ভাল ও মন্দ এখন দন্ধে লিপ্ত রয়েছে। এই দ্বন্ধের অবসানে ঐশ^রিক বা সৃষ্টিকর্তার সহায়তার কোন বিকল্প নেই। সমগ্র পৃথিবীই এখন এই দ্বন্ধে মশগুল। ভাল’র সঙ্গে সৃষ্টিকর্তা আর মন্দের সঙ্গে ইবলিশ ও ইবলিশরূপী মানুষগুলো। এই দুইয়ের দ্বন্ধের অবসান কি আসন্ন? নাকি কিয়ামত নামক ধর্মীয় অনুভুতির জাগ্রত শব্দটির স্বার্থকতার ফল নিয়ামক? তবে এই সমাজে এবং রাষ্ট্রে এমনকি পরিবারেও এই দ্বন্ধের আগুন দাও দাও করে জ্বলছে। এই আগুন নিভানোতে কোন ঔষধ, টোটকা আর ঈমান- আমলই এখন কাজে লাগছে না। এই ভাল ও মন্দের দ্বন্ধের দৃশ্যমানতায় যুক্ত রয়েছে, অবৈধ প্রেমের দ্বন্ধ, বহুগামিতা, পরকীয়া, খুন-খারাবী, সম্পদ, অর্থ, ক্ষমতা, পদ-পদবী, উচ্চাসন, অন্যকে ঠকানোর কূট কৌশল এবং নিজের স্বার্থে্য অন্যের জীবন নাশসহ নানান রকম ও ফের। তবে ধর্মীয় আবরণেও এই ভাল-মন্দের দ্বন্ধ পরিলক্ষিত হচ্ছে। ধর্মের ভেড়াজাল ভেদ করে এই দ্বন্ধ অবসানের বিকল্প কোন পথ আজও আবিস্কার হয়নি। সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত্ব এই একটিই পথ রয়েছে সকলের সামনে তবে এতেও আবার বাধ সাধে মন্ধের মন্ধতায় মশগুল ইবলিশরূপী মানুষগুলো। তাই সৃষ্টিকর্তার কোন বিকল্প নেই আর বিকল্প থাকবেও না।
কিয়ামতের পূর্বালামতের কার্যক্রম গতিশীলতায় এখন বর্তমান। এই আলামতের নির্ণায়কও এই ভাল ও মন্দের দ্বন্ধ। রাশিয়া-এউক্রেন, ফিলিস্তিন- ইসরাইল, ইরান-পশ্চিমা বিশ^, মধ্যপ্রাচ্যের দৃশ্যমান দ্বন্ধ, দুই কোরিয়ার দ্বন্ধ, মায়ানমার, চীন-তাইওয়ান, পাকিস্থান-ভারত-চীনসহ সকল দ্বন্ধের মূলে ও পিছনের ইন্দনদাতা মোড়লে আজম খ্যাত আমেরীকা নিয়োজিত। দ্বন্ধের কোন চিরস্থায়ী আদর্শ, উদ্দেশ্য ও লক্ষ এমনকি স্থিতিশীলতা ও শান্তি এর কোনটিই নেই। তাহলে কি আছে? অতিত ও বর্তমান এবং ভবিষ্যতের সংমিশ্রণে বলা যায়: অনিশ্চয়তা, মুত্যৃপুরী, শ^শান এমনকি পৃথিবী ধ্বংসের মহা যজ্ঞ। এই চলমানতার শেষ পরিণতিই হবে কিয়ামত এবং নির্দোশ সৃষ্টিকর্তার পুনরাগমন এবং শেষ বিচারের দিনের সমুজ্জ্বল উদ্ভব। হ্যা এই মহা প্রলয় থেকে বাঁচার এমনকি আত্মরক্ষার একমাত্র হাতিয়ার হলো সৃষ্টিকর্তাতে আত্মসমর্পণ। এর বিকল্প কিছু নেই। লুকিয়ে এবং আশ্রয় কেন্দ্রে গিয়ে বাঁচার আর কোন সুযোগ অবশিষ্ট নেই। সৃষ্টিকর্তার সামনে হাজির হওয়ার সমস্ত রাস্তা এখন উন্মুক্ত এবং প্রসস্থ আকারে প্রকাশিত হচ্ছে। আমাদের করনীয়তে যুগের দাবী ও সময়ের চাহিদানুযায়ী আজ থেকে প্রায় ৪০০০ বছর আগের পাঠানো সৃষ্টিকর্তার বানীতে মনযোগী হওয়া ছাড়া আর কোন বিকল্প নেই। “তোমরা প্রত্যেকে তোমাদের মাবুদ আল্লাহকে ভালবাস: (তোমাদের সমস্ত মন, সমস্ত হৃদয়, সমস্ত দীল দিয়ে)। তার পরের দরকারী হুকুম হলো তোমাদের প্রতিবেশীকে নিজের মত মহব্বত করো।” হ্যা এই দুইয়েই মুক্তি। তবে সৃষ্টিকর্তার আদেশ ক্ষমা ও ভালবাসা অব্যাহত রেখে সমানে এগিয়ে যাওয়ার কোন বিকল্প নেই। এই সময়ে সমস্ত কিছু বন্ধে এই ধর্মীয় টোটকা শতভাগ কাজে লাগার একমাত্র বাহন।
