আমাদের দেশের রাজনীতিতে একটি অতি পুরাতন সংস্কৃতির পুন:আবির্ভাব ঘটেছে এই ডিজিটাল যুগে এসে। সমস্ত কিছুই পরিবর্তন হয় কিন্তু এই বহিস্কারই শুধু অপরিবর্তীত থেকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রূপ ধারণ করে আমাদের মাঝে ফিরে আসে। রাজনীতিতে, চাকুরী ক্ষেত্রে এমনকি সামাজিক কোন সংস্থা বা সংগঠনের কাঠামোর বা প্রশাসনিক ক্ষেত্রে। যুগের সঙ্গে সব কিছুই পাল্টায় কিন্তু পাল্টালোনা শুধু বহিস্কার। আমার প্রশ্ন এখানে এই বহিস্কারেই কি সকল সমস্যার সমাধান হবে, অতীতে হয়েছিল? নাকি এর থেকে আরো গভীরতর সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে সেইদিকে একটু দৃষ্টি দিয়ে গভেষনা করে বিশ্লেষনাত্মকভাবে আগামীতে কি এই বহিস্কারকে পরিবার, সমাজ ও দেশ থেকে বহিস্কার করা যায় না! ভাবুনতো এখন এবং প্রকাশ করুন আগামীর পথ চলায় এবং কাজে।
এইতো পত্র-পত্রিকায় এমনকি মিডিয়ার কল্যানে এখন বহিস্কার ভাস্যমান ও দৃশ্যমান। কুসিক নির্বাচনে পরাজয়ের পর চুলছেড়া বিশ্লেষণ করে বহিস্কার আবিস্কার করে আমাদের মাঝে ছেড়ে দেয়া হয়েছে পুরুনোকে নতুন রূপে। এই বহিস্কার কি পুর্বেও ঘটেনি? আর যদি ঘটেই থাকে তাহলে কেন সেই থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন কোন কৌশল বা আবিস্কার যুক্ত হলো না আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে? এটাই কি আমাদের সীমাবদ্ধতা বা ব্যর্থতা। আমি কাউকে দু:খ দেয়ার জন্য এই লিখা লিখছি না বরং লিখছি আমাদের আত্মোউপলব্ধি এবং চেতনায় এমনকি কর্মকান্ডে যে সকল সমস্যা রয়েছে সেইসকল সমস্যার জন্য উত্তম পন্তাবলম্বন এখন অতি জরুরী ও সসময়ের দাবী। ভেবে দেখবেন কি? আমাদের বিজ্ঞ, প্রাজ্ঞ এবং জ্ঞান গরিমায় পরিপক্কজন?
আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানের ও জীবনের আভিজ্ঞতায় এই বহিস্কার নাটকের নেতিবাচক ফলই স্ব-চক্ষে দেখার এবং বাস্তবের ভয়ঙ্কর রূপদানের জমাটবাধা স্ফুলিঙ্গ এখন আগামীর স্বস্তীদায়ক অবস্থার বিপরীত মেরুর মেরুকরণের কামিয়াবী হাছিলের মহা সুযোগ বহন করে যাচ্ছে। এই অসম এবং নেতিবাচক বিস্ফোরণাত্মক অবস্থা থেকে উত্তরণের এখনই উপযুক্ত সময়। আসুন আমাদের নিজ নিজ সমস্যার মূলে যায় এবং সেখান গিয়ে উপযুক্ত ইতিবাচক পরিচর্যা করে দলীয় মূল ¯্রােতে মিশাতে চেষ্টা করি তাহলেই আগামীর সার্বজনীন মঙ্গলের রক্ষাকবজ হয়ে গতিশীল উন্নয়নের গতিপ্রবাহ অক্ষুন্ন থাকবে।
