কসবায় ধর্ষনের বিচার চেয়ে ; বাদিনী ও ভিকটিম গ্রামছাড়া

ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ কিশোরী কন্যার ধর্ষনের বিচার চেয়ে মামলা করায় বাদিনীকে গ্রাম থেকে বের করে দিতে চাচ্ছে মোড়লরা। রাত হলে বখাটেরা তার ঘরে ঢিল ছুড়ে আতংক সৃষ্টি করে। প্রাণের ভয়ে ওই ধর্ষিতা কিশোরী ও তাঁর মা এলাকা ছেড়ে অন্যত্র রাত যাপন করে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধায় ধর্ষিতা কিশোরীর মা এ প্রতিবেদককে জানায়, মামলার তদন্ডকারী কর্মকর্তা সাব ইন্সপেক্টর ইফতেখার আলম তাঁকে বলেছেন হুমকীদাতাদের বিরুদ্ধে জিডি বা মামলা করার দরকার নেই। দ্রুত চার্জসিট দিয়ে দেয়া হবে। ধর্ষিতা কিশোরীর মা জানায় তাঁর মেয়েকে যারা তোলে নিয়ে ধর্ষন করেছে এরা সকলেই মাদক ব্যবসায়ী। এদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে মাদক পাচারের মামলা রয়েছে। এরা টাকা দিয়ে গ্রামের প্রভাবশালীদের মাধ্যমে চাপ সৃষ্টি করছে আমি যাতে গ্রামের বিচারে বসি। না হয় আমকে গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে হবে। অন্যথায় বাড়ি পুঁড়িয়ে দেয়ারও হুমকী দিচ্ছে।
উল্লেখ্য গত ২৬ মে রাতে কসবা উপজেলার সীমান্তবর্তী একটি গ্রাম থেকে মোবাইল ফোনে প্রেমের অভিনয় করে ১৪ বছরের এক কিশোরীকে ইমুশন্যালি ব্ল্যাক মেইলিং করে ঘর থেকে বের করে মুখে কাপড়চাপা দিয়ে ৩ যুবক তাঁকে উঠিয়ে নিয়ে যায়। পরে কসবা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামের মিন্টু মিয়ার পুত্র কথিত প্রেমিক সাইফুলের বাড়িতে নিয়ে সাইফুল জোর পূর্বক ধর্ষন করে। এরপর সাইফুলের বন্ধু দুজন নোয়াগাঁও গ্রামের আজিজুল হকের পুত্র খোকন (৩২) ও হরিয়াবহ গ্রামের হাসেম মিয়ার পুত্র শামিম (৩৬) ধর্ষনের চেষ্ট্রাকালে সে দৌড়ে পালাবার চেষ্ট্রা করে। পরে এ দুজন তাঁকে জোরপূর্বক গভীর রাতে মোটর সাইকেলে করে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার সময় বিজিবি টহলরত সদস্যদের দেখে চিৎকার করলে খোকন ও শামিম বাইক ফেলে দৌড়ে পালায়। পরে বিজিবি ওই কিশোরীকে মোটরসাইকেলসহ স্থানীয় ইউপি সদস্য হরমুজ আলীর কাছে পৌঁছিয়ে দেয়।
পরদিন থানায় মামলা হয় এবং তাঁর ডাক্তারী পরীক্ষাসহ বিজ্ঞ আদালতে তাঁর জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায় এই তিন দুর্বৃত্ত সকলেই গাজা ও ইয়াবা ট্যাবলেট ব্যবসায়ী। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে কসবাসহ বিভিন্ন থানায় মাদক চোরাচালানের মামলা রয়েছে।
এ বিষয়ে বড়ঠোটা গ্রামের হরমুজ আলী মেম্বারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান; ধর্ষিতার মা ও মামলার বাদিনীকে যদি কেউ হুমকী ভয়ভীতি দেখায় তাহলে আমাকে জানানো উচিত। একই কথা বলেন; সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ মোর্শেদ। তাঁরা এ বিষয়ে কিছুই জানেন না।
সীমান্তবর্তী গোপীনাথপুর ইউনিয়নের একাধিক ব্যক্তি জানান, এ সকল মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কথা বলার শক্তি কারো নেই। আর যেকোনো সময় অঘটন ঘটাবার ক্ষমতা রাখে।
এ বিষয়ে এস.আই ইফতেখার আলম সাংবাদিকদের জানান, ভিকটিমের পরিবারকে হয়রানী করার চেষ্ট্রা করলে এর প্রমাণ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কসবা থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আলমগীর ভুইয়া বলেন; বর্তমানে তদন্ত কর্মকর্তা ছুটিতে রয়েছে। তিনি আসার পর কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.