সাংবাদিক দীপক চৌধূরী বাপ্পীর মিথ্যা বক্তব্য প্রত্যাহার করতে কসবা উপজেলা চেয়ারম্যানের আল্টিমেটাম

ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ ৪৮ ঘন্টার মধ্যে সাংবাদিক দীপক চৌধুরী বাপ্পীর মিথ্যা বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে কসবা উপজেলা চেয়ারম্যান এডভোকেট রাশেদুল কাওসার ভ’ইয়া জীবন আল্টিমেটাম দিলেন। অন্যথায় ওই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। গত বুধবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের কাছে এ ঘোষনা দিনে তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা চেয়ারম্যান বলেন; গত ২০ মার্চ সকালে কোনো প্রকার অনুমতি না নিয়ে উপজেলার বাদৈর গ্রামে এক ইসলামী সম্মেলনের আয়োজন করে। সেখানে আমাকে প্রধান অতিথি ও হেফাজত নেতা বিতর্কিত মূফতি মামুনুল হককে প্রধান বক্তা হিসেবে দেখিয়ে এলাকায় ব্যাপক পোষ্টারিং ও মাইকিং করতে থাকে। ১৭ মার্চ খবর পেয়ে আমি বাদৈর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সেক্রেটারী শিপন আহাম্মদ ভ’ইয়া ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাজী আবু জামাল উদ্দিনের মাধ্যমে আয়োজকদের ডেকে আনি এবং তাদের বিতর্কিত অনুষ্ঠান বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেই। কারন এর পূর্বে মামুনুল হকের উস্কানীমুলক বক্তব্যে শাল্লা ও দিরাইতে হিন্দু বাড়িঘর ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগে পুরো বাংলাদেশে সমালোচনার ঝড় উঠে। পরদিন ১৮ মার্চ বিকাল থেকে রাত অবধি উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে আয়োজকদের সাথে প্রশাসনের প্রায় তিন ঘন্টাব্যাপী বৈঠকে ইসলামী সম্মেলন স্থগিত করা হয়। এবং মামুনুল হককে কসবায় আসতে নিষেধ করা হয়। কিন্তু মামুনুল হক গোপনে বাদৈর থেকে তিন কিলোমিটার দুরে শ্যামবাড়ী গ্রামের কামাল উদ্দিন দায়েমির বাড়ির উঠানে বয়ান দেন। সেখানে আমাকে উদ্দেশ্য করে মামুনুল বাজে মন্তব্যও করেছে। যা দেশের জাতীয় ও আঞ্চলিক পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।
গত ২৭ ও ২৮ মার্চ বাংলাদেশে স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আসাকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজত যে তান্ডব চালিয়েছে তা ১৯৭১ সালের ঘটনাকেও হার মানিয়েছে। আমরা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছি যা পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া সারা কসবায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও সাধারন মানুষকে নিয়ে কসবা উপজেলার সকল সড়ক পথে ব্যরিকেড দিয়ে হেফাজতকে প্রতিহত করেছি। অথচ ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারন সম্পাদক দীপক চৌধূরী বাপ্পী সময় টিভির অনলাইন পোর্টালে সাক্ষাতকারে বলেছেন আমি নাকি হেফাজতকে আশ্রয় দিয়েছি এবং হেফাজতের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হয়েছি। এমন নির্জলা ডাহা মিথ্যা কথা বলে তিনি আমাকে জাতির সামনে হেয় করেছেন এবং আমার রাজনীতি কর্মকান্ডকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। এতে আমি সংক্ষুব্দ হয়েছি । আমার এলাকার মাননীয় সংসদ সদস্য ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হকও মারাত্মক ব্যথিত হয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বায়েক ইউপি চেয়ারম্যান আল মামুন ভ’ইয়া, বাদৈর ইউপি চেয়ারম্যান হাজী আবু জামাল খান, পৌর কাউন্সিলর মো.আবু জাহের, উপজেলা যুবলীগ সভাপতি এমএ আজিজ, সাধারন সম্পাদক মো.শফিকুল ইসলাম সরকার, উপজেলা ছাত্রলীগ যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মানিক, উপজেলা ছাত্রলীগ সাবেক সাধারন সম্পাদক মো.এমদাদুল হক পলাশ, সাবেক উপজেলা ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি মো.ইব্রাহীম সহ দলীয় নেতাকর্মীগন উপস্থিত ছিলেন।
এ প্রসংগে সাংবাদিক দীপক চৌধুরী বাপ্পীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন; সময় টিভির অনলাইন সাক্ষাতকারে যথাযথ বক্তব্য প্রদান করেছি। হেফাজতের সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপজেলা চেয়ারম্যান এডভোকেট রাশেদুল কাওসার ভূইয়া জীবন থাকার বিষয়টি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করা হলে প্রশাসন ওই ইসলামী সম্মেলন স্থগিত করেন। আমার বক্তব্য প্রত্যাহার করার কোনো প্রশ্নই উঠেনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published.