প্রশান্তি ডেক্স ॥ আবহাওয়া পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে কৃষিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হচ্ছে। খরা, বন্যা, ঝড়সহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে আক্রান্ত হচ্ছে দেশের কৃষি খাত। সম্প্রতি চৈত্রের গরম হাওয়ার ‘হিটশকে’ ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা এই তিন জেলার কমপক্ষে ৫০ হাজার হেক্টর জমির বোরো ধান পুড়ে গেছে। এতে স্বপ্নভঙ্গ কৃষকের চোখেমুখে দুশ্চিন্তার ভাঁজ। এদিকে দেশের উত্তরাঞ্চলে শুরু হয়েছে খরার প্রভাব। বৃষ্টি না হওয়ায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর অনেক নিচে নেমে গেছে। এতে অনেক স্থানে বোরো জমিতে সেচ কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। সেচের অভাবে জমিতে বোরো ধানের ফলন নিয়ে কৃষকরা চিন্তিত। এমন অবস্থা যদি সপ্তাহখানেক থাকে তাহলে বোরো ধানের মারাত্মক ক্ষতি হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি ভারতের একতরফা পানি প্রত্যাহারের ফলে দেশের উত্তরাঞ্চলের মরুকরণ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হচ্ছে। উত্তরে ভারত থেকে বাংলাদেশমুখী ছোট-বড় প্রায় সব নদ-নদীতেই বাঁধ, স্পার, রেগুলেটর নির্মাণ করে পানি প্রত্যাহারের ফলে নদীগুলো শুকিয়ে গেছে। এর ফলে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করে সেচ কাজে ব্যবহারের পরিণতিতে উত্তরাঞ্চলে পানির স্তর নিচে নামতে নামতে এখন বিপজ্জনক পর্যায়ে উপনীত হয়েছে। তবে বেশি উদ্বেগজনক অবস্থা বরেন্দ্র অঞ্চলে বলে জানিয়েছেন পানি বিশেষজ্ঞরা। এর সাথে যোগ হয়েছে অনাবৃষ্টির সমস্যা। তিস্তা ব্যারাজের মাত্র ৯০ কিলোমিটার উজানে গজলডোবায় বাঁধ নির্মাণ করে ভারত একতরফাভাবে তাদের সুবিধামতো পানি নিয়ে যাচ্ছে। এতে করে পানির অভাবে তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্পটি প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। নীলফামারী, রংপুর ও দিনাজপুর জেলার ৫ লাখ ৪০ হাজার হেক্টর জমির সেচ সুবিধা বন্ধ হয়ে গেছে। তিস্তাপাড়ের হাজার হাজার হেক্টর জমি সেচের অভাবে ইরি, বোরো মৌসুমে পড়ে থাকে।
করোনা মহামারির চরম বিরূপ পরিস্থিতি, ঘূর্ণিঝড় আম্ফান, দীর্ঘ বন্যা এবং প্রবল বর্ষণের সাথে ফুঁসে ওঠা সাগরের জোয়ারে গত মৌসুমে আউশ ও আমন কাক্সিক্ষত উৎপাদন হয়নি। সব মিলিয়ে দেশে ১০ লাখ ৫০ হাজার টন ধান কম উৎপাদিত হয়েছে। এর ফলে খাদ্য মজুদ অনেক কমে গেছে। হুমকির মুখে পড়েছে খাদ্য নিরাপত্তা। বাজারে চালের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে চলেছে। এ অবস্থায় সম্ভাব্য খাদ্য ঘাটতি কমাতে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমদানি হচ্ছে। তাতেও স্থিতিশীল হচ্ছে না চালের বাজার। আউশ এবং আমন উৎপাদনের ঘাটতি সরকার আসন্ন বোরো উৎপাদনে পুষিয়ে নিতে চাচ্ছে। তবে আবহাওয়ার বিরূপ প্রভাবে বোরো উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী, চলতি মৌসুমে বোরো আবাদ হয়েছে ৪৮ লাখ হেক্টর জমিতে। আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে দেশে প্রতি বছর বিভিন্ন মাত্রার খরায় আক্রান্ত হয় ৮৫ লাখ হেক্টর চাষযোগ্য জমি। এর মধ্যে শতকরা ৪০ ভাগ জমিতে বোরো ধান চাষ করা হয়। তবে এ বছর বৈরী আবহাওয়ায় বোরো উৎপাদনের প্রধান উৎস হাওর এলাকায় ৫০ হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। এতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক কম হবে।
