বর্ষায় নৌকা আর শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সাঁকোই ভরসা

প্রশান্তি ডেক্স ॥ দুই উপজেলার মাঝ দিয়ে প্রবাহিত খর স্রোতা আত্রাই নদীতে বর্ষায় নৌকা আর শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সাঁকোই ভরসা হাজার হাজার মানুষের। দিনাজপুর সদর এবং চিরিরবন্দর উপজেলার মাঝে প্রবাহিত আত্রাই নদী বর্ষাকালে ভয়ংকর রূপ ধারণ করে পাড় ভেঙে দিলেও শুষ্ক মৌসুমে বালুর চর আর কিছু স্থানে থাকে পানি। তাই বর্ষকালে নৌকা আর শুষ্ক মৌসুমে ওই নদীর পানির উপর স্থানীয়দের সমন্বয়ে গড়া বাঁশের সাঁকোই হয় একমাত্র পারাপারের মাধ্যম। দিনাজপুর সদরের বুড়ির হাট-চিরিরবন্দরের সাইতাড়ার মাঝে নদীর ঘাটের আশপাশের হাজার হাজার মানুষের ভোগান্তি বর্ষায় যেমন, শুষ্ক মৌসুমেও তেমন। স্বাধীনতার ৫০ বছর পার হলেও তাদের যেন কাটছে না এই ভোগান্তি। তাই ওইসব এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি একটি সেতুর। অনেকে আশ্বাস দিলেও আজও কোনো অগ্রগতি নেই বলে জানান স্থানীয়রা।
প্রতিদিন নদী পারাপারে শুষ্ক মৌসুমে নদীর দুই পাশের মাটির নিচু রাস্তা পেরিয়ে বাঁশের সাঁকো পার হতেও দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এর উপর দিয়ে ভারী যানবাহন, মাইক্রোবাস না চললেও শুষ্ক মৌসুমে প্রয়োজনে অটোচার্জার বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হয়। নদীর ঘাটের পাশে বসে বুড়ির হাট। নদীর দুইপারের হাজার হাজার মানুষ এই হাটে কেনাবেচা করে। এছাড়াও নদীর দুই পাড়ের রানীগঞ্জসহ কয়েকটি হাট-বাজার বসে। এই বুড়ির হাটের পাশে নদীর ঘাট ব্যবহার করে দিনাজপুর সদরের হরিরামপুর, ঝানঝিরা,পূর্ববীরগাঁ, পারগাঁ, মাধবপুর, রানীগঞ্জ ও চাদগঞ্জসহ ১০ গ্রাম এবং ওপারের চিরিরবন্দর উপজেলার খোচনা, শংকরপুর, ওকরাবাড়ী, সাইতাড়া, ঘণ্টাঘর ও বারলবাজারসহ ১০ গ্রামের মানুষ এই নদীর এই ঘাট ব্যবহার করেন। এছাড়াও এই ঘাট দিয়ে নদী পারাপার হয় পার্বতীপুর উপজেলার কয়েক গ্রামের মানুষ।
সাইতাড়া ইউপির চাষী এনামুল হকসহ অনেকে জানান, আমাদের দুর্ভোগ ছাড়ে না। উভয় দিকের বিভিন্ন গ্রামের কৃষকের উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজাতকরণের ক্ষেত্রে নদী পারাপারে চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হয়। আবার বাজারমূল্য না পাওয়ায় ক্ষতির সম্মুখীন হয় কৃষকরা।
দিনাজপুরের ফাজিলপুর ইউপির ৯ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বর হবিবর রহমান জানান, প্রতিদিন বন্যার সময় নৌকা কিংবা শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সাঁকো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে কৃষক, ব্যবসায়ী, স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। গর্ভবতী নারী, শিশু, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা ও রোগীদের পারাপার করা যেমন ভীতিকর তে মনি খুব কষ্ট ও ঝুঁকিপূর্ণ। এসব অঞ্চলের জীবনযাত্রার মান পাল্টাতে হলে এবং গ্রামীণ অর্থনীতি শক্তিশালী করতে অবশ্যই এখানে একটি সেতুর জরুরি প্রয়োজন। আমাদের ইউপি পরিষদ এলজিইডিকে জানিয়েছে, এখানে একটি সেতু করার জন্য। কিন্তু সাড়া পাওয়া যায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.