বাআ॥ ২০০১ সালে ক্ষমতায় যাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজগুলোর ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে সন্ত্রাস-নির্যাতন ও নারী শিক্ষার্থীদের ওপর নিপীড়ন শুরু করে ছাত্রদলের সন্ত্রাসীরা। সিলেট শাহজালার বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকাশ্যে একজন ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা করে শিক্ষকদের হস্তক্ষেপে ব্যর্থ হয় ছাত্রদল নেতারা। পরে এই ঘটনায় সারা দেশ উত্তাল হলেও বিএনপি নেতাদের ছত্রছায়ায় সেই ধর্ষকের দল ক্যাম্পাসে অবস্থান করেই হলের মধ্যে জবরদখল চালাতে থাকে।
২০০৪ সালের ১৮ এপ্রিল জনকণ্ঠের সংবাদ থেকে জানা যায়, এই বর্বর ঘটনায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করেও বিচার পেতে ব্যর্থ হন শিক্ষকরা। অন্যদিকে দেশের বিভিন্ন জেলা এবং উপজেলা শহরগুলোতেও নিরাপত্তাহীনতার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে ভয় পেতো ছাত্রীরা। কোনো মেয়েকে পছন্দ হলে তাকে জোর করে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করতো ছাত্রদল-যুবদল-স্বেচ্ছাসেবক দলের চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে কোনো কঠোর হওয়ার নির্দেশ না থাকায় কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এদিকে, এতিমখানা দখল, এতিমখানা নির্মাণ কাজ থেকে চাঁদাবাজি এবং বিভিন্ন দোকানপাট থেকে নিয়মিত তোলাবাজি করতে থাকে ছাত্রদল।
২০০৪ সালের ৩০ মার্চ জনকণ্ঠের সংবাদ থেকে জানা যায়, বিনা পয়সায় কম্পিউটার চেয়ে না পেয়ে চট্টগ্রামের এক দোকান থেকে দুই টাকা চাঁদা দাবি করে ছাত্রদলের সন্ত্রাসীরা। এরপর চাঁদা না পেয়ে দোকান মালিককে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে তারা। সন্ত্রাসীরা হলো- ফরেস্ট কলেজ ছাত্রদল নেতা দিদারুল, আলাউদ্দীন, কবির উদ্দীন, সুপন বড়ুয়া, কামাল, মাসুদ, জুয়েল চৌধুরী এবং তানজিদ হোসেন, নগর ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক রিংকু এবং তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী টিংকু দাস। এমনকি ব্যবসায়ীকে অপহরণের পর তার বাসা থেকে স্বর্ণালঙ্কার ও কম্পিউটার লুট করে ছাত্রদল সন্ত্রাসীরা।
পুলিশ জানায়, স্থানীয় বিএনপি নেতৃত্বের মদতে এরা বেপরোয়াভাবে চাঁদাবাজি করে চলেছে। তাদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।
এদিকে, চাঁদা না দেওয়ায় শেরপুরে নির্মাণাধীন একটি দেড় কোটি টাকার শিশু পরিবার (বালিকাদের এতিমখানা)-এর কাজ থামিয়ে দেয় ছাত্রদলের নেতারা। গণপূর্ত বিভাগের অধীনে নির্মাণাধীন এই শিশু পরিবার ভবনের কাজ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা চাঁদা চেয়ে আসছিল স্থানীয় ছাত্রদল নেতারা। কিন্তু এক সপ্তাহের মধ্যে চাঁদা না দেওয়ায় ঠিকাদার, ম্যানেজার ও শ্রমিকদের হুমকি দিয়ে কাজ বন্ধ করে দেয় তারা।এমনকি দ্রুত টাকা না দিলে কাজ বন্ধ করে এলাকা ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে তারা মারধর করে নির্মাণ কাজের শ্রমিকদের।