শান্তি কে না চায় কিন্তু কে পায় বা পেয়েছে এটাই জানার আকাঙ্খা এখন সকলের। শান্তি নিয়ে কাজ করছে বিশ্বে লক্ষকোটি প্রতিষ্ঠান এবং এর সঙ্গে যুক্ত লক্ষ কোটির চেয়েও বেশী মানুষ। শান্তি নিয়ে আবার সুনাম অর্জনকারী সংস্থা হিসিবে কাজ করছে জাতিসংঘে শান্তি রক্ষা মিশন। কিন্তু প্রকৃত শান্তি নিয়ে কাজ করছেন কয়জন? যে শান্তি বিনামূল্যের, নিশ্চয়তার, নিরাপত্তার এবং সর্বোপরী সার্বজনীন কল্যান সাধনের। তবে শান্তি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে নি;শর্ত এবং বিনামুল্যে তিনি কে জানেন? অথবা তাঁর কি পরিচয় জানেন? হয়তোবা জানি অথবা নজানি; কিন্তু জানার চেষ্টায় অব্যাহতভাবে নিয়োজিত আছি কিনা সেটা এখন ভেবে দেখার বিষয়। সৃষ্টিকর্তাই শান্তিরাজ এবং তিনি নিজেই পৃথিবীতে শান্তিরাজকে পাঠিয়েছেন এবং সেই শান্তি বিলিয়ে দিয়েছেন যা এখনও দিয়ে যাচ্ছেন। আমরা কি সেই প্রকৃত এবং খাঁটি ও নিখুত বিনামূল্যের শান্তির সন্ধানে অনুসন্ধিৎসু মনে এগিয়ে যাচ্ছি। যদি হ্যা হয় তাহলে অতি উত্তম আর যদি না হয় তাহলেও উত্তম কারণ শান্তি ধ্বংসের লক্ষ্যেই শয়তান তাঁর বাহিনী কর্মে নিয়োজিত রেখেছেন। আর সেই শয়তানের বাহিনীর একজনতো হয়েছেন বটে।
শান্তি নিয়ে কথা বলার আগে পৃথিবীর দিকে তাকিয়ে অসহায়ত্ব অনুভব করেছি এবং কোথায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা নেই দেখে হতাশ হচ্ছি। কারণ শান্তি ও স্থিতিশীলতা আছে এবং উপভোগ করা যায় কিন্তু আমরা আহাম্মকের ভুমিকায় অবতীর্ণ হয়ে সেই শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে বিনষ্ট করছি প্রতিনিয়ত। জাগতিকতা, মোহ ও লোভ আমাদেরকে চিরস্থায়ী শান্তি এবং স্থিতিশীলতা থেকে দুরে ঠেলে দিচ্ছে। সৃষ্টিকর্তায় কোন ধর্ম ইেন; তিনি কোন ধর্মের আবরণে বন্ধিও নন। তিনি সকলেরই রব; তিনি সকলকেই বৃষ্টি দেন, সুর্য উদিত করে আলো দেন এমনকি প্রয়োজনীয় যোগান দিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে সাহায্য করেন। আসুন সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্যে থেকে চিরস্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতা উপভোগে মনযোগী হই। হতাশ হওয়ার কিছু নেই বরং তিনি হতাশার মাঝেই শান্তি ও স্থিতিশীলতা, নিশ্চয়তা ও নিরাপত্তা দিয়ে পূর্ণ শান্তি উপভোগে সহায়তা করেন। আমাদের আগামীর জন্য সৃষ্টিকর্তাই যথেষ্ট, তাই সৃষ্টিকর্তাতে নিমজ্জ্বিত হউন।
পৃথিবীতে শান্তি নিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে কাজ হচ্ছে এবং শান্তির পুরস্কার কেউ কেউ ঘরে তুলেছে আবার কেউ কেউ শান্তি নিয়ে বিভিন্ন স্তরে বা পর্যায়ের অবস্থানে আসীন হয়েছেন। কিন্তু আসলেই এই শান্তি কতটুকু স্থায়ী অথবা স্থায়ী শান্তির জন্য বা শান্তির স্থায়ীত্বের জন্য কেউ কি কাজ করে যাচ্ছেন? আশার বাণী হলো সকল প্রতিবন্ধকতা এবং নৈরাজ্যের মাঝেও বাংলাদেশ শান্তিতে পার্শ্ববর্তী দেশগুলো থেকে এগিয়ে। মোট কথা আমাদের দেশে এখন সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত শান্তির পায়রা উড়ছে আর কেউ কেউ সেই উড়া পায়রার গতিকে বাধাগ্রস্থ করে যাচ্ছে। আসুন আমরা মনযোগী হয়ে ঐ বাধাগুলিকে অপসারন করি। দেশে অশান্তির হাজারো দৃষ্টান্তের মাঝে একটি অদৃশ্য ফাকা বুলি এবং সেই বুলিতে