দেখতে দেখতে একটি বছর অতিক্রান্ত হলো কিন্তু সেই লোনা আপা আমার কাছে একই রয়ে গেল। তার স্মৃতিময় বাক্য এবং কর্মগুলো বার বার নাড়া দেয় এবং মাঝে মাঝে শিখরিয়ে উঠি। তবে আমি লোনা আপাকে চিনেছি বেসিস দিয়ে আর তিনি নির্বাচনের পূর্বে আমাকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বিশেষ করে বিডব্লিউ আইটি’র অনুষ্ঠানে দাওয়াত দিয়েছেন এমনকি আমি ও লোনা আপা একসঙ্গে খেয়েছি এবং ছবি তুলেছি আর তাঁর সহজ সরল বাক্যালাপ শুনেছি। তিনি আমাকে বলেছিলেন তাঁর জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান হওয়ার গল্প এবং তিনি সেই আলোকেই মহিলাদেরকে নের্তৃত্ব দিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে প্রেরণা যোগাতেন। লোনা আপার সঙ্গে আমার সর্বমোট ৩৬বার সাক্ষাৎ হয়েছে তবে কোনবারই আমি তাকে আগে কুলশাদি জানাতে পারিনি; তিনিই আমাকে আগে থেকে কুশলাদি জানিয়েছেন। তবে তার কথা বলা এবং চাল চলনে একটি আর্ট ছিল যা বাঙ্গালী ললনাদের থাকা উচিত। আমি একবার মাননীয় আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী এডভোকেট আনিছুল হক শ্যানন সাহেবের বাসায় বসে ছিলাম। ঐদিন বড় আপা (মন্ত্রী মহোদয়ের বড় বোন) পরলোক গমন করেন আর লোনা আপা আসেন; আমার চিন্তা ছিল আমি আগে থেকে সালাম দিয়ে খোজ নিব কিন্তু পারিনি সেদিনও তিনিই আমার ও আমার পরিবারের খবর নিয়েছেন। যাক আপা আপনি পরপারে ভাল থাকুন, আমার মোনাজাত প্রতিনিয়ত আপনার জন্য আর দোহা ভাই ও একমাত্র ভাইজতির জন্য দোয়া এবং শুভকামনা। যদি প্রয়োজন হয় তাহলে পাশে থাকার শতভাগ নিশ্চয়তা রইল।
আপার মৃত্যু সংবাদটি পেয়ে আমি বিমুঢ় ও বাকরুদ্ধ হয়ে যাই। আমার কথা ছিল আপার সঙ্গে বিদেশ থেকে ফিরে আসলে অনেক বিষয় নিয়ে কথা হবে এবং আমার একটি উপহার সেদিন তিনি নিবেন। যা আজও আমি বহন করে ফিরছি। তবে একদিন দোহা ভাইকে দিয়ে এর ভারমুক্ত হওয়ার আশা রাখছি। কিন্তু উপহার দেয়া হলো না তবে আপার দাফন-কাফন এবং করব দেয়া ও দোয়া মোনাজাতে শরীক হয়ে উপহার না দিতে পারার হতাশা থেকে কিছুটা ভারমুক্ত হলাম। তবে অনেকের পরিচিত মুখ দেখেছি বনানীর কবরস্থানে আর মসজিদে। তবে বেসিসের পরিচিতজন অনেকেই সেদিন অনুপস্থিত ছিল আবার কেউ কেউ এসেছিল। যারা এসেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ আর যারা আসতে পারেননি তাদের জন্য দু:খ প্রকাশ করছি। তবে সকলের কাছে মিনতি রাখছি আমার আপাকে ক্ষমা করে দিবেন এবং প্রাণ খুলে দোয়া করবেন যেন আপা জান্নাতের সুউচ্চ মাকামে অবস্থান করেন। আল্লাহ আপার অসমাপ্ত কাজের সমাপ্তি আমাদের মাধ্যমে টানেন সেই প্রচেষ্টায় সচেষ্ট থেকে নিয়োজিত হউন। জীবন অল্প দিনের আর এই অল্পদিন মানুষের কল্যাণের তরে নিবেদিত থাকুন।
বেসিস আমাদের প্রীয় ঘর আর এই ঘরের কেউ হারিয়ে গেলে মনে ব্যাথা লাগে এমনকি শুন্যতা সৃষ্টি হয়। তাই এই বেসিসের প্রতিটি সদস্যদের প্রতি আমার উদাত্ত্ব আহবান আসুন আমরা সবাই ভাই ভাই এবং একে অন্যের পরিপূরক হয়ে কাজ করি এবং আগামীর দৃষ্টান্তের অগ্রজে থাকি। কেই কারো সমালোচনা নয় বরং উৎসাহ এবং উদ্দিপনা যুগিয়ে আগামীর অগ্রগামীতায় শরীক থাকতে সহায়তা করি। যোগ্যদেরকে যোগ্য সম্মানে ভুষিত করি যাতে করে আমরাও ঐ যোগ্যস্থানের আধীকারী হতে পারি। খোদার বাক্যে আছে তুমি যেরকম আশা কর ঠিক সেই রকম আগে করে দেখাও। হ্যা আমরা যেন তাই করি। বেসিস পরিবারকে ভালবাসি এবং এই পরিবারের জন্য যা যা প্রয়োজন তাই করতে প্রস্তুত। বেসিস তার সদস্যদেরকে স্মরণ করে এবং সদস্যদের যোগ্য সম্মান দিতে বধ্যপরিকর।
গত ১৭/০২/২০২২ইং রোজ বৃহস্পতিবার বেলা ৫ ঘটিকার সময় লোনা আপার ১ম মৃত্যুবার্ষীকি পালনের মাধ্যমে স্মৃতিচারন করা হয়। এতে প্রথমে স্মৃতিচারন করেন মনির ভাই, লাবিবা আপা, রাসেল টি আহমেদ ভাই, রেজওয়ানা আপা, হাবিবউল্লা তুহিন ভাই ও আমি তাজুল ইসলাম। আমাদের সকলের একই কথা যে, আমরা লোনা আপনার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্তে সঙ্গি হবো এবং যোগ্য সম্মানের স্থানে লোনা আপাকে রাখব। শেষে বলতে চাই বেসিস সদস্যরা যদি এক থাকে তাহলে পৃথিবী জয় করতে আমাদের বিন্দুমাত্র কষ্ট হবে না এমনকি বেশী সময়ও লাগবে না। তাই আর নয় দুরে বা বিবেদ বরং এখন ঐক্যকে সম্বৃদ্ধ করে আগামীর সকল ইতিবাচক কর্মকান্ডে ঝাপিয়ে পড়ে সফলতার শতভাগ নিশ্চিত করব। সবশেষে দোয়া মোনাজাতের মাধ্যমে তাবারুক দিয়ে শেষ করা হয়। এই আয়োজনের আয়োজকদেরকে ধন্যবাদ এবং নতুন ইতিবাচক পরিকল্পনার জন্য সাধুবাদ জানাই। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সুস্থ্য রেখে নেক কাজ করার তৌফিক দান করুন আমিন॥