এই শব্দ দুইটি আমাদের সকলেরই চেনা-জানা। লোকমুখে এই দুইয়ের নানাহ মুখরোচক আলোচনা চলে গ্রামের চায়ের ষ্টল থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ পাঠদানের এমনকি মেধাবীদের আড্ডাখানায়ও। তবে আমাদের দেশের একটি দিক ষ্পষ্ট প্রতিয়মান যে, কোন ভালই ভাল না বা ভালকিছুর প্রশংসা আমরা করতে জানি না। অথবা প্রশংসা করতে কৃপনতা অনুভব করি। এইতো গতকালই প্রকাশিত হলো সাবেক রাষ্ট্রপ্রতি এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত জনাব হুসেইন মুহাম্মদ এরসাদ সাহেবের রাডার ক্রয় সংক্রান্ত দূর্নীতি মামলার বহুল আলোচিত রায়। এই রায়ে বেকসুর খালাস শব্দটি উচ্চরিত এবং লিখিত ও পঠিত হয়ে এখন বাংলার মানুষের মুখে মুখে। এই মুখে মুখে শব্দটির সঙ্গে আরো যুক্ত করতে চাই আমাদের তিন শ্রেণীর মানুষের প্রতিক্রিয়া। একশ্রেণী খুশী, আর এক শ্রেণী না খুশি বা না বেজার (নাতিশীতোষ্ণ ভাব) আর তৃতীয়টি সমালোচনায় ব্যস্ত।
আমার কাছে নজর কারে কোর্টের রায়টি; যা যুগান্তকারী এবং প্রশসংসার দাবিদার। এই সাহসিকতা এবং মানষিকতার চার্চার প্রসার ঘটাই বা দেখাই হলো বঙ্গালী এবং বাংলাদেশীদের কাম্য। এই ধরণের মামলা বা জটিলতা যদিও দৃশ্যমান তারপরও বলব এই রায়ের মাধ্যমে আগামী দিনে সকল দৃশ্যমানই অদৃশ্যমানে পরিণত হবে এই হউক দৈনন্দিত বা নিত্যদিনের কাম্য। এই বিষয়গুলো নিয়ে সময় এবং মেধা নষ্টের চেয়ে বরং অন্য গঠনমূলক এবং উন্নয়নমূখী কর্মকান্ডে নিয়োজিত থাকাই মহৎ ও বুদ্ধিমানের কাজ বলে বিবেচিত।
যারা এই রায়ের সমালোচনা বা এই রায়ে অবাক হয়েছেন এমনকি খুশি হয়েছেন; সকলেরই সম্পর্কে কিছু বলার বা লিখার অধিকার এমনকি সাহসও আমার নেই। তবে আমি আমার মনের অভিলাষ বা জ্বালা প্রকাশ করার লক্ষ্যেই আমার এই লিখা। শুধু বলব আমরা মানুষ এবং আমাদের ভুল হবেই । এই ভূল থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়াই হবে আমাদের কাম্য। পৃথিবীর গতিময়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে দিনকে দিন; আর আমরাও দ্রুতলয়ে এগিয়ে যেতে হবে সামনের দিকে। সেই লক্ষ্যেই দৌঁড়াতে গিয়ে যেন খুচট না খেয়ে পড়ি তা চোখ কান খুলে বিশেষ দৃষ্টি দিয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে। যদি ছিটকে পড়ি তাহলে পুনরায় ঐ গতিময় দৌঁড়ে ফিরে যেতে অনেক সময় প্রয়োজন যা হয়তো আমার আপনার জীবদ্দশায় নাও হতে পারে। তাই সকল বিচক্ষণতাই ইতিবাচক এবং সচেতনতার সহিত করে এগুতে হবে।
ন্যায় বিচার শব্দটি যদিও বার বার আমাদের সামনে চলে আসে কাজের ফলে কিন্তু দু:খের বিষয় এই ন্যায় বিচার শব্দটিকে বা কাজের ফলটিকে আমরা ভিন্ন প্রবাহে ধাবিত করতেই ব্যস্ত থাকি। কেন? আমরা ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে এবং জড়াজীর্ণ ঘূণেধরা মনোভাবের পরিবর্তন করে আগামী দিনের ন্যায় কাজের ফলকে উৎসহিত করতে পারি না? যেন এই শুদ্ধ চর্চার মূল্যায়নে আগামী প্রজন্ম একটি সুস্থ্য ধারায় ফিরে যেতে পারে।
ধন্যবাদ বলি বা সাধুবাদই বলি তা প্রথমেই দিতে হবে বিচার বিভাগ এবং সরকারের মনোভাবকে। সরকারের সদিচ্ছার এবং বিচার বিভাগের স্বাধীন পথ চলার ফলই হলো আজকের এই বেকসুর খালাস। আমরা আশা করি আগামীতে এই ন্যায়-পরায়নতার জয়ধ্বনী অব্যাহত থাকবে।
সম্মানীত মানুষদের নিয়ে আরেক সম্মানীত বা স্বগোষীত সম্মানীত মানুষজন বা অতি সাধারণ মানুষজন যে সমালোচনা বা মোখরোচক আলোচনায় মেতে থাকি; তার কি কোন ইতিবাচক ফল বহন করে? কখনো কি ভেবে দেখেছি নিজেকে নিয়ে। নিজের পারিপাশ্বিক অবস্থানকে নিয়ে এমনকি নিজের অতি কাছের (পরিবারের) অবস্থানকে নিয়ে? যদি না ভেবে থাকি তাহলে এখন থেকে নিজেকে নিয়ে ভেবে চিন্তে অগ্রসর হই। অন্যের সমালোচনা বা মুখরোচক কোন আলোচনা নয় বরং নিজের প্রয়োজন এবং নিজের জীবন, পরিবার, সমাজ, আত্মীয়তার বন্ধন নিয়ে ভেবে অগ্রসর হই। তাহলে আমাদের আগামীর পথ হবে প্রশস্ত এবং শান্তি ও স্থিতিশীলতা হবে আমার নিজের জীবনের জন্য এক আশ্চয্য আশির্বাদ। আসুন আশির্বাদের ছায়ায় জীবন গড়ি এবং অন্যকে এই আশির্বাদের সহিত যুক্ত হতে উৎসাহ যোগায়।