বিশিষ্ট পরিবেশবিদ ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত গতকাল ইনকিলাবকে বলেন, আবহাওয়ার পরিবর্তনের প্রভাব সর্বত্রই দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশে এখন আর আগের মতো ষড়ঋতুর বৈশিষ্ট্য দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। দেশে খরার প্রভাব আগের চেয়ে বেড়েছে। এতে নওগাঁসহ উত্তরাঞ্চলের বিশেষ কিছু জায়গায় এখন ধানের মৌসুমে কৃষকরা ধানের চাষ করছেন না। এ ছাড়া তিস্তার প্রভাবেও ওই অঞ্চলে মরুকরণ দ্রুত হচ্ছে। সব মিলিয়ে ধান চাষে এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। এটা খাদ্য নিরাপত্তার জন্য অবশ্যই হুমকি।
রাজশাহী থেকে রেজাউল করিম রাজু জানান, আমনে ধান-চালের বাজার চড়া হওয়ায় এবার বোরো ধানের আবাদ বেড়েছে বরেন্দ্র অঞ্চলে। তবে প্রচন্ড খরতাপ থেকে সবুজ ধানের ক্ষেত বাঁচাতে দিন-রাত সেচ দিতে হচ্ছে। এবার বরেন্দ্র অঞ্চলে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল তিন লাখ পঞ্চান্ন হাজার পাঁচশ’ হেক্টর জামিতে। বাস্তবে আবাদ হয়েছে তিন লাখ তেষট্টি হাজার একশ’ বাহাত্তর হাজার হেক্টর জমিতে। গত মৌসুমে আবাদ হয়েছিল তিন লাখ বিয়াল্লিশ হাজার সাতশ’ ঊনত্রিশ হেক্টর জমিতে। মাঠপর্যায়ে দেখা যায় বরেন্দ্রের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে শুধু ধান আর ধান ক্ষেত। করোনা ভীতিকে উপেক্ষা করে চলছে ধান ক্ষেতের পরিচর্যা। ধান ক্ষেত লকলকিয়ে বাড়ছে। কোথাও কোথাও থোড় গজাচ্ছে। বর্গাচাষি মহিম তপন বলেন, এবার আবাদের শুরু থেকে আবহাওয়া বৈরী। অন্য বছর মাঘ-ফাল্গুনে বৃষ্টিপাত হয়। সেই পানিতে তৈরি হয় বোরোর বীজতলা। এবার তেমনটি হয়নি। ফলে বীজতলা তৈরি করতে নির্ভর করতে হয়েছে সেচের পানির ওপর। ফাল্গুনের শেষ থেকে প্রকৃতিতে আগুনঝরা শুরু হয়েছে। চৈত্রে এসে তাপমাত্রা উঠেছে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে। ফলে জমিতে টান ধরেছে। এরপর গরম বাতাস পরিস্থিতিকে আরো অসহনীয় করে তুলেছে। এদিকে গত ৪ এপ্রিল মৌসুমের প্রথম ঝড়ো হাওয়া বয়ে যায়। কোথাও ধূলিঝড়, আবার কোথাও শিলাবৃষ্টি হয়। এতে ফসলের উপকারের চেয়ে ক্ষতি হয়েছে বেশি।
বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, আবাদ করতে হলে সেচ দিতে হবে। তাও আবার ভূগর্ভস্থ থেকে পানি তুলে। ফলে পানি তোলার চাপ বেশি হচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় সে হারে পানি পুন:ভরণ হচ্ছে না। ফলে পানির স্তর দ্রুত নিচে নামছে। বাধ্য হয়ে অনেক গভীর নলকূপ বন্ধ করা হয়েছে। নতুন করে আর কোনো গভীর নলকূপ বসানো হচ্ছে না। জাতীয় পানি সম্পদ ব্যবস্থপনা কমিটির সদস্য ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রো-ভিসি ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. চৌধুরী সারওয়ার জাহান যিনি বরেন্দ্র অঞ্চলে