প্রশান্তি ডেক্স॥ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেছেন, তিনটা সমাবেশ করে ক্ষমতায় চলে গেছি বলে মনে করছি না। আমরা মনে করছি, তিনটি সমাবেশ করায় আপনাদের কম্পন শুরু হয়ে গেছে। কাঁপাকাঁপি শুরু হয়ে গেছে। যে কারণে সমাবেশগুলো বন্ধ করার জন্য আপনারা পরিবহন ধর্মঘট করাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘লজ্জা করে না আপনাদের। কী নির্লজ্জ আপনারা, কাপুরুষ আপনারা। বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ সমাবেশকে বন্ধ করার জন্য আপনারা আপনাদের পেটোয়া ইউনিয়নকে দিয়ে ধর্মঘট ডাকাচ্ছেন।’
গত বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) বিকালে রাজধানীর নয়া পল্টনে যুবদলের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত যুব সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। ‘দুই-তিনটা সমাবেশ করে ফখরুলের ভাবখানা এমন যে, ক্ষমতায় এসেই গেছে’, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।
‘অনেকেই জানতে চায়, রিজার্ভের টাকা গেলো কোথায়। তাদের বলতে চাই, এটা কেউ চিবিয়ে খায়নি। রিজার্ভের টাকা পায়রাবন্দরে খরচ করা হয়েছে’, প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের জবাবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, ‘রিজার্ভের টাকা পায়রাবন্দরে খরচ করার জন্য নয়। রির্জাভের টাকা হচ্ছে বিদেশ থেকে যে আমদানি করবেন, তা ডলার দিয়ে পরিশোধ করবেন। দেশে যখন ক্রাইসিস দেখা দেবে, তখন খরচ করবেন।’
‘খেলা হবে’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘খেলা তখনই হয়, যখন লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকে। খেলা তখন হবে যখন পদত্যাগ করবে সরকার থেকে এবং মধ্যবর্তী তত্ত্বাবধায়ক সরকার যখন দায়িত্ব নেবে। তখন সেই নির্বাচনি খেলা হবে। এছাড়া কোনও খেলা খেলতে দেওয়া হবে না। দেশের মানুষ আর কখনও সেটা দেবে না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘চট্টগ্রামে, ময়মনসিংহে ও খুলনায় ধর্মঘট ডেকেছে, সেই ধর্মঘট দিয়ে কি গণতন্ত্রকামী মানুষকে আটকে রাখতে পেরেছে? পারেনি। জনগণ তাদের দাবি জানাতে পায়ে হেঁটে বিভিন্নভাবে সমাবেশে এসে উপস্থিত হয়েছে। বরিশালে ধর্মঘট দিয়েছে, রংপুরে ধর্মঘট দিয়েছে কেন? জাতে জনসমাবেশ বন্ধ করা যায়।’
মুন্সীগঞ্জে ও নারায়ণগঞ্জে যুবদল নেতা নিহতের ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার অবৈধ সরকার, তারা আজকে গুলি করে দমন করতে চায়। তারা অত্যাচার, নির্যাতন করে দমন করতে চায়।’
দেশে নির্বাচন নেই বলে দাবি করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচন ব্যবস্থাকে আওয়ামী লীগ ধ্বংস করে দিয়েছে। নির্বাচন কমিশন করেছে, যাকে ডিসি-এসপিরা মানে না। তারা নির্বাচন করতে পারে না। সুতরাং, নির্বাচনের প্রশ্নই উঠতে পারে না। আমরা খুব পরিষ্কারভাবে বলেছি, হাসিনার অধীনে কোনও নির্বাচন হতে পারে না। নির্বাচনের পূর্বে হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে। তার সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে এবং একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। পরিষ্কার কথা, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা না দিলে এখানে কোনও নির্বাচন হবে না।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের সামনে অনেক কঠিন সময়, অনেক পরীক্ষা, অনেক যুদ্ধ। আজকে যে চেয়ারটি খালি রেখেছে খালেদা জিয়ার জন্য, তিনি তার সারাটা জীবন সংগ্রাম-লড়াই করেছেন গণতন্ত্রের জন্য। এখনও তিনি অসুস্থ শরীর নিয়ে বন্দি হয়ে রয়েছেন। আমাদের নেতা তারেক রহমানকে মিথ্যে মামলা দিয়ে মিথ্যে সাজা দিয়ে দেশের বাইরে রাখা হয়েছে। ৩৫ লাখ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা। অসংখ্য নেতা কর্মীদের গুম করা হয়েছে, হত্যা করা হয়েছে।’
যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকুর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানুল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ।