কসবায় ব্রীজের নীচের সরকারী জায়গার মাটি বিক্রি করে ফেলায় ঝুঁকিতে রয়েছে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের কালামুড়িয়া সেতু

ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার বুড়ি নদীর উপর কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের কালামুড়িয়া সেতুর নীচে মাটি উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। ঝুঁকিপূর্ন হয়ে উঠেছে সেতু ও মহাসড়ক। স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়াই চলছে এ অরাজকতা। সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার লেশিয়ারা গ্রামের জসিম উদ্দিন নামক এক বালি ব্যবসায়ী গত প্রায় এক বছর যাবত সড়ক ও সেতুর আশে পাশে সড়ক ও জনপথ বিভাগের জায়গা থেকে মাটি উত্তোলন করে বিক্রি করে। স্থানীয় লোকজন জানায় নদীর উত্তর পাশটি কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা অন্যদিকে ব্রীজের দক্ষিন পাশটি হলো ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলা। ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার সওজের জায়গা ছাড়াও প্রায় দশ একর খাস জায়গা থেকে ভেকু ও ড্রেজার দিয়ে মাটি উত্তোলন করে জসিম বিক্রি করেছে। কসবা উপজেলার সেতুর দক্ষিন অংশ থেকে বর্তমানে জসিম দেদারসে মাটি বিক্রি করছে। অপরদিকে কালামুড়িয়া গ্রামের হানিফ মিয়া নামক অপর এক ব্যক্তি সেতুর দক্ষিন অংশের পূর্ব পাশ থেকে ভেকু দিয়ে মাটি উত্তোলন করতে দেখা যায়। এ প্রতিবেদকের উপস্থিতি টের পেয়ে ভেকু চালক ভেকু থেকে নেমে অন্যত্র সরে গিয়ে বিশ্রাম নিতে থাকে। অপরদিকে মাটি নিতে আসা ট্রাক্টর এবং ট্রাকগুলো দ্রুত সরে যায়। হানিফ মিয়া বলেন, জসিম মাটি বিক্রি করলে সে বিক্রি করতে পারবেনা কেন ? তার দাবী জসিম এক সরকারী দলের এক নেতার ছত্রছায়ায় থেকে এভাবে মাটি বিক্রি করে সড়ক ও জনপথের সেতুকে ঝুঁকিপূর্ন করে তুলেছে। আমিতো সওজের সীমানার বাহির থেকে মাটি উত্তোলন করছি। হানিফ জানায়; এই জসিম কোটি টাকার মাটি বিক্রি করেছে। কিন্তু সরকার তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের সেকশন অফিসার আবু তাহের গত ১৫ এপ্রিল জানান, বিষয়টি তিনি ওইদিনই দেখে ব্যবস্থা নেবেন। কিন্তু গত ১৭ ও ১৮ এপ্রিল তাকে বার বার তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্ট্রা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। মাটি উত্তোলনকারী জসিম উদ্দিনের সংগে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে সে জানায়, সে মাটি ব্যবসা করেনা। যারা মাটি উত্তোলন করে বিক্রি করে তাদেরকে জিজ্ঞাসা করেন। কুটি ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান মো.উজ্জল মিয়া জানায়; জসিম সওজ ও খাস সম্পত্তির মাটি বিক্রি করার ফলে কালামুড়িয়া ব্রীজ ও মহাসড়কটি ঝুঁকিতে রয়েছে। যে কোনো সময় বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। তিনি দুঃখ করে বলেন; এসমস্ত অবৈধ কাজে সওজের লোকজন জড়িত রয়েছে। তাদের নিকট অভিযোগ দিলেও এরা কোনো প্রতিকার করেনা। স্থানীয় কৃষক আবদুর রশিদ, নিয়ামত উল্লাহ জানান; এসকল মাটি ব্যবসায়ীরা বুড়ি নদীর দুপাড়ের মাটিও কেটে বিক্রি করে ফেলায় দুপাশের জমিগুলো পাহাড়ী ঢলে প্লাবিত হয়ে ফসলহানীর আশংকা রয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ উল আলমের সংগে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান; এ বিষয়ে তিনি অবগত নন। তবে এ বিষয়ে খোজঁ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন। এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর পংকজ কুমার দে’র সংগে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন; মাটি উত্তোলনের বিষয়টি আমি অবগত নই। আমি তদন্ত করে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।

Leave a Reply

Your email address will not be published.