রতিপক্ষ নান্নুর বড় ভাই তাহের মিয়া ও তাঁর ছেলেরা নান্নু মিয়ার ছেলেদের প্রাণে মারার হুমকি দিয়েছে বলে জানা যায়। নিহত নান্নু মিয়ার ছেলে মামুন মিয়া জানায়, এ বিষয়ে আদালতে ১০৭ ধারায় মামলা করলে আবু তাহেরের পুত্র ও নাতিরা আদালতে মুচলেকা প্রদান করে। বিজ্ঞ আদালতে মুচলেকা দিয়েও এ সকল ভুমি লিপ্সুরা নিরব থাকেনি। গত ১৩ জানুয়ারি রাতে নান্œু মিয়ার স্ত্রী সামছুন্নাহার প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ঘরের বাইরে বাথরুমে গেলে ওৎ পেতে থাকা তাহের মিয়ার ছেলে ও নাতি ঘরে ঢুকে নান্নু মিয়াকে মাথায় কোপ দিয়ে মারাত্মক জখম করে। সামছুন্নাহার বাথরুম থেকে বেরিয়ে তাহের মিয়ার ছেলে, নাতিকে চলে যেতে দেখে। এমতাবস্থায় সামছুন্নাহার ঘরে গিয়ে দেখে ঘরে গিয়ে তার স্বামী রক্তাক্ত অবস্থায় নিথর হয়ে পড়ে আছে। তার আর্তচিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে জড়ো হয়। এ সময় গ্রামবাসী মুর্মুর্ষ অবস্থায় নান্নু মিয়াকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। সদর হাসপাতালে নেয়ার পর মারা যায় নান্নু মিয়া। পরে স্থানীয় গ্রাম্য সর্দার জামশেদ মিয়া ও অন্যান্যদের পরামর্শে নিহত নান্নু মিয়াকে দাফন করা হয় বলে জানায় নিহতের পরিবারের লোকজন। নিহতের ছেলে মামুন জানায় জামশেদ মিয়া ও অন্যান্য সর্দারগন গ্রামে ন্যায় বিচার করে দেবে এমন আশ্বাসে তারা লাশ দাফন করতে বাধ্য হয়। মামুন আরো জানায় তার বাবা পৈত্রিক সম্পত্তিতে ভোগদখল প্রতিষ্ঠা করতে না পেরে বর্তমানে তারা রেলওয়ের পরিত্যক্ত জায়গায় ঘর নির্মান করে বসবাস করে আসছে। নিহতের স্ত্রী সামছুন্নাহার সাংবাদিকদের জানান; সম্পত্তির জন্য তার ভাসুর ও তার ছেলেরা তার স্বামীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। তিনি এ ঘটনা সুষ্ঠু ও ন্যায় বিচার চান। এ বিষয়ে অভিযুক্ত তাহের মিয়ার বাড়িতে কথা বলতে গেলে তাহের মিয়া ও তার ছেলেদের বাড়িতে পাওয়া যায়নি। তাহের মিয়ার ছেলে কাইয়ুম মিয়ার স্ত্রী রফিয়া বেগম বলেন কয়েক বছর যাবত নান্নু মিয়ার সাথে সম্পত্তি নিয়ে মামলা চলমান রয়েছে। গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা জামশেদ সর্দার জানান, তিনি নিহত নান্নু মিয়ার ছেলেদের তার বাবার লাশ দাফন করার কথা বলেননি।তবে তিনি জানাযায় ছিলেন। এ বিষয়ে গ্রামের কেহই মুখ খুলতে নারাজ। মামলার অগ্রগতির বিষয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা কসবা থানা এস.আই রওশন সাংবাদিকদের জানান, তদন্ত সাপেক্ষে মামলা রেকর্ডভুক্ত করা হয়েছে। নিহতের লাশ উত্তোলন করে ময়না তদন্তের জন্য বিজ্ঞ আদালতে আবেদন করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.