আইসিইউয়ের ভেতর ৬ করোনা রোগীর মরদেহ, উধাও চিকিৎসক-নার্সরা

আন্তজার্তিক ডেক্স ॥ হাসপাতালে নেই কোনও চিকিৎসক, নার্স। ভারতের গুরুগ্রামের হাসপাতালে দেখা মেলেনি কোনও কর্মীরও। অগত্যা করোনা আক্রান্ত রোগীর পরিবারের আত্মীয়রা হাজির হন বন্ধ আইসিইউয়ের সামনে। এরপর ভিতরে ঢুকতেই সকলেই হতবাক। অন্তত ৬ জন করোনা রোগী আইসিইউতেই মরে পড়ে রয়েছেন।
গত শুক্রবার ঘটনাটি ঘটে গুরুগ্রামের কৃতি হাসপাতালে। সেদিনই এই ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয়। সূত্রের খবর, রোগীরা অক্সিজেনের অভাবে মারা গেছেন। তার মধ্যে তিনজন ভর্তি ছিলেন আইসিইউতে। ভাইরাল হওয়া সেই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রোগীর আত্মীয়রা হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ছুটে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু চিকিৎসক, নার্স বা কর্মীদের দেখা নেই। ভিডিওতে একজনকে বলতে শোনা গেছে, “চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মী কারও দেখা মেলেনি। রিসেপশনেও কেউ নেই। এমনকি নিরাপত্তারক্ষীরও খোঁজ মেলেনি।” এমনকি রোগীর আত্মীয়দের তরফে পুলিশের কাছে বলতেও শোনা যায়, “কীভাবে আপনারা চিকিৎসকদের চলে যেতে দিলেন। যেখানে রোগীরা রয়েছেন। যারা নিজেদের আপন কাউকে হারান, তারাই একমাত্র বোঝেন।”
রোগীর পরিজনদের দাবি, অক্সিজেনের অভাব হতেই চিকিৎসক, নার্স সহ হাসপাতাল কর্মীরা পালিয়েছেন। অক্সিজেনের ঘাটতি নিয়ে মৃত রোগীর পরিবারের এক সদস্য বলেছেন, “তিনি নিজে ভাগ্নের জন্য তিন সিলিন্ডার অক্সিজেন জোগাড় করে এনেছিলেন। কিন্তু কয়েক মিনিটের মধ্যে তা শেষ হয়ে যায় এবং মৃত্যু হয়।” আর একজন বলেছেন, “আমার ভাই সম্পূর্ণ সুস্থ ছিল। কিন্তু আচমকাই শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। অক্সিজেনের অভাবেই সে মারা গেছে।”
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চিকিৎসকেরা হাসপাতালেই ছিলেন। কিন্তু প্রাণ ভয়ে ক্যান্টিনে লুকিয়ে ছিলেন। হাসপাতালের ডিরেক্টর স্বাতী রাঠোর বলেন, “ঘটনার দিন দুপুর ২ টো নাগাদই সকল সরকারি কর্মকর্তাদের অক্সিজেনের অভাবের কথা জানানো হয়েছিল। সেদিনই অক্সিজেন ফুরিয়ে যাবে বলেও বলা হয়েছিল।” তিনি আরও বলেন, “অক্সিজেনের অভাবের কথা জানিয়ে দুপুরে সময়ই আমরা রোগীর পরিবারদের অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার কথা বলি। কিন্তু কোথাও থেকে কোনও সাহায্য পাইনি। রাত ১১ টা নাগাদ ছয়জনের মৃত্যু হয়।” এরপরই রোগীর পরিজনের ক্ষোভের হাত থেকে বাঁচতে ক্যান্টিনে লুকিয়ে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়। কারণ এর আগে গত ২৪ এপ্রিলও রোগীমৃত্যুর কারণে স্বাস্থ্যকর্মীদের মারধর করা হয়েছিল। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছাতেই চিকিৎসক, নার্সা তাদের কাজে ফিরে যান বলে জানান তিনি। গুরুগ্রাম প্রশাসনের দাবি, ওই হাসপাতালটি কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসার জন্য নয়। তাই ঘটনার তদন্ত করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.