প্রশান্তি ডেক্স ॥ বহুল আলোচিত হলমার্ক কেলেঙ্কারির সঙ্গে সম্পৃক্ত ও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি আব্দুল মালেককে ব্ল্যাকমেইল করে কোটি টাকা চাঁদাবাজির ঘটনায় কথিত দুই সাংবাদিককে গ্রেফতার করেছে র্যাব। হলমার্ক মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি হওয়ায় মালেককে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত তারা হলেন-একটি বেসরকারি টেলিভিশনের সাংবাদিক মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন ও তার সহযোগী মোহাম্মদ আমিরুল ইসলাম। এ সময় তাদের কাছ থেকে ক্যামেরা ও একটি বেসরকারি টেলিভিশনের বুম, পাঁচ লাখ টাকা, দুইটি ব্যাংকের (৪৫ লাখ ও ৫০ লাখ টাকার) চেক উদ্ধার করা হয়। এই চক্রটি সাংবাদিকতার আড়ালে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ও অপরাধীদের টার্গেট করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিতো। বেশ কিছুদিন ধরে চক্রটি রাজধানীর উত্তরায় অপরাধ কার্যক্রম চালাচ্ছিল বলে র্যাব জানিয়েছে। গত বুধবার ( ১ সেপ্টেম্বর) বিকালে রাজধানীর কাওরান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ সব তথ্য জানান। খন্দকার আল মঈন জানান, ৩১ আগস্ট দুপুরে আব্দুল মালেককে উত্তরার একটি আবাসিক হোটেলে ডেকে নিয়ে কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে চক্র। খবর পেয়ে ওই হোটেলে অভিযান চালিয়ে মালেককে উদ্ধার করে র্যাব।
এ সময় ইকবাল হোসেন ও তার সহযোগী আমিরুল ইসলামকে আটক করা হয়। র্যাবের এই কর্মকর্তা আরও জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা মালেককে ব্ল্যাকমেইল করতে বেশ কিছুদিন ধরে তথ্য সংগ্রহ করছিল। ঘটনার দিন দুপুরে মালেক উত্তরখানে তার এক আত্মীয়র বাসায় গেলে পরিকল্পনাকারীরা সেখানে যায়। সেখান থেকে তারা মালেককে উত্তরার একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর মালেকের কাছে তারা এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা পরিশোধ না করলে তার বিরুদ্ধে হলমার্ক কেলেঙ্কারি বিষয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করার হুমকি দেয়।
আব্দুল মালেক
অভিযুক্তরা একটি চাঁদাবাজ দলের সক্রিয় সদস্য বলে স্বীকার করেছে। তাদের দলে ১০-১৫ জন সদস্য আছে বলে র্যাবকে জানিয়েছে। চক্রের সদস্যরা এলাকায় প্রাণের বাংলাদেশ, স্বাধীন সংবাদ, বিডাবি, প্রথম বেলা, ডেইলি নিউজসহ আরও কয়েকটি সংবাদপত্রের পরিচয় দিত। তারা দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর উত্তরা ও উত্তরখান এলাকায় এসব সংবাদপত্রের পরিচয় দিয়ে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ও সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে চাঁদাবাজি করে আসছিল। ইকবাল হোসেন ও আমিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় চাঁদাবাজি ও প্রতারণার মামলা রয়েছে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে র্যাব মুখপাত্র বলেন, আমরা বেসরকারি ওই টেলিভিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা জানিয়েছে- চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগে সাংবাদিক ইকবালকে কয়েকমাস আগে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।’
এই সব সাংবাদিকদের যারা নিয়োগ দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করার সুযোগ দিচ্ছে সেইসব সম্পাদক- প্রকাশক ও মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে খন্দকার আল মঈন বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এই প্রতারণার সঙ্গে যাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি যারা এই পেশাকে কুলষিত করছে তাদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।