ভয়ের তান্ডব প্রতিনিয়ত মানবকুলকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। কিন্তু সেই তান্ডবকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর পথে অগ্রসর হতে হলে সাহস এবং শান্তিরাজের অভয় বাণীর নিশ্চয়তা নিয়ে এগুতে হবে। কিন্তু সেই পথে এগুনোর মানুষ খুবই কম। তাই প্রকৃতির নিয়মে অথবা যুগের পরিক্রমাই শান্তি উদিত হলেও ধরে রাখার জন্য কাজ শুরু করার এখনই সময়। আসুন আমরা শান্তিরাজকে খুজি এবং সেই শান্তিরাজের অমীয় বাণীর শান্তি বিলাতে প্রস্তুতি নিয়ে অগ্রসর হই।
বিশ্বে যেহেতু শান্তির অভাব সেহেতু শান্তির বীজ বপন করতে আসুন আমাদের প্রীয় দেশ বাংলাদেশ থেকেই যাত্রা শুরু করি। আর সেই লক্ষ্যে আমাদের দেশে যেসকল প্রতিবন্ধকতা এখনও শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং উপভোগে বাধাস্বরূপ কাজ করছে সেইসকল প্রতিবন্ধকতা নিরসনকল্পে বা দূরীকরণে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করি। সরকার ও জনগণ এবং সরকার প্রধান একসঙ্গে যুক্ত হলে বাকী রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যের কাতারে এনে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজে নেমে পড়তে হবে। এখানে লক্ষ্য রাখতে হবে যে, শয়তান ঐ শান্তি প্রতিষ্ঠায় বিঘ্ন সৃষ্টি করবেই করবে; তাই চোখ কান খোলা রেখে সৃষ্টিকর্তার শক্তি ও সাহস এবং সর্বময় আশ্রয় নিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে যেতে হবে। শয়তানকে কোনরকম সুযোগ দেয়া যাবে না। খুন, ধর্ষণ, রেপ, গুম এবং দুর্বলের উপর সবলের নির্যাতন এমনকি অবৈধ টাকা উপার্জনের পথ চিরতরে বন্ধ করে শান্তি পুন:প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যারা যারা ঐসকল ঘৃণ্য কর্মে জড়িত তাদের খুজে বেড় করে সমাজে চিহ্নিত করে আলাদাভাবে সংশোধনের সুযোগ দিয়ে সুধরাতে হবে। যদি কেউ কেউ ঐ সুযোগেও নিজেকে সুধরায়নি তাহলে তাদেরকে দেশীয় আইনের আওতায় এনে পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে অগ্রসর হতে হবে। তবে বিচার করার ক্ষমতা কেউ পায়নি এমনকি কাউকে দেওয়াও হয়নি। বিচার করার একমাত্র ক্ষমতা আমাদের আল্লাহ তায়ালার কাছে। তিনিই আমাদের বিচার করবেন অথবা ক্ষমা করবেন। তাই সংশোধনে মনযোগী হউন, ক্ষমায় মনযোগী হউন; বিচার এবং ভুল ধরানোতে নয়।
পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে এমনকি বিশ্বে শান্তি বিঘ্নিত হওয়ার যে কারণগুলো রয়েছে; তারমধ্যে আবার শিক্ষাও যুক্ত। তাই শিক্ষার উদার ক্ষেত্র প্রস্তুতে মনযোগী হউন এবং সকল শিক্ষাকে চলমান রাখতে দৃশ্য এবং অদৃশ্য সকল প্রতিবন্ধকতা দুর করুন। স্ব এবং সুশিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে অগ্রসর হউন। কুশিক্ষাকে বিদায় দিয়ে সমাজে শান্তির সুবাতাস প্রবাহমান রাখুন। প্রত্যেকে প্রত্যেকের স্ব স্ব ভুমিকা পালন করলে অতিতের সেই কথার পুনরুদ্ধার হবে এবং শান্তির প্রথে বাংলাদেশ এগিয়ে কথাটিও স্বার্থকথায় পর্যবসিত হবে। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে শান্তির অগ্রযাত্রায় নিজেকে শরীক করার উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি। জয় হউক শান্তির, স্থিতিশীলতায় পরিপূর্ণ হউক আমাদের আজকের এবং আগামীকালের শান্তি।