বাংলাদেশেই একদিন বিমান তৈরি হবে; প্রধানমন্ত্রী

প্রশান্তি ডেক্স ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বৃহস্পতিবার গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে যশোরে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী একাডেমিতে শীতকালীন রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ ২০২১-এ অংশ নেন -আইএসপিআর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীকে একটি উন্নত দেশের বাহিনীর মতো দেখতে চাই। ইতোমধ্যে বিমানবাহিনীতে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান, এয়ার ডিফেন্স রাডার, ক্ষেপণাস্ত্র এবং প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, গবেষণার মাধ্যমে আমাদের দেশেই একদিন বিমান ও হেলিকপ্টার তৈরি হবে-এ বিশ্বাস আমার আছে।
বিমানবাহিনীর ‘শীতকালীন রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ-২০২১’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে গণভবন থেকে তিনি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যশোরে বিমানবাহিনী একাডেমির প্যারেড গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশ নেন। তিনি বলেন, ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর থেকে আমরা জাতির পিতার প্রণীত প্রতিরক্ষা নীতির আলোকে ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০’ প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন শুরু করি। বিমানবাহিনীকে একটি শক্তিশালী ও যুগোপযোগী বাহিনী হিসাবে গড়ে তোলার জন্য অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় সামরিক সরঞ্জাম সংযোজন করা হয়েছে।
নতুন নতুন ঘাঁটি, ইউনিট ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা হয়েছে। তিনি জানান, তার সরকার চায় এটি একটি উন্নত দেশের বাহিনী হিসাবে গড়ে উঠুক। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন ধরনের বিমান, রাডার ও অন্যান্য সামরিক সরঞ্জামের সুষ্ঠু, নিরাপদ ও সাশ্রয়ী রক্ষণাবেক্ষণ এবং ওভারহলিংয়ের লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু এরোনটিক্যাল সেন্টার নির্মাণ করা হয়েছে। এ সেন্টারের তত্ত্বাবধানে বর্তমানে বিমানবাহিনী নিজস্ব প্রযুক্তি ও জনবলের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের বিমান ও হেলিকপ্টার ওভারহোলিং করছে। মহাকাশ গবেষণা, বিমানবাহিনীর উন্নয়ন এবং বেসামরিক বিমান চলাচল সেক্টরকে যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়’ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার মাধ্যমে দেশেই একদিন বিমান ও হেলিকপ্টার তৈরি হবে-এ বিশ্বাস আমার আছে।
পাসিং আউট ক্যাডেটদের অর্পিত দায়িত্ব দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে পালনের আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, করোনাকালে এবং যে কোনো দুর্যোগে বিমানবাহিনী মানুষের পাশে থেকেছে এবং উদ্ধারকাজে সহযোগিতা করেছে। ক্যাডেটদের উদ্দেশে তিনি বলেন, মনে রাখবে তোমাদের কর্মক্ষেত্র শুধু বাংলাদেশই নয়, এখন জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনেও আমাদের বিমানবাহিনী বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখছে।
অনেক ক্রিটিক্যাল জায়গায় যেখানে অন্য দেশের বাহিনী যেতে সাহস পায় না, সেখানেও আমাদের সশস্ত্র বাহিনী এবং বিমানবাহিনী গুরুত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে। কাজেই ভবিষ্যতের জন্য তোমাদের নিজেদের সেভাবেই গড়ে তুলতে হবে। দায়িত্ব পালনকালে তোমরা সব সময় দেশ এবং দেশের মানুষকে ভালোবাসবে এবং দেশের জন্য তোমাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব ও কর্তব্য সততার সঙ্গে পালন করবে। অনুষ্ঠানে পাসিং আউট ক্যাডেটদের মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ এবং ফ্লাইপাস্ট প্রধানমন্ত্রী প্রত্যক্ষ করেন। তাকে কুচকাওয়াজ রাষ্ট্রীয় অভিবাদনও জানায়। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ক্যাডেটদের মাঝে সোর্ড অব অনার, বিমানবাহিনী প্রধান ট্রফি, কমানডেন্ট ট্রফি প্রদান করেন। একই সঙ্গে তিনি ফ্লাইং ব্যাজও প্রদান করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.