উন্নয়ন ও অগ্রগতির জোয়ারে বাংলাদেশ। বিশ^মন্দার মাঝেও এই উন্নয়ন যেন বাংলাদেশকে শত প্রতিকূলতায়ও মাথা নোয়াবার নই এই বাক্যের সফল রূপান্তর হিসেবে প্রকাশ করছে। সরকার আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে বাংলাদেশকে একটি সুউচ্চ মর্যাদার আসনে উপনীত করার। আর সেই কাজে শতভাগ সফলও হয়েছে। যার প্রমান বিদ্যুৎ, পদ্মা সেতু, সড়ক যোগাযোগ, মেট্টুরেল, টানেল, উড়াল সেতু, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলাসহ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন। অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে নেয়া সকল পদক্ষেপ এখন পর্যন্ত এ যুগের শ্রেষ্ঠতর অবস্থানে জানান দিয়ে যাচ্ছে। চারিদিক থেকে ঘীরে ধরে আছে যেন উপরে উঠতে না পারে কিন্তু হাত ফসকে গতীশিলতা নিয়ে উপরে উঠে যাচ্ছে; যা দেখে হতভম্ব হয়ে আরো কঠিন ফন্দি এঁটে অগ্রগতি স্তব্দ করতে মরিয়া এখন উন্নয়নবিরোধী দেশী-বিদেশী চক্র। তবে সকল কিছুই উৎরিয়ে যাচ্ছে এই চলমান ঐক্যবদ্ধ সুদুর প্রসারী পরিকল্পনা এবং এর সফল বাস্তবায়ন। মানবতা ও মানুষের কল্যাণে যা যা করার তার সবই এখন করে যাচ্ছে তবে এতে মানুষকেও অনেক ত্যাগ স্বিকার করে সরকারকে সহায়তা করতে হচ্ছে। মানুষের ত্যাগ ও তিতিক্ষার প্রখর গুনা শেষের প্রান্তে এসে নানান জটিলতা দানা বাধতে শুরু করেছে। যা অতিতের কিছু ভুলের পুনরাবৃত্ত্বিও বলা চলে। ব্যক্তি স্বাথ্যের প্রয়োজনেই এই ভুলগুলি সাধিত হয়েছিল এবং ব্যক্তিস্বাথ্যেই আগামীতেও ভুল হবে আর ঐ ভুলের খেসারত দিতে হবে পুরো জাতি বা দেশকেই। সামষ্টিক এবং সাবজনীন স্বার্থের কারনে কোন সমস্যা সৃষ্টি হয়নি এবং হবেও না বরং ব্যক্তি ও গোষ্টি কেন্দ্রিক সমস্যায় প্রকট আকার ধারন করে। সার্বজনীন স্বার্থের সংঘাত কারো একার উপর বর্তায় না বরং ব্যক্তিকেন্দ্রীকতাই একার উপর বর্তায়। যা পূর্বে ছিল এখনও হচ্ছে আর ভবিষ্যতেও হবে বলে ধারনা করছি। তবে কামনা করি যাতে ভবিষ্যতে আর এই ধরণের ভুল না হয়।
শেখ হাসিনার দ্বারা কোন ভুল হয়নি এবং হবেও না তবে তাঁর সরকারের অন্যদের বেলা শতভাগ নিশ্চয়তা দেয়া কারোর পক্ষেই সম্ভব না। তবে কেউ ভুলের উদ্দে নয় বরং ভুল-ত্রুটি নিয়েই মানুষ। ভুল-ত্রুটি শুধরিয়েই মানুষ মহা-মানুষে পরিণত হয় এবং সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্যপ্রাপ্ত হয়। পৃথিবীতে জন্ম নেয়া সকল মানুষই ভুল-ত্রুটিতে আবদ্ধ ছিল; তবে একমাত্র পাকরূহের কুদরতীতে সৃষ্টি হযরত ঈসা মসীহই ভুল-ত্রুটির উদ্ধে এবং নিস্পাপ ছিল। তাই মাতা-পিতার দৈহিক সম্পর্কের মাধ্যমে আগত সকল মানুষই উত্তরাধিকার ভূল ত্রুটির ঘেরাকলে আবদ্ধ। এই ঘেরাকল থেকে বের হওয়ার সময় এখন। একটি গল্প যা আজ থেকে প্রায় ৩৫০০বছর আগে সৃষ্টিকর্তা