দেখতে দেখতে শেষ হয়ে গেল ২০২২ বছরটি। নানা প্রতিকূলতায় আচ্ছাদিত এই বছরটি আমাদেরকে দেখিয়েছে এবং শিখিয়েছে অনেক জানা ও অজানা কিছু বাস্তবতা। তবে এর সঙ্গে শেষ হচ্ছে প্রশান্তির ৭ম বর্ষ এবং শুরু হতে যাচ্ছে নতুন বর্ষ যা ৮ষ্টমে ছুই ছুই করছে। তবে ২০২২ বছরটি এক ধরণের চমকেরও ছিল। নিতী, আদর্শ এবং নৈতিকতা বিসর্জনেরও দৃষ্টান্তে উজ্জ্বল ছিল। সততা আর আদর্শ আঁকড়ে ধরে পথ চলার মানুষেরও প্রচেষ্টা অব্যাহত ছিল। এই ’২২কে সামনে এনে আসন্ন ’২৩কে মোকাবিলা করা জরুরী। তবে মোকাবিলার ক্ষেত্রে সততা এবং কৌশল ও আদর্শের ধারাবাহিকতা জরুরুী। কোন ক্রমেই সততা ও ইতিবাচক আদর্শকে বাইপাস করা যাবে না এমনকি পিছনে ফেলে চলা কোনক্রমেই মঙ্গলের তরে হবে না। বর্তমানে দেশে ও বিদেশে পচনধরারা মাথাচারা দিয়ে এগুচ্ছে। তবে তারা মৃত এবং তাদের আর মরার ভয় নেই তাই তারা জীবিতদের মৃতে পরিণত করতে সর্বাঘ্রাসী করাল থাবা নিয়ে এগুচ্ছে। মাঝে মাঝে মনে হচ্ছে ইমাম মাহদির বংশধর ও ইবলিশের সৈন্যবাহিনী হিসেবে শেষ পেড়েক ঠুকে দিতে কাজ করছে।
আমাদের দেশের তরে মঙ্গলের আলোকরশ্মিকে নিভিয়ে ফেলতে যে কার্যক্রম চলমান রয়েছে সেই কার্যক্রমে আপনার আমার অংশীদারিত্ব কমিয়ে এনে শুন্যের কোটায় নামানো এখন সময়ের ও যুগের এবং সৃষ্টিকর্তার অভিপ্রায়ের দাবী। রাষ্ট্রীয় কাঠামোয় যারা শয়তানের দ্বারা নিয়োজিত ক্ষমতাধর তাদের বিস্তার শুধু আমাদের দেশের সরকারে নয় বরং সমগ্র বিশ্বেই এর জাগরণ বিদ্যমান। যার ঝিকমিক ঝিকমিক আলোকচ্ছটা সকলেরই চোখে পড়ে কিন্তু কারোরই কোন কিছু করার থাকে না। অসহায়ের মতো তাকিয়ে থেকে অথবা মনের দু:খে বদ্ধ ঘরে রাগ প্রকাশে আবোল -তাবোল বকা ছাড়া আর কিছুই করার সুযোগ ও সময় আমাদের কারোরই নেই। এই প্রসঙ্গে আমি বর্তমানের কিছু দৃষ্টান্ত হিসেবে পার্শ্ববর্তী দেশ মুদি সরকারের নিতি ও আইন আদালতের বাস্তবতা তুলে ধরেছি আজকের সংখ্যায়। সেই আলোকে আমাদের দেশে কিঞ্চিত ভাল বলে আমার বিচারে প্রতিয়মান হয়। তাই মন্দের ভালকেও ভাল বলতে শিখতে হবে এমনকি চর্চায় আনয়ন করে কায্যে পরিণত করতে হবে। নতুনা ভাল’র যাত্রা অব্যাহত থাকবে না বরং যেটুকু ভাল রয়েছে সেটুকুও খারাপের পেটে বিলিন হবে।
অতীতের ইতিহাস খারাপীতে ভরপুর আর বর্তমানের ইতিহাস ভাল ও মন্দে ভরপুর। তবে এই ভাল-মন্দ থেকে ছাকনি দিয়ে ছেঁকে যে ভাল’র অগ্রগতিটুকু পাওয়া যায় তা বর্তমানের জন্য যতেষ্ট। তাই এই যথেষ্টকে নিয়ে আগামীর ভাবনা আরো সমুজ্জ্বল করতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। ব্যক্তি স্বার্থ্য থেকে বের হয়ে এসে জাতি স্বাথ্য ও সার্বজনীন স্বার্থ্যে কাজ করতে হবে। জাতি স্বার্থ্য ও সার্বজনীন স্বার্থের সঙ্গে ব্যক্তিস্বার্থ্যও জড়িত। তবে পরখ করতে দেখতে হবে এবং অনুবিক্ষণ যন্ত্রের মাধ্যমে খুঁজে বের করে সুখানুভুতি প্রকাশ করে অন্যকে জানাতে হবে। তাহলেই আমাদের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে এবং আগামীর সম্বৃদ্ধ ও উন্নত বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।
