বাআ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদে লাভবান হয় অস্ত্র ব্যবসায়ীরা। তারা অস্ত্র তৈরি করে, বিক্রি করে। সেই অস্ত্রে রঞ্জিত হয় মুসলমানের রক্ত। মুসলমানের রক্তের বিনিময়ে লাভবান হয় অস্ত্র ব্যবসায়ীরা। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গত বৃহস্পতিবার (০৬ এপ্রিল) ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ওলামা মাশায়েখ ও আলেম-ওলামাদের মহাসম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বাংলাদেশে ইসলাম ধর্ম নিয়ে ব্যবসা হয়েছে। দীর্ঘ ২১ বছর পর ক্ষমতায় গিয়ে আওয়ামী লীগ এদেশে ইসলাম ধর্মের উন্নতির জন্য অনেক কাজ করেছে বলে জানান তিনি। সন্ত্রাসবিরোধী সামরিক জোট গঠন করায় সৌদি বাদশাহকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি সৌদি আরবের পবিত্র মসজিদুল হারাম এবং মসজিদে নববির ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বিন নাসির বিন মোহাম্মদ আল খুজাইম ও মসজিদে নববির ইমাম আবদুল মেহসিন বিন মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল কাশেম বাংলাদেশের আতিথেয়তা গ্রহণ করায় তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। এই সময়ে তাঁদের এই সফর খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী জঙ্গিবাদের উত্থান প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইসলাম শান্তিতে বিশ্বাস করে। ইসলাম ধর্ম কখনো নিরীহ মানুষ হত্যা সমর্থন করে না। মুসলমান মুসলমান ভাই ভাই, তারা পরস্পরকে রক্ষা করবে। তারা কেন নিরীহ মানুষকে হত্যা করবে? জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে চলমান কঠোর ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।
জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য ওলামা মাশায়েখ ও আলেম-ওলামাদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, পবিত্র ইসলাম ধর্মকে কেউ হেয় করবে, এটা সহ্য করা হবে না। তিনি দেশের সাধারণ মানুষের মাঝে ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান তাঁদের প্রতি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিছু মানুষের জন্য ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের বিশ্বব্যাপী হেনস্তার শিকার হতে হচ্ছে। মানুষ ইসলাম ধর্মের সঙ্গে জঙ্গিবাদ জুড়ে দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। এসবের বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
আলেম-ওলামা মহাসম্মেলেন প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মহাসম্মেলনে পবিত্র মসজিদুল হারাম ও মসজিদে নববির ভাইস প্রেসিডেন্ট শায়খ মুহাম্মদ বিন নাসের আল খুজাইম ও মসজিদে নববির ইমাম শায়খ আবদুল মুহসিন বিন মুহাম্মদ আল কাসিমসহ ছয় সদস্যের সৌদি প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
আলেম-ওলামা মহাসম্মেলনকে কেন্দ্র করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ আশপাশের এলাকায় ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা নেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। দেশের প্রায় সব জেলা থেকে অসংখ্য আলেম-ওলামা সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন। এই সম্মেলনকে কেন্দ্র করে এর আশপাশের ২৫টি সড়কে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভেতরে ও বাইরে তিনটি অস্থায়ী নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক সিসিটিভি ক্যামেরা দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হয়। অনুষ্ঠানস্থলের এক কিলোমিটার দূরে বিভিন্ন ধরনের তল্লাশিচৌকিসহ আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তাবেষ্টনী গড়ে তোলা হয়।