বহিস্কারের ফলে কি হয়-বিরোধীতা করার প্রত্যক্ষ সুযোগ তৈরী হয়। যেটা আগে ছিল অন্ধকারে সেটা এখন আলোতে চলে। আমাদের প্রয়োজন প্রত্যেককে পাশে পাওয়া এবং নতুন নতুন লোক দলের সদস্য করে দলীয় জোয়ারে কাজে লাগানো। কিন্তু বহিস্কারের ফলে কি এই মূল লক্ষ্য অর্জির্ত হয়? পাগলেও বলবে হয় না। তাহলে কেন এই বহিস্কার? যাদের জীবন, চলনে-বলনে দুর্বলতা রয়েছে এমনকি দলীয় শৃঙ্খলার নাগপাশে আবদ্ধ নয় তাদেরকে শৃঙ্খলায় ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব দলের সিনিয়রদের। এমনকি দলের মধ্যে মোটিভেটর এবং মেন্টর এই দুইটি পদ সৃষ্টি করা দরকার। পাশাপাশি দরকার নিরীক্ষা ও গভেষণা করে বের করা কোথায় কোথায় দলীয় সমস্যা রয়েছে? সেই দিকে লক্ষ্য রাখার জন্য দলীয় ন্যায়পাল পদ সৃষ্টি করে এর আশু সমাধান করা অতিব জরুরী। নতুবা লক্ষ্যে পৌঁছতে রণভঙ্গ হওয়ার উপক্রম এসে আঘাত করবে আমাদের চলমান উন্নয়ন ও গতিশীল নেতৃত্বে। মূল সমস্যায় হাত দিন এবং একে একে সমাধান করে দলকে মজবুত করুন। বিভিন্ন অশুভ ও অশালীন বাক্যবানে দল একং দলীয় নেতা, কর্মী ও সমর্থকদের উপাধি না দিয়ে বা বাক্যবানে জর্জরিত না করে সুস্থ্য, সুন্দর ও উর্বর মস্কিঙ্কের পরিচায়ক আচরণ করুন। মানুষ মাত্রই ভুল হবে কিন্তু মানুষই আবার সংশোধিত হয়ে সঠিক কাজ করে দলকে গতিশীল করবে। ঘরের লক্ষী পা দিয়ে ঠেলে দিবেন না। গানের ভাষায় বলতে হয় এই দিন দিন না আরো দিন আছে…. এই দিনেরে নিয়ে যাবে অন্য দিনের কাছে। …. পিছনে নয় বরং সামনে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ে কাজ করুন। সবাইকে সমানভাবে মূল্যায়ন করুন। সংযত আচরণ করুন। আপনার আচরণে এবং কুটচালের কারণেই বহিস্কার পূর্বপরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। আগে আপনি নিজে পরিবর্তন হউন তারপর অন্যকে নিয়ে সযতনে অগ্রসর হউন।
অন্যের দোষ দেখার বা খোঁজার আগে নিজের দোষ খোজুন। অন্যের চোখের কোটা বের করার আগে নিজের চোখের কোটা বের করুন। তারপর আন্যের দিকে যতœশীল হয়ে এগিয়ে যান। উপদেশ এবং অন্য সম্পর্কে লিখতে ও বলতে আমাদের অনেক আগ্রহ থাকে এবং মুখে ও কলমে শক্তি থাকে কিন্তু ভেবে দেখছেন নিজের জীবনেই এইসকল সমুহ কলঙ্কগুলো জড়িয়ে রয়েছে? ভাবুন এবং এগিয়ে আসুন নিজেকে বদলাতে। তারপর এমনিতেই সমাজ ও দেশ ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে পদার্পন করবে। বাংলাদেশে মীরজাফররা একবারই জন্মেছিল এবং একবারই তাদের নিস্কৃষ্ট কৃতকর্মের পর মৃত্যুবরণ করেছিল। এই বাংলায় মীরজাফর বার বার জন্মানোর সুযোগ করে দিবেন না। বরং মীরজাফরদের দেখানো ও শিখানো পথে যারা হাটছে তাদেরকে রক্ষায় এগিয়ে আসুন। আসার আগে নিজেকে বদলীয়ে রক্ষা করে আসুন তাহলেই এই সমাজ দেশ এবং জাতী তাঁর স্বীয় বলে বলীয়ান হয়ে আগামীর প্রজন্মকে উপহার দিয়ে যাবে একটি সুখি, সম্বৃদ্ধ , উন্নত, শান্তি, স্থিতিশীল ও গতিশীল স্বপ্নের সোনার বাংলা।