বাআ॥ ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যণ্ত ক্ষমতায় থাকার সময় দেশজুড়ে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে বিএনপি-জামায়াত সন্ত্রাসীরা। হাওয়া ভবন থেকে তারেক রহমানের সরাসরি নির্দেশনায় ঢাকা শহরকে চারভাগে ভাগ করে সন্ত্রাসীদের তত্ত্বাবধান করতেন চার এমপি মির্জা আব্বাস, সালাউদ্দিন, নাসিরুদ্দিন পিন্টু এবং এস এ খালেক। সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিদের সরাসরি মদতে বেপরোয়া হয়ে ওঠে ঢাকার ছাত্রদল ও যুবদলের সন্ত্রাসীরা। মার্কেট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সর্বত্র চাঁদাবাজি এবং প্রকাশ্যে হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকে তারা। চাঁদা না দেওয়ায় সদরঘাটের পাইকারি কাপড় ব্যবসায়ী শামসুল হক, তার ছেলে রাসেল ও ড্রাইভার মোয়াজ্জেমকে হত্যার পর কেটে টুকরো টুকরো করে রাস্তায় ফেলে রাখে যুবদল সন্ত্রাসী কাজল।
২০০৪ সালের ২৮ মার্চ জনকণ্ঠের সচিত্র প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, শুক্রবার জুমার নামাজের আগে ব্যবসায়ী শামসুল হককে ফোন দেয় যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রভাবশালী নেতা কাজল। এরপর ছেলেকে নিয়ে নিজের গাড়িতে বের হন শামসুল হক। স্ত্রীকে বলে যান, একবারে নামাজ শেষ করে বাড়িতে ফিরে দুপুরের খাবার খাবেন। কিন্তু এরপর আর ফিরে আসেননি তিনি।
গার্মেন্টস বস্ত্র ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি এই শামসুল হকের ড্রাইভারের লাশ পাওয়া যায় পরের দিন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে। এবং ব্যবসায়ী ও তার পুত্রের লাশকে মস্তবিহীন করে টুকরো টুকরো করে কেটে আবাহনীর মাঠের পাশে কয়েকটি বস্তায় ভরে ফেলে রেখে যায় সন্ত্রাসীরা।
শামসুল হকের স্ত্রী জানান, কাজলের ফোন পাওয়ার পর তাকে দেওয়ার জন্য দুই লাখ টাকা সঙ্গে নিয়ে বের হয়ে যান শামসুল হক। এরপর পরে একবার ছেলের সাথে ফোনে কথা হয়েছিল। ছেলে বলেছিল, তারা সাভারের দিকে যাচ্ছে। একটু পরেই ফিরে আসবে। কিন্তু এরপর তারা আর ফেরেনি। যবদল নেতা কাজল একসময় জগন্নাথ কলেজের কাজল নামে পরিচিত ছিল। তৎকালীন ছাত্রদলের সন্ত্রাসী সগীর ও কাজল মিলে ১৯৯৪ সালে পুলিশ সার্জেন্ট ফরহাদকে খুন করেছিল। পরবর্তীতে ইসলামপুরের ঘড়ি ব্যবসায়ী সেলিমকেও খুন করে কাজল। তার পিতা সদরঘাটের কুলি ছিলেন। কিন্তু দুই মেয়াদে বিএনপির শাসনামলে ছাত্রদল ও যুবদলের হয়ে পুরান ঢাকার একটা অংশের ত্রাস হয়ে ওঠে কাজল। পুরান ঢাকার ব্যবসায়ীরা ছাত্রদল ও যুবদলের এই সন্ত্রাসীদের ভয়ে সবসময় তটস্থ হয়ে থাকতো।