গত হতে যাওয়া ২০২২কে সরকার যেভাবে মোকাবিলা করেছে তা সত্যিই চমকপদ এবং বৈশ্বিক ও প্রাকৃতিক আক্রমনসহ নেতিবাচক রাজনৈতিক আক্রমণকে যেভাবে দমন করে চলমান উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখেছে তাও প্রশংসার যোগ্য। তবে এই প্রশংসা যথেষ্ট নয় বরং আগামীর ভাবনায় প্রশংসায় ভাটা পড়েছে। তবে আগামীর ভাবনায় নতুনত্ব এনে জনগণের মনের গহীনে জমানো ক্ষোভ বিতাড়িতকরণে কাজ করতে হবে। কোণভাবেই কাউকে ছোট ভেবে বসে থাকা যাবে না। কারণ খরগোস ও কচ্ছপের গল্প সবারই জানা। দলীয় কর্মী, সমর্থক এবং নেতাদের বিরুদ্ধের দলীয় হয়রানী বা মামলা হামলা বন্ধ করে ঐক্যের সুতিকাঘারে এক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। ঐক্যের বিকলপ নেই বরং ঐক্যবিহীনতায় অন্ধকারে বিলীন হওয়ার সমূহ সম্বাভনা জাগ্রত। পরিশোষে বলতে চাই সব ভাল যার শেষ ভাল তার এই বাক্যের বাস্তব রূপ দৃশ্যমান হউক।
বর্তমান ও ভবিষ্যতের যোগসূত্র হউক “যা সত্য যা উপযুক্ত যা সৎ যা খাঁটি যা সুন্দর যা সম্মান পাবার যোগ্য, মোট কথা যা ভাল এবং প্রশংসার যোগ্য সেই দিকে তোমরা মন দাও।” হ্যাঁ তাই যেন হয় আমাদের সকলের জীবনে। আগামীর ২০২৩কে আমরা এই মূলমন্ত্রে সাজাতে চাই। তবে এই ক্ষেত্রে সৃষ্টিকর্তার সহযোগীতা অত্যাসন্ন। আসমানী কিতাব ঘোষণা করছে; যোগ্যতা, ক্ষমতা ও পদায়ন হয় সৃষ্টিকর্তার ইশারায়; তাই ঐসকল পাওয়ার পর যেন সৃষ্টিকর্তার সহায়তাই আমরা সকল দায়িত্ব পালন করি। আর মনে রাখতে হবে দায়িত্ব পালণের পূর্বে বা দিনের শুরুতেই সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্যে এসে মোনাজাতে তার সাহায্য কামনা করে কাজ বা দায়িত্ব সম্পন্নে এগিয়ে যেতে হবে। তখন সৃষ্টিকর্তা সকল কাজে সহায়তা করে একটি ফলপ্রসু নিখুত দায়িত্ব সম্পাদন করে আগামীর জন্য দৃষ্টান্তের ছাপ ফেলবে। মানুষ এবং সৃষ্টিকর্তার সমন্বয়ে যে কাজ বা দায়িত্ব সম্পন্ন হবে তা অতি উত্তম ও চমৎকার হবে। তাই অতি উত্তম ও চমৎকারিত্বের আশায় প্রতিনিয়ত এগিয়ে যাই। মহান খোদা; রাব্বুল আল-আমীন বা সৃষ্টিকর্তা আমাদের সকলকে ঐ নিখুত ও চমৎকার করে সাজিয়ে তুলূক এই আশা ও ভরসা নিয়ে আগামীর প্রত্যাশায় জাগ্রত রহিলাম। সৃষ্টিকর্তা আমাদের প্রত্যেকের মাথায় হস্ত প্রসারিত করুন এবং আপনার সকল গুণ ও জ্ঞানে এবং আশির্বাদ ও সুরক্ষায় আর ক্ষমা ও ভালবাসায় পূর্ণতা দিয়ে পরিপূর্ণ করে ব্যবহার করুন।