কসবার বায়েকে পারভেজ-রিফাত বাহিনীর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন আইনমন্ত্রী ও মহা-পুলিশ পরিদর্শকের হস্তক্ষেপ কামনা

ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ কসবায় বায়েক ইউনিয়নের মাদক ও হোন্ডা চোরাকারবারীদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে সীমান্ত এলাকার নিরীহ সাধারণ মানুষ। গৌরাঙ্গলা গ্রামের একটি পরিবার প্রতিকার চেয়ে থানায় অভিযোগ দিলেও পুলিশ ঘটনার এক সপ্তাহেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে গত ৩০ মে বিকেলে হরিপুর বাজারে স্থানীয়রা সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও পুলিশ মহাপরিদর্শকের দৃষ্টি আকর্ষন করেন। সংবাদ সম্মেলনে গৌরাঙ্গলা গ্রামের সীমান্তবর্তী মুদি দোকানী ইমন মিয়া জানায় গত ২২ মে সকালে বায়েক ইউনিয়নের নয়নপুর এলাকার হোন্ডা ও মাদক চোরাকারবারী রিফাত, পারভেজ, দেলোয়ার, রাসেল সহ ১৫/২০ জন যুবক রাত ৮টায় আমার দোকানের সামনে ভারতীয় এক চোরাকারবারীর সঙ্গে ঝগড়াঝাটি শুরু করে। এমতাবস্থায় আমি আমার দোকানের সম্মুখ থেকে অন্যত্র সরে যেতে বলি। কারণ বিজিবি আমার দোকানের সামনে বহিরাগতরা আড্ডা দিলে গালমন্দ করে। এমতাবস্থায় ভারতীয় চোরাকারবারী পালিয়ে গেলে এ সকল সন্ত্রাসীরা তাঁকে ও তাঁর বাবা বিল্লাল মিয়াকে জোরপূর্বক তোলে নিয়ে নয়নপুরে একটি বাড়ির নির্জন কক্ষে নিয়ে যায়। সেখানে আমাদের দু’জনকে শারীরিক নির্যাতন করে। ভারতীয় চোরাকারবারীদের কাছে এরা তিনলাখ টাকা পায়। ওই টাকা আমাদের পরিশোধ করতে অমানবিক নির্যাতন করে। ওই রাত ২টা পর্যন্ত আমাদের কাছ থেকে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেয় এবং স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী রেকর্ড ধারণ করে। খবর পেয়ে আমার চাচা টেইলার মাষ্টার স্বপন মিয়া রাত ২২ মে রাত দুইটায় তাদের ছেড়ে দেয়।এ ঘটনায় তাঁরা থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও গত ১ সপ্তাহেও কোনো প্রতিকার না করায় তাঁরা প্রাণভয়ে অস্থির। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আল মামুন ভুইয়া, গৌরাঙ্গলা গ্রামের আক্তার মেম্বার বলেন; এ ঘটনা আমাদের জানিয়েছে। আমরা উপজেলা চেয়ারম্যানকে জানাতে বলেছি।উপজেলা চেয়ারম্যান রাশেদুল কাওসার ভুইয়া জীবন বলেন; এ ঘটনাটি সত্য বলে আমাকে গ্রামের লোকজন জানিয়েছে। আমি আইনগত ব্যবস্থা নিতে বলেছি। এখনো পুলিশ কেন ব্যবস্থা নেয়নি বিষয়টি আমার বোধগম্য হচ্ছে না।
গত ৩০ মে হরিপুর বাজারে কয়েকশত মানুষ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকেন এবং এর প্রতিকার চান। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকা বাংলাদেশ কৃষকলীগ কসবা উপজেলা শাখার যুগ্ন-আহবায়ক কুদ্দুছুর রহমান, সমবায় নেতা মোখলেছুর রহমান, সোহরাব হোসেন বলেন; আমরা ভারতের পকেটে বাস করি। পকেটের মুখে যারা আছে তাদের কাছে আমরা জিম্মি। স্বেচ্ছসেবকলীগ কসবা উপজেলা শাখার যুগ্ন আহবায়ক সংস্কৃতি কর্মী আবুল কালাম আজাদ বাপ্পী বলেন; মাদক ব্যবসায়ী ও হোন্ডাচোররা আমার ভাইকেও হত্যা করেছে। খুনীরা জামিন নিয়ে বুক উঁচিয়ে পুরনো অপকর্মে জড়িত। এসকল হোন্ডাচোর ও মাদক ব্যবসায়ীদের জরুরী আইনের আওতায় আনা দরকার। ফরিদ মিয়া জানান; ভারতের পকেটে বাস করলেও সালদা গ্যাস ফিল্ডসহ পুরো এলাকা খনিজ সম্পদে ভরপুর। কিন্তু এখানকার মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নেই। খোঁজ নিয়ে জানা যায়; পারভেজ রিফাত, দেলোয়ার, রাসেলসহ এ সকল চোরাকারবারী ও হোন্ডাচোর ছাত্রদল ও যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এরা ভারত বাংলাদেশের মাদক ব্যবসায়ী ও হোন্ডাচুরির সিন্ডিকেটের হোন্ডাকারারদের সন্ত্রাসী বাহিনী হিসেবে চিহ্নিত। কসবা থানা অফিসার ইনচার্জ মো. আলমগীর ভূইয়া বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়ে গত ২৩ মে এএসআই মনিরকে দায়িত্ব দিয়েছিলাম। সে এ বিষয়ে সঠিক তদন্ত করতে না পারায় গত এসআই আনোয়ারকে দায়িত্ব দিয়েছি। তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা এস আই আনোয়ার হোসেন জানান; আমি ঘটনার সত্যতা পেয়েছি এবং বিষয়টি ওসি মহোদয়কে জানিয়েছি। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের এখতিয়ার থানার অফিসার ইনচার্জের।

Leave a Reply

Your email address will not be published.