আমাদের জন্য পাঠিয়েছিলেন: যা অন্যের দোষ ধরার বিষয়ে; এক অন্ধ আরেক অন্ধের চোখের ময়লা বা কোটা পরিস্কার করার বিষয়ে। আমরা নিজের চোখের কৌটা (ময়লা) পরিস্কার না করেই অন্যের চোখের কৌটা (ময়লা) পরিস্কার করতে চাই। আর এই যুগের বড় সমস্যা হলো এই কৌটা (ময়লা) পরিস্কার। সৃষ্টিকর্তা বলেন, ভন্ড তুমি কেমন করে তোমার নিজের চোখের ময়লা পরিস্কার না করে তোমার ভাইয়ের চোখের ময়লা পরিস্কার করতে যাও। তুমি নিজে অন্ধ হয়ে কিভাবে আরেকজন অন্ধকে বা ভাল চোখের অধিকারীকে দোষারূপ করছ। তাই তুমি আগে তোমার নিজের চোখ পরিস্কার কর এবং তারপর অন্যের চোখের দিকে তাকিয়ে পরিস্কার দেখে পদক্ষেপ নিয়ো। বর্তমানে আমাদের উন্নয়ন বিরোধীতা ঐ দশায় লিপ্ত। কারণ তাদের নিজের চোখ পরিস্কার নয় বরং ময়লা ও আবর্জনা অন্ধ তাই শতভাল কাজের কোনটিই আর তাদের দেখার ও বোঝার সৌভাগ্য হয়নি। সেই কারণে শুধু নিজের অন্ধ চোখ দিয়ে নিজেকে বিবচনা করে অন্যের দোষ খুজে বেড়াচ্ছে এমনকি ডিজিটাল গলায় প্রচার চালাচ্ছে। এও এক লজ্জার তবে এতে সাধারণে বিভ্রাট তৈরী হচ্ছে। সাধারণকে ঐ শব্দ বিভ্রাট বা ডিজিটাল বিভ্রাট থেকে ফিরিয়ে আনতে হবে নতুবা নতুন এক বিপদ বিরম্বনার স্বীকারে দেশ জাতি উপনিত হবে। এখনই সময় এই বিভ্রাট থেকে জাতিকে বের করে নিয়ে আসার।
দেশ বিরোধী এবং চিহ্নিত শত্রুদের কবল থেকে জাতিকে রক্ষার দায়িত্ব সরকারের তাই সরকার দেশ ও জাতিকে রক্ষায় এগিয়ে আসবে এটাই কামনা করি এবং এর সঙ্গে যুক্ত করতে চাই যে, বিভিন্ন মামলায় এখনও যারা নির্দোষ কিন্তু ক্ষমতার ব্যবহারে দোষী হিসেবে প্রকাশ করেছে সেই সকল নির্দোষ ও দলীয় এবং দলীয় সমর্থকসহ সকলকে দায়মুক্তি দিয়ে আগামীর ভিতকে মজবুত করুন। নতুবা নিজের ঘরেই শত্রু তৈরী হচ্ছে অথবা ঘরের ভেড়া সড়ে যাচ্ছে। যারা আপনার মজবুত পাহাড়াদার তারা কিন্তু একে একে সরে গিয়ে ঐ জায়গাই লোভী শ্রেনীর লোকদেরকে স্থান করে দিয়ে আগামীর যাত্রা নড়বড়ে করে দিচ্ছে। যার ফল হয়তো আগামীতে আরো প্রকট আকার ধারন করবে এবং এর পরিণতির কোন বিকল্প থাকবে না। সময় থাকতে ঐ সকলদের রেহাই দিন এবং নিজের ঘরকে শক্তিশালী ও মজবুত করুন। বহি:শত্রুর মোকাবিলায় ঐ রেহাইপ্রাপ্তরাই যথেষ্ট। যারা দুর্নীতি এবং লোভ-লালসায় যুক্ত তার কোনদিন বিপদে পরীক্ষিত নয় বরং পাল্টি দিয়ে সবসময় ক্ষমতার পক্ষেই অবস্থন নেয়। তাই সময় ও সুযোগ থাকতে কাজ করুন। জাতিকে আরো নিশ্চিত থাকার ব্যবস্থায় সকলকে শরীক করে আগামীর যাত্রা নিশ্চিত রাখুন। ২০২২ এর বিদায়ে আমাদের কামনা ভাল মন্দের দ্বন্ধে ভাল’র জয় হউক। আর এই জয়ে সকলেই অংশীদ্বার হউক।
২০২২কে শিক্ষনীয় বছর হিসেবে আগলে ধরে ২০২৩কে বিনিয়োগে ভরপুর এমনকি ক্ষমা ও ভলবাসায় সাজিয়ে ২০২৪এর ফল ঘরে তোলার হাতিয়ারে পরিণত করুন। জয় হউক সত্যের, জয় হউক সকল ভাল’র আর পরাজয় হউক সকল মন্দের এই কামনাই আগামীর কল্যাণের তরে।