পানির স্তর নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন। ইনকিলাবের সাথে আলাপকালে জানান, বরেন্দ্র অঞ্চলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর দ্রুত নিচে নেমে যাওয়া দুশ্চিন্তার কারণ । ১৯৮০ সালে এ অঞ্চলে পানির স্তর মাত্র ৩৯ ফুট নিচে ছিল। তবে ৩৬ বছরের ব্যবধানে ২০১৬ সালে ১১৮ ফুট নিচে নেমে গেছে। ১০০ থেকে ১৫০ ফুট নিচে পাতলা একটা পানির স্তর পাওয়া যাচ্ছে। দেশের গড় বৃষ্টিপাত ২ হাজার ৫০০ মিলিমিটার হলেও এ এলাকায় গড় বৃষ্টিপাত মাত্র ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ মিলিমিটার। বৃষ্টিপাতে ভূগর্ভস্থ পানির গড় পুনঃভরণের হার দেশে ২৫ শতাংশ হলেও এ অঞ্চলে মাত্র ৮ শতাংশ।
বগুড়া থেকে মহসিন রাজু জানান, চলতি বছরে গত তিন মাসে মাত্র দু’দফায় ধূলি ভেজানো ১০ মিলিমিটার বৃষ্টি হওয়ায় তাতে করে বিরাজমান তীব্র খরা পরিস্থিতির কোনোই উন্নতি হয়নি। আম, লিচু ও কাঁঠালের স্বাভাবিক বৃদ্ধি থমকে আছে। স্বাভাবিক বৃষ্টি না থাকা এবং সেচের অভাবে জমিতে বোরো ধান নিয়ে কৃষকরা চিন্তিত। এমন অবস্থা যদি সপ্তাহখানেক চলে তাহলে ধানের মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যাবে। তবে বৃষ্টি না হলেও উত্তরের ওপর দিয়ে তিন দফায় ঝড় ও শিলাবৃষ্টির ঘটনায় ব্যাপক ফসল নষ্ট হয়েছে।
ময়মনসিংহ থেকে মো: শামসুল আলম খান জানান, টানা রবি মৌসুম জুড়ে অনাবৃষ্টি, খরা আর অতিমাত্রায় সূর্যের প্রখরতা দিন দিন বাড়তে থাকায় বোরো ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সেই সাথে গত কয়েক দিন আগে প্রকৃতিতে হঠাৎ গরম বাতাসে অতিমাত্রার হিটশকে বোরো ধানের পরাগায়ন নষ্ট হয়ে এ অঞ্চলের হাজার হাজার হেক্টর বোরো জমির অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। ধানে চিটা হবার পেছনে অন্যতম একটি কারণ হলো অসহনীয় তাপমাত্রা। তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার ওপরে হয় তবে হিটশকে ধানে চিটা হতে পারে। ধানের পরাগায়নের সময় যদি ১/২ ঘণ্টা এমন গরম বাতাস থাকে তবে ধানে চিটা হবেই। এর কারণ হলো প্রচন্ড গরম ঝড়ো বাতাসের কারণে গাছ থেকে পানি প্রস্বেদন প্রক্রিয়ায় বেরিয়ে যায়। এর ফলে গর্ভধারণ, পরাগায়ন ও চালের বৃদ্ধিতে সমস্যা হয়। গত কয়েক দিন আগে যে গরম বাতাস বয়ে গেছে, তাতে এমনটিই ঘটেছে বলে বিশেষজ্ঞরা বলছেন।
জেলা কৃষি কর্মকর্তারা জানান, এ বছর ময়মনসিংহ জেলায় দুই লাখ ৬৩ হাজার ৭৮০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছিল। ফলনও ভালো হয়েছিল। কিন্তু গত কয়েক দিন আগে হঠাৎ শিলাবৃষ্টি আর গরম বাতাসে ধানের পরাগায়ন নষ্ট হয়ে হাজার হাজার হেক্টর বোরো ধানের জমি যেন পুড়ে যাওয়া ফসলের ধ্বংসস্তুপ।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলার সদর উপজেলার চর দুর্গাপুর, চর ভবানীপুর, কোনাপাড়া, আনন্দীপুর, সিরতাসহ বিভিন্ন গ্রামের ধান নষ্ট হয়েছে। নান্দাইল উপজেলার কৃষক মানিক বলেন, ধারদেনা করে অপরের কিছু জমি চাষ করেছিলাম। প্রতি ১০ শতাংশে দুই হাজার টাকা জমির মালিককেই দিতে হবে। এখন জমির মালিককেই কী দেবো, পরিবার নিয়ে সারা বছর নিজেই কিভাবে চলব।
