রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের উদ্যোগে বর্ণাঢ্য আয়োজনে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

বাআ॥ রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচিতে বর্ণাঢ্য আয়োজনে ছাত্রলীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বর্ণাঢ্য আনন্দ র‌্যালি, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, অস্বচ্ছল নারীদের সেলাই মেশিন প্রদান, ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দকে বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বই প্রদান, ছাত্রলীগের তিন শহীদকে মরোণত্তর সংবর্ধনা প্রদান ইত্যাদি কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে রাজশাহী কলেজে আয়োজিত কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কুমারাপাড়স্থ মহানগর আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের সামনে বেলুন-ফেস্টুন উড়িয়ে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। এরপর দলীয় কার্যালয় থেকে বর্ণাঢ্য আনন্দ র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালিটি সাহেব বাজার জিরো পয়েন্ট হয়ে রাজশাহী কলেজে গিয়ে শেষ হয়। এরপর সেখানে কেক কাটা, আলোচনা সভা, ৫০জন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, দুইজন অস্বচ্ছল নারীকে সেলাই মেশিন প্রদান, ছাত্রলীগের তিনজন শহীদকে মরোনত্তর সংবর্ধনা প্রদান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি নূর মোহাম্মদ সিয়ামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সিরাজুম মুবিন সবুজের সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার। মঞ্চে নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শফিকুর রহমান বাদশা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক হোসেন, নগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগের ইতিহাস, বাংলাদেশের ইতিহাস। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ তার দীর্ঘ রাজনৈতিক পরিক্রমায় প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশে সর্বক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন দৃশ্যমান। ডিজিটাল বাংলাদেশ ইতোমধ্যে হয়ে গেছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অনেক আগে এমডিজি অর্জন করেছে। এখন টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) যে লক্ষ্য রয়েছে, সেটি ২০৩০ সালের মধ্যেই ইনাশাল্লাহ বাস্তবায়ন হবে। ২০৪১ সালের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এই স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্য বাস্তবায়নে সরকার চারটি ভিত্তি নির্ধারণ করেছে। এগুলো হলো- স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট ও স্মার্ট সোসাইটি। এই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ছাত্রলীগ অগ্রণী ভুমিকা পালন করবে।

তিনি আরো বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পার হয়ে যাওয়ার পরই যারা স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না, বাংলাদেশকে মেনে নিতে পারেনি, তারা ডিজিটাল বাংলাদেশের মতো স্মার্ট বাংলাদেশের ধারণাকে নিয়েও ব্যঙ্গ করতে পারে, তারা মানুষকে ভুল বোঝাবে। তাদের বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে হবে, অপচেষ্টা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের রুখে দিতে হবে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে খালেদা জিয়া ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছিল। আর আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হাতে বই-খাতা-কলম তুলে দিয়েছিলেন। সেদিনই বোঝা গেছিল শেখ হাসিনা কত সূদূর প্রসারী চিন্তা করেন আর খালেদা জিয়া কোন স্তরে চিন্তা করেন।

বিএনপির আন্দোলন প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, বিএনপি ঘোষণা দিয়েছে, তারা সারা বছর আন্দোলন করবে। তাদের কখন কোন ঘোষণা হয়, ঠিক নাই। একবার বলে আমরা ২৭ দফা দিলাম, আমরা রাষ্ট্র মেরামত করবো। যারা ক্যান্টনমেন্ট থেকে দল গঠন করেছে জিয়াউর রহমানের মাধ্যমে, গণতান্ত্রিক সরকার প্রধানকে হত্যা করে অপসারণ করেছে, জেলখানায় হত্যাকাণ্ডে সহযোগিতা করেছে, তারা করবে রাষ্ট্র মেরামত?। যারা রাত ১২টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত ৪/৫ বছর ধরে কারফিউ দিয়েছিল, তারা করবে রাষ্ট্র মেরামত?। যারা এদেশের যুব কমপ্লেক্সে আর ইয়াং ছেলেদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছিল, তারা করবে রাষ্ট্র মেরামত?। যারা লুটপাট, ডাকাতিতে শীর্ষ স্থানে, টাকা পাচার করে সয়লাব করে দিয়েছে, তারা নাকি করবে রাষ্ট্র মেরামত। বিএনপি আপনাদেরকে রাষ্ট্র মেরামত করতে হবে না। ওটার জন্য শেখ হাসিনা আছেন, আমরা আছি, ছাত্রলীগ আছে। আমরা রাষ্ট্র মেরামত করে ফেলেছি অলরেডি। আপনারা দয়া করে আপনাদের দলকে মেরামত করেন। তাহলে দেশের মানুষ শান্তিতে থাকবে।

এর আগে সকাল ৭টায় নগর ছাত্রলীগের কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৯টার দিকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান ও শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়। সকাল ১০টার দিকে জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান হেনার সমাধিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করে মহানগর ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published.