ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ কসবা পৌর এলাকার আকুবপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর হত্যা ও আক্কাছ মিয়া হত্যা মামলার ওয়ারেন্ট ভূক্ত আসামীগন পলাতক থেকে মামলা তুলে নেয়ার জন্য মামলার বাদী ও পরিবারের লোকজনদে হুমকী প্রদান করছে। মামলা না তোলে নিলে এরাও মামলা সৃজন করার হুমকী দেয়। এ ঘটনায় আকবপুর গ্রামে নিহত পরিবার ও খুনের মামলার স্বাক্ষীদেও মধ্যে আতংক বিরাজ করছে।
ইতোমধ্যে আসামী পরিবারের পক্ষ থেকে এক এক করে তিনটি অভিযোগ থানায় দায়ের করলেও পুলিশের তদন্তে আনিত অভিযোগগুলো মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয়। ফলে আক্কাছ হত্যা মামলার বাদী মোঃ ফারুক মিয়া জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে গত রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ২৫ জনের নাম উল্লেখ করে কসবা থানায় একটি সাধারণ ডাইরী করেছেন। ডাইরী নং ১৩৮৭।
অভিযোগে প্রকাশ,দু’বছর আগে জাহাঙ্গীর হত্যার জের ধরে গ্রামে বিবাদমান দুটি পক্ষের মধ্যে মামলা মোকাদ্দমা চলে আসছিলো। জাহাঙ্গীর হত্যা মামলার অন্যতম স্বাক্ষী ছিলেন তারই চাচাতো ভাই আক্কাস মিয়া। আক্কাস মিয়া জাহাঙ্গীর হত্যার মামলাটি দেখভাল করতেন। স্থানীয় রাজনৈতিক পটভ’মিতে জাহাঙ্গীল হত্যা মামলাটি সিআইডির নিকট হস্তান্তর করা হয়। এখনো ওই মামলার চার্জসিট সিআইডি প্রদান করতে পারেনি। এমনকি সিআইপি পুলিশ এ যাবত কাউকে গ্রেপ্তারও করতে পারেনি। জাহাঙ্গীর হত্যার পর আক্কাস মিয়া নিজের নিরাপত্তার কথা ভেবে ২০২০ সালের দুই অক্টোবর সাবেক পৌর কমিশনার আবু তাহের সহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে কসবা থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করেছিলেন।
ফলে আসামী পক্ষ প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় নিহত জাহাঙ্গীরের লোকদের নানাভাবে হয়রানী করার অভিযোগ উঠে। ওই ঘটনার জের ধরে প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসী হামলায় গত ২২ আগষ্ট জাহাঙ্গীরের চাচাতো ভাই ও জাহাঙ্গীর হত্যার প্রধান স্বাক্ষী উপজেলা পিকআপ ভ্যান সমিতির সভাপতি মো.আক্কাস মিয়া (৪৫)কে হত্যা করে। আক্কাস ঘটনার দিন তার প্রথম স্ত্রীর কবর জিয়ারত করে বাড়ি ফিরছিলো। সাবেক পৌর কাউন্সিলর আবু তাহেরের নেতৃত্বে ওৎ পেতে থাকা মৃত আবদুল খালেকের পুত্র রহিম মিয়া (৪৫), শহিদ মিয়া (২৭), মজিদ মিয়া (৩৫) কাওসার মিয়া (২২) ও সাত্তার মিয়া (৩৭) এবং আবু তাহেরের ছেলে তারেক ও ভাতিজা রুবেল মিয়া দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আতর্কিত হামলা চালায় আক্কাস মিয়ার উপর। আসামীরা অতর্কিতভাবে হামলা করে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এ সময় তার আর্তচিৎকার শুনতে পেয়ে তার ভাই হিরন মিয়া (৬০), রমজান মিয়া (৫৪) ও ভাতিজা শাকিল (২৫) তাকে বাচাঁতে এগিয়ে এলে তাদের উপরও হামলা চালায় প্রতিপক্ষের লোকজন। পরে আক্কাস হাসপাতালে মারা যায়।
এ ঘটনার পর কসবা থানা পুলিশ জাহাঙ্গীর ও আক্কাস হত্যার অন্যতম আসামী আবদুর রহিমকে চট্রগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে রহিমকে কসবা থানা পুলিশ রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। অন্যান্য আসামীরা ভারত সীমান্তের ভেতরে ও উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বসবাস করে রাতের আধারে গ্রামে মহড়া দেয় বলে ভুক্তভোগীরা জানায়।
এ বিষয়ে কসবা-আখাউড়ার সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার কামরুল ইসলাম জানান, আকবপুর জাহাঙ্গীর ও আক্কাছ হত্যা মামলার আসমীগন মামলা তোলে নিতে হুমকীর বিষয়ে মামলার বাদী ফারুক মিয়া থানায় একটি জিডি করেছেন। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। জাহাঙ্গীর ও আক্কাস হত্যার অন্যতম আসামী আবদুর রহিমকে চট্রগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসমীদের গ্রেফতারের ব্যপারে পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।