বঙ্গবন্ধু “ইনশাআল্লাহ” বলায় বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে….মুফতি মামুনুল হক

ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ হেফাজত ইসলামের একাংশের নেতা মুফতি মামুনুল হক প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই কসবার শ্যামবাড়ী গ্রামে মাহফিল করে গেলেন। মাহফিলে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষনে “ইনশাআল্লাহ” বলায় তাঁর নেতৃত্বে এ দেশ স্বাধীন হয়েছে। সেখানে তিনি কোনো প্রকার রাজনৈতিক উস্কানীমুলক বক্তব্য রাখেননি বলে শ্রোতারা জানান । প্রকাশ: প্রশাসনের অনুমতি ও আলোচনা ব্যতিত কসবা উপজেলার বাদৈর গ্রামের ছাত্র উলামা ইসলামী সেবা পরিষদ আয়োজিত ইসলামী সম্মেলনের আয়োজন করেছিলেন। গত ২০ মার্চ শনিবার সকাল ১০টায় এই সম্মেলন করার জন্য তারিখ নির্ধারন করেছিলো সংগঠনটি। সেখানে মুফতি মামুনুল হক প্রধান বক্তা হিসেবে এবং কসবা উপজেলা চেয়ারম্যান এডভোকেট রাশেদুল কাওসার ভ’ইয়া জীবন কে প্রধান অতিথি করে পোষ্টার ছাঁপিয়ে প্রচার করেছিলেন আয়োজকরা। প্রশাসন বিষয়টি টের পেয়ে আয়োজকদের নিয়ে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে স্থানীয় হেফাজত নেতাদের সংগে বৈঠক করেন। প্রায় ২ ঘন্টা বৈঠকের পর ওই সম্মেলন স্থগিত করে দেন প্রশাসন। ওই বৈঠকে উপজেলা চেয়ারম্যান এডভোকেট রাশেদুল কাওসার ভূইয়া জীবন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ উল আলম, কসবা সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার নাহিদ হাসান ও অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আলমগীর ভূইয়া উপস্থিত ছিলেন। হেফাজতের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন আকছিনা জালালীয়া মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা জয়নাল আবেদীন জালালী, আতিকুল ইসলাম সহ আরো ২০/২৫জন আয়োজক কমিটির লোকজন। সাম্প্রতিক সময়ে হেফাজতের কর্মী সমর্থকদের দ্বারা সুনামগঞ্জের দিরাই ও শাল্লাতে হিন্দু বাড়িঘরে হামলা লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের বিষয়গুলো নিয়ে প্রশাসন উদ্বিগ্ন হওয়ার কারনে প্রশাসন এই সম্মেলনটি স্থগিত করে দেন। ওই রাতেই কয়েকটি অনলাইন পোর্টালে সংবাদ প্রকাশ হয় বাদৈর গ্রামে ইসলামী সম্মেলনে উপজেলা চেয়ারম্যান রাশেদুল কাওসার ভূইয়া জীবন প্রধান অতিথি অপরদিকে হেফাজত নেতা মুফতি মামুনুল হক প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
এ প্রতিবেদকের সংগে উপজেলা চেয়ারম্যান বলেন; যেখানে মাহফিলই হবেনা ওইখানে আমাকে প্রধান অতিথি করা হয়েছে এই বিষয়টি অবান্তর। অনলাইন পোর্টাল ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসব প্রচার করে কিছু লোক দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেন। এসব মিথ্যা প্রপাগান্ডা আমাকে হেয় করার জন্য করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন; হেফাজতের স্থানীয় নেতাদের সাথে গত ১৮ মার্চ সন্ধ্যার পর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে প্রশাসন ও হেফাজত নেতারা ইসলামী সম্মেলন হবে না বলে ঐক্যমতে পৌঁছেন। এদিকে বাদৈর গ্রাম থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দুরে মূলগ্রাম ইউনিয়নের শ্যমবাড়ী গ্রামে হেফাজত নেতা মাওলানা কামাল উদ্দিন দায়েমীর বাড়িতে প্রশাসনের অনুমতি ব্যতিত মুফতি মামুনুল হক গত শনিবার রাতে প্রায় দেড় ঘন্টা বয়ান করেন। বয়ান শেষে আবার রাতেই চলে যান। সৈয়দাবাদ গ্রামের হারুনুর রশীদ নামে এক শ্রোতা বলেন; সেখানে তিনি কোনো ধরনের উস্কানীমুলক বক্তব্য দেননি। তবে বয়ানের এক ফাঁকে তিনি বলেন বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষনে “ইনশাআল্লাহ” বলায় তাড়াতাড়ি এ দেশ স্বাধীন হয়েছে। এ ব্যপারে কসবা থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আলমগীর ভ’ইয়া মাহফিলের সত্যতা স্বীকার করে বলেন; শ্যামবাড়ী গ্রামে মাহফিলের জন্য আমাদের কাছ থেকে কোনো অনুমতি নেয়া হয়নি। উপজেলা চেয়ারম্যান এডভোকেট রাশেদুল কাওসার ভ’ইয়া জীবন বলেন, বাদৈর গ্রামের ইসলামী সম্মেলনটি আলোচনার মাধ্যমে স্থগিত করা হয়েছিলো। পরে মুলগ্রাম ইউনিয়নের শ্যামবাড়ী গ্রামে মুফতি মামুনুল হক রাতে এসেছিলেন বিষয়টি আমি শুনেছি তবে আয়োজকরা স্থানীয় প্রশাসন থেকে কোনো অনুমতি নেয়নি। শ্যামবাড়ী গ্রামে মাহফিলের আয়োজক স্থানীয় হেফাজত নেতা মাওলানা কামাল উদ্দিন দায়েমীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান; মাহফিলের ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি নেয়া হয়নি। তবে হেফাজত নেতা মুফতি মামুনুল হক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় থেকে অনুমতি নিয়ে মাহফিলে এসেছেন বলে জানান আয়োজক কামাল উদ্দিন দায়েমী।

Leave a Reply

Your email address will not be published.