লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি ॥ লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে পারিবারিক কলহের জের ধরে তাহমিনা আক্তার নামে এক গৃহবধূর বিরুদ্ধে শাশুড়ি রহিমা বেগমকে (৬০) শ্বাসরোধ করে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার দুপুরে রহিমার স্বামী আবু তাহের বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় অভিযুক্ত তাহমিনাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এর আগে বুধবার রাতে রামগঞ্জ উপজেলার ইছাপুর ইউনিয়নের রাঘবপুর গ্রামের নতুন মসজিদ বাড়িতে এ হত্যার ঘটনা ঘটে। গত বৃহস্পতিবার সকালে রহিমার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
ঘটনাস্থল থেকে অভিযুক্ত তাহমিনাকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। গ্রেপ্তার তাহমিনা উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের সাউধেরখীল গ্রামের মফিজুল ইসলামের মেয়ে। খবর পেয়ে ভোরে সহকারী পুলিশ সুপার (রায়পুর সার্কেল) স্পিনা রানী প্রামানিক ও রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। স্থানীয় সূত্র জানায়, পুত্রবধূ তাহমিনা ও শাশুড়ি রহিমা বেগমের দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক কলহ চলে আসছে। এতে তারা একই ঘরে থাকলেও আলাদা রান্না করতেন। আলাদা খেতেন। এসব নিয়ে তাদের ঝগড়া লেগেই থাকতো। প্রবাসী ছেলে হুমায়ুন কবির (তাহমিনার স্বামী) বাবা-মায়ের জন্য টাকা পাঠাতেন না। এতে জীবীকার তাগিদে বাধ্য হয়ে বৃদ্ধ বয়সে আবু তাহের ঢাকার একটি বেকারিতে চাকরি নেন।
গত বুধবার রাত ১০টার বউ-শাশুড়ির মধ্যে ঝগড়া হয়। প্রতিদিনকার মতো কলহভেবে কেউই ঘটনাটি পাত্তা দেয়নি। হঠাৎ ভোররাতে নিস্তব্দতা ও বসতঘরের দরজা বন্ধ থাকায় বাড়ির লোকজনের কাছে বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হয়। এতে ঘরের সামনে গিয়ে ডাকাডাকি করলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। একপর্যায়ে জানালা দিয়ে ঘরের ভেতর তাকালে দেখা যায় রহিমা বেগম খাটে ও তাহমিনা মেঝেতে পড়ে আছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পৌঁছে রহিমা বেগমের লাশ ও অচেতন অবস্থায় তাহমিনাকে উদ্ধার করে। রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, হত্যার ঘটনায় মামলা নিহতের স্বামী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সৌপর্দ করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে রহিমাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। তবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মূল ঘটনা বলা যাবে।