নেত্রকোনা থেকে এ কে এম আব্দুল্লাহ জানান, চৈত্রের গরম হাওয়ায় পুড়ে গেছে হাওর অঞ্চলের কৃষকের স্বপ্ন। যেসব ধানের শীষ বেরুচ্ছে অথবা এখনও চাল পরিপুষ্ট হয়নি গত ৪ এপ্রিল কালবৈশাখী ঝড়ের সাথে গরম হাওয়ায় সেসব ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এই ভয়াবহ ক্ষতি কিভাবে পোষাবে তা ভেবে নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ, মদন ও খালিয়াজুড়ি থানা এলাকার হাজার হাজার কৃষক পরিবার এখন দিশেহারা। হাওরাঞ্চলে চলছে কৃষকদের বিলাপ করা কান্না।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, হঠাৎ সন্ধ্যায় প্রচন্ড গতিতে ধুলাবালিসহ ঝড়ো বাতাস শুরু হয়ে ৩-৪ ঘণ্টাব্যাপী বৃষ্টিহীন গরম বাতাসের তান্ডব চলে। মোহনগঞ্জ থানার হাটনাইয়া গ্রামের কৃষক আজহারুল ইসলাম মানিক ইনকিলাবকে বলেন, গত ৪ এপ্রিল নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ, মদন ও খালিয়াজুড়ি থানার বিশাল হাওর এলাকায় গরম ঝড়ো বাতাস হয়। ওই বাতাসের পর হাওরের হাজার হাজার হেক্টর জমির নতুন ধান নষ্ট হয়ে যায়। স্থানীয়ভাবে বলা হয় চুচা। স্থানীয় লোকজন এটিকে আল্লাহর গজব বলে উল্লেখ করছেন। এ ধরনের ঘটনা গত ৭০ বছরেও কেউ দেখেনি বলে উল্লেখ করেন তিনি। তিনি আরো বলেন, মোহনগঞ্জ ৭টি ইউনিয়নের ছোট-বড় প্রায় ২০-২৫ হাওরের ব্রি-২৯ জাতের ধানি জমির ৭০ ভাগ ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে যেসব জমিতে আগে ধান চাষ করা হয়েছে তার তেমন ক্ষতি হয়নি। সেই সব জমির মধ্যে কিছু জমির ধান এখন কাটা শুরু হয়েছে।
মদনের তিয়শ্রী ইউনিয়ের বাগজান গ্রামের কৃষক আবুল মিয়া, খালিয়াজড়ি উপজেলার মেন্দীপুর গ্রামের আরিফ মিয়া ও মদনের ব্যবসায়ী আবুল হাসনাতসহ অনেকেই জানান, হাওরের এক ফসলি বোরো জমির ফসল দিয়ে সারা বছর পরিবার নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করি। রোববার বিকেল থেকে রাত পযন্ত কয়েক ঘণ্টার গরম বাতাসে অধিকাংশ জমির সব ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। ঋণ করে জমিতে ফসল উৎপাদন করেছিলাম। এখন সারা বছর খাব কী আর কী দিয়ে ঋণ পরিশোধ করব।
কিশোরগঞ্জ থেকে এ কে নাসিম খান জানান, কিশোরগঞ্জের বিশাল হাওর এলাকায় কৃষকের মুখে হাসি নেই। কারণ সম্প্রতি কিছুক্ষণের আচমকা গরম বাতাসের ঝড়ো প্রবাহের কারণে বিপুল পরিমাণ বোরো ফসল নষ্ট হওয়ায় অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ নিয়ে কৃষকের মনে ভর করেছে শঙ্কার কালো মেঘ। কিশোরগঞ্জের জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের দেয়া তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে জেলায় এক লাখ ৬৬ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। কিন্তু চলতি এপ্রিল মাসের ৪ তারিখ সন্ধ্যার পর টানা সাড়ে তিন ঘণ্টা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যায়। বয়ে যাওয়া প্রচন্ড গরম তাপমাত্রার কারণে ফলে বোরো ধানের প্রস্ফুটিত শীষ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে নষ্ট হয়ে চিটায় পরিণত হয়েছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের প্রাথমিক হিসাবে এ কারণে প্রায় ২৫ হাজার হেক্টর জমির বোরো ধান নষ্ট হয